somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রফেসর ক্যালকুলাসঃ বাস্তব থেকে বইয়ের পাতায়

১৪ ই জুন, ২০২১ সকাল ৯:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা বাংলা ভাষীরা এমন অনেক বিখ্যাত মানুষদের চিনি, যারা কয়েক প্রজন্ম ধরে তাদের নিজস্ব ফিল্ডে প্রতিভার সাক্ষর রেখে আসছেন। সাহিত্য জগতে এরকম ৩ জন ছিলেন উপেন্দ্রকিশোর, সুকুমার ও সত্যজিৎ রায়। যদিও উপমহাদেশে রাজনৈতিক বংশপরম্পরাটাকেই বেশি হাইলাইট ও গ্লোরিফাই করা হয়ে থাকে; এবং সেটাই যত্রতত্র দেখা যায়। আজকে একটু উপমহাদেশের এবং আমাদের বাংলা ভাষার বাইরে যাবো।

এমন একজন সম্পর্কে আজকে জানবো, যিনি একাধারে ছিলেন পদার্থবিজ্ঞানী, উদ্ভাবক, এবং এক্সপ্লোরার। আমরা স্কুলে বিজ্ঞান বইয়ে বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে যা কিছু পড়েছি, তার অনেক কিছুই জেনেছি উনার এক্সপেরিমেন্টের বদৌলতে। এমনকি, সাগরের গভীরের সবকিছু সম্পর্কে আমরা যা জানি, তার অনেক কিছুই উনার হাত ধরে এসেছে!


সুইজারল্যান্ডে জন্ম নেওয়া Auguste Antoine Piccard তার রেকর্ড-ব্রেকিং (২৭টি) হিলিয়াম-বেলুন ফ্লাইটের জন্য জগদ্বিখ্যাত, যার মাধ্যমে তিনি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তর পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। তিনি আরো পরিচিত ছিলেন পৃথিবীর প্রথম বাথিস্কেইফ (Bathyscaphe) FNRS-2 নির্মাণের জন্য, যার মাধ্যমে ১৯৪৮ সালে তিনি একাধিক unmanned dive পরিচালনা করেছিলেন, মহাসাগরের তলদেশ সম্পর্কে জানার জন্য।


বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরগুলো গবেষণার পিছনে তার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল Cosmic Radiation পরিমাপ করা; কারণ এর মাধ্যমেই Albert Einstein এর তত্ত্বগুলোর পরীক্ষামূলক প্রমাণ পাওয়ার কথা। Conférences Solvay এর সদস্য এবং ETH Zürich এর প্রাক্তন শিক্ষার্থী হওয়ার কারণে- পিকার্ডের সাথে আইনস্টাইনের পরিচয় ছিল।

অগাস্টের পিতা Jules Piccard ছিলেন একজন রসায়নবিদ ও রসায়নবিদ্যার প্রফেসর। অগাস্টের জমজ ভাই Jean Félix Piccard ছিলেন একজন মার্কিন রসায়নবিদ, প্রকৌশলী, প্রফেসর। মজার ব্যাপার হচ্ছে, Jean Felix এবং তার স্ত্রী Jeannette Piccard দুজনেই ছিলেন অগাস্টের মতই aeronaut এবং balloonist; অর্থাৎ বায়ুমন্ডল পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা রীতিমতো ওদের পারিবারিক কাজ/নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

অগাস্ট পিকার্ডের ছেলে- সুইস সমুদ্রবিদ ও প্রকৌশলী Jacques Piccard সমুদ্রস্রোত গবেষণা করার জন্য underwater submarine কে উন্নততর করেছিলেন। সমুদ্রবক্ষে ১৯৪৮ সালে মানবশূন্য অভিযানগুলোর পরে অগাস্ট তার বানানো পৃথিবীর প্রথম বাথিস্কেইফটাকে ১৯৫০ সালে ফ্রেঞ্চ নৌবাহিনীকে দিয়ে দেন। পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালে বাবা ও ছেলে- অগাস্ট এবং জ্যাক- দুইজনে মিলে আরেকটি বাথিস্কেইফ তৈরি করেন, এবং তারা একসাথে সমুদ্রের রেকর্ড-ব্রেকিং ১০ হাজার ফুট গভীরে ডুবযাত্রা সম্পন্ন করেন।

Jacques এর ছেলে, এবং Auguste এর নাতি, Swiss explorer, psychiatrist and environmentalist Bertrand Piccard (এখনো বেঁচে আছেন, ৬৩ বছর বয়স) উনার দাদুর প্যাশন ও পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন সগৌরবে। নন-স্টপ বেলুন ভ্রমণ করে সর্বপ্রথম পৃথিবী প্রদক্ষিণ করার কৃতিত্বের দাবীদার বার্ট্রান্ড এবং তার সহযাত্রী ব্রায়ান জোন্স।


বিশ্বসাহিত্যে বেলজিয়ান কার্টুনিস্ট HERGÉ এর The Adventures of Tintin একটি অবিস্মরণীয় মাইলফলক। টিনটিন এর অভিযাত্রা সিরিজের অন্যতম প্রধান চরিত্র Professor Cuthbert Calculus এর পেছনের অনুপ্রেরণা হলো আমাদের আজকের আলোচ্য ব্যক্তিত্ব অগাস্ট পিকার্ড। এছাড়া Star Trek এর Captain Jean-Luc Picard চরিত্রটি বানানো হয়েছিল অগাস্ট ও তার জমজ ভাই জ্যাঁ ফেলিক্স দুজনকেই মাথায় রেখে।

মূলত টিনটিনের একজন বিশাল ভক্ত হওয়ার কারণেই আজকে পিকার্ড ফ্যামিলির দুর্দান্ত সব আবিষ্কার, অভিযান ও অবদান সম্পর্কে আমি জানতে পারলাম, ও আপনাদের জানাতে পারলাম। অথচ, আকাশ-পাতাল, বায়ুমন্ডলের সুউচ্চ সীমানা বা সমুদ্রতলের সর্বনিম্ন সীমানা সম্পর্কে আমরা যেসব বৈজ্ঞানিক-পরীক্ষিত তথ্য জানি, তার পেছনে অন্যতম প্রধান অবদান এই বিজ্ঞানী ও তার পরিবারের। আমাদের কি তার কথা আরো আগেই জানার কথা ছিলো না?

I am providing an website address below, which may be more useful than my writing to know Auguste Piccard.
Explorer of the stratosphere, the first man to witness the curvature of the earth, he paved the way for modern aviation
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০২১ সকাল ৯:১০
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×