রোজ রাত্তিরে সুখতারাটির সাথে কথা বলি।
বলি, পূব থেকে পশ্চিমে যাও-
সে যায় হেলেদুলে-হেসেখেলে।
শুধাই তাকে, আমায় এক চুমুক আদিম আদর দেবে?
অমনি সে টুপ করে-চুপ করে বুকের ‘পরে খসে পরে!
কিশোরী চাঁদ; তার সাথেও কথা হয় রোজ পঞ্চমীতে
বুড়ির চরকা কাটার আসল সত্যটা সেই প্রথম আমায় শুনিয়েছে
বুড়োর জন্যেই বুড়ি জোছনার সুতোয় স্বপ্ন বোনে আনমনে
আর সেই বজ্জাত বুড়োই নাকি চাঁদের অঙ্গে কলঙ্ক মেখে দিয়েছে!
তাই তো সে লজ্জায়-হতাশায় মুখ লুকোয় অমা-নিশায়!
উঠোনের ডালিম গাছটায় রোজ বিকেলে একটা পাখি বসে
উড়ন্ত-ফুটন্ত মেঘকুমারীকে সে নাকি বড্ড ভালোবাসে
কিন্তু তাকে ছুঁতে না পারাটা পোড়ায় তাকে
তবু সে ওড়ে স্থির স্বপ্নে নুতন উদ্যমে পুরো দমে।
দখিণা বাতাসে কান পাতি
ভেসে আসে হুহু হাহাকার দখিনের
প্রিয় সূর্যটা না হোক প্রতিদিন
অন্ততঃ ফাগুন এলেই যেন ঢলে পরে তার কোলে।
আমার অন্যমনস্ক বিকেলটা নিঃসঙ্গ নদীর নিত্যসঙ্গি
নদীও চায় সফেদ ঢেউয়ের দোলায় নিজেকে সঁপে দিতে
তবু জোয়ার ছোঁয় না তাকে, ভাঁটাও টানে না
মিঠা জলে মেশে না কভু সাগরের নোনা।
ঝিঝি পোকা কিংবা জোনাকপোকার কথাই ধরো
তাদের সাথে তো আমার নিত্য সহবাস!
নইলে গর্বে আমার বিশেষঅঙ্গ সবল হত কী করে?
নইলে গর্ভে আমার এত গল্প জন্ম নিত কী করে?
শুধু একজন-
আমার কথা শোনে না
আমায় নিয়ে ভাবে না
আমায় একটু ছোঁবেও না
আমার বুকে শোবেও না
শুধু একজন-
মহামতি মৌনব্রতী শ্রীমতি অস্পর্শী-
না শোনে না-বলা-কথা, না বলে!
ভাবি বসে, 'মহাবিশ্ব এতটা নির্লিপ্ত হলে কী করে চলবে পৃথিবীর?'