somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নেক্সট ভিক্টিম কে?

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্র্যাকের মাইগ্রেশন বিভাগের হেড ও সাংবাদিক শরীফ ভাই লিখেছেন উনার ফেসবুক স্ট্যাটাসেঃ-

আড়াইবছর আগে যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হয় বারবার এই কথাগুলো লিখেছিলাম। বলেছিলাম, শুধু বাংলাদেশ নয় সারা পৃথিবীর মধ্যে প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে জঘন্য হবে ডিজিটাল এই নিরাপত্তা আইন। লিখেছিলাম, এটি কালা আইন। মুক্তমত প্রকাশে বিশ্বাসী এই আমি তীব্র ঘৃণাভরে এই আইন প্রত্যাখান করলাম। আফসোস সেদিন বহু মানুষ চুপ ছিল। আর উন্নয়নের গল্প বলনেওয়ালারা সেদিনও উন্নয়নের গল্প বলছিলো। উন্নয়নের এই ফেরিওয়ালাদের হয়তো বোধোদয় হয়নি কিন্তু গত আড়াই বছরে এই জাতির আশা করি বোধোদয় হয়েছে। কাজেই চলুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তুলি। মনে রাখবেন এই যে আমি আমি আমরা সবাই চুপ থাকি তার কারণেই লেখক মোশতাক আহমেদরা মারা যান, কিশোররা জেলে থাকে। আমি আপনি কেউই এই দায় অস্বীকার করতে পারব না।

তার এই স্ট্যাটাসের নিচে মন্তব্য করেছে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কুয়ালালামপুর মহানগর মালয়েশিয়া শাখার সহ-সভাপতি মোহাম্মদ এলিয়াস হোসেনঃ-

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কি সত্য মিথ্যা যাচাই-বাছাই না করেই গ্রেপ্তার করে কাউকে ভাই। আর ব্যাক্তিস্বাধীনতা বাকস্বাধীনতা মানে কি মিথ্যা তথ্য দিয়ে সমাজের ভিতর অস্থিরতা তৈরি করলেও তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।

আমি এলিয়াস হোসেনের এই মন্তব্যের উত্তরে লিখেছিঃ-

ধরেন, আপনি একটা চোর। আর আপনার চুরি ধরা পরে না। বা ধরা পরলেও কেউ আপনাকে ধরিয়ে দেয় না।
কারণ, কেউ আপনাকে ভয় পায়, কেউ আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ, কেউ আপনার হয়ে চাকরি করে, কেউ আপনার কারণে ব্যবসা খুলতে পেরেছে, কেউ আপনার প্রাপ্ত সুবিধার ও ক্ষমতার ভাগীদার।
এখন এমন অনেকে হয়তো আছে, যারা উপরের ক্যাটাগরিগুলোতে পরে না। কিংবা পরলেও, তাদের বিবেক কারো কাছে বিক্রি হয়ে যায় নাই। তাই আপনি চুরি করার পরেও তারা চেঁচিয়ে বলে- "চোর! চোর!"

এটাই কি "মিথ্যা তথ্য দিয়ে সমাজের ভিতরে অস্থিরতা" তৈরি করা?

আর মানলাম, গ্রেপ্তার করা হলো, গোলাম-রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা ভয়/চাপ দেওয়া হলো, প্রভাব খাটানো হলো। কিন্তু জেলের অমানবিক পরিবেশে দিনের পর দিন কেন রাখা হলো, জেলের ভেতর কেন অত্যাচার করা হলো, কেন বারবার জামিন আবেদন নাকচ করা হলো? জেলে যারা সাজা কাটেন বা বন্দী থাকেন, তাদের কি ন্যুনতম মানবিক অধিকার নাই? দেশের সীমানার ভেতরে থাকা, বন্দী বা মুক্ত (যদিও সবাই একনায়কতন্ত্র ও পরিবারতন্ত্রের শিকলে বন্দী) যেকোন নাগরিকের বসবাসযোগ্য মানসম্মত জীবনযাপনের অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের, সরকারের। শুধু ভেলকিবাজি আর লোকদেখানোর প্রজেক্টের নামে লুটপাট করা ছাড়া আর কি করেছে এরা, তা তো দেখছি না। আর উন্নয়ন করলেই কি গণতন্ত্রকে গলা টিপে মেরে ফেলতে হবে??

অথচ রন শিকদারের সকালে গ্রেফতার হয়ে দুপুরে জামিন হয়ে যায় ৫ হাজার টাকায়!

নিচের ডানপাশের ছবিতে দেখানো কার্টুনটি এঁকেছে কিশোর (যিনি এখন জেলের ভেতরে মৃত্যুর সাথে লড়ছেন), আর রম্যছড়াটি লিখেছেন মুশতাক আহমেদ। ব্যাংক খেকো চৌধুরী নাফিজ সারাফাতকে নিয়ে কিশোরের আঁকা এই কার্টুনের ক্যাপশনটার জন্যই তো জীবন দিতে হলো মুশতাককে।



"শক্তের ভক্ত, নরমের যম" হয়ে উঠা এই সমাজে আপনি কি? শক্ত, ভক্ত, নরম নাকি যম?
-------------------------------------------------
সংযোজনীঃ-

একজন বলছেনঃ-

সবকিছুতে শেখ হাসিনাকে টেনে আনছেন কেন? শেখ হাসিনা কি উনার বিরোদ্ধে মামলা করেছেন? না শেখ হাসিনার নির্দেশে উনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? উনি অপরাধ করেছেন উনার বিরোদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বিষয়টি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।।

আমি প্রত্যুত্তরে বললামঃ-

প্রথমত, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নির্বাহী ক্ষমতার আসনে বসা শেখ হাসিনা কিছুতেই কোন কিছুর দায় এড়াতে পারেন না। সবকিছুতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ, এবং প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো গেলে, কেন উনাকে দায়ী/দোষী করা যাবে না?? উনি কি অস্পৃশ্য দেবতাগোছের কিছু? উনি কি আইনের উর্ধ্বে? উনি কি সমালোচনার উর্ধ্বে?

দ্বিতীয়ত, দেশের সব বড় সিদ্ধান্ত উনার অনুমতি বা আদেশ বা সাজেশন ছাড়া হয় না। ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট-ও তার মধ্যে সামান্য একটা। আর এটা করাই হয়েছে কিছু ব্যক্তি, কিছু পরিবার, একটি দল, সেই দলের ছায়াতলের সকল ব্যক্তি, এবং সরকারের আস্থাভাজন/শরিকদের বিরুদ্ধে বলা/করা/ভাবা সবকিছুকে আইনগতভাবে প্রতিহত করার জন্য।

তৃতীয়ত, উনি বিগত এক দশকের উপর ধরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অগণিত বার সমালোচনা ও নিন্দার বিরোধিতা করেছে, হুমকি দিয়েছে, অপবাদ দিয়েছে, অপমান করেছে। এটাই কি যথেষ্ট নয়- উনার ইনটেনশন বুঝার জন্য।

চতুর্থত, যারাই রাষ্ট্র ও সরকারকে অপব্যবহার করে শাস্তি এড়িয়ে যাচ্ছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করছে, অনিয়ম-দুর্নীতি করছে, লুটপাট করছে, এদের সবাই কোন না কোনভাবে উনার খুব কাছের লোক। এটা কি শুধুই কাকতালীয় ব্যাপার?!
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:০৩
৮টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×