জলপাই সমর্থিত এই সরকার শুরুতে সারা দেশের সবকিছুতেই সংস্কারের জোয়ার বইয়ে দিয়েছিল। তাদের বেশির ভাগ প্রচেস্টা ব্যর্থ হলেও কিছু ক্ষেত্রে সাময়িক সুফল পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র, উচ্চশিক্ষায় কোন পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জন ছাত্র হিসেবে গত তিন বছর আমি দেখেছি এই প্রতিস্ঠানের প্রতিটি অংশে পরিবর্তন কতটা জরুরী। দেশের সরকারী কলেজ ইউনিভার্সিটি গুলোর প্রত্যেক পদক্ষেপে রয়েছে অদক্ষতা। পড়াশোনার পিছনে প্রয়োজনীয় সময় ব্যয় করার পরও কলেজ ইউনিভার্সিটি গ্র্যাজুয়েটরা আন্তর্জাতিক দূরের কথা, রিজিওনাল মান অর্জনে ব্যর্থ। যেসব সফলতা আসছে তা সম্ভব হচ্ছে নিজস্ব উদ্যোগে। তাহলে দেশের জাতীয় বাজেটের মেজর অংশ শিক্ষার পিছনে ব্যয় করার যৌক্তিকতা কোথায়? আমার জানার খুব কৌতুহল দেশের থানা লেভেলের কলেজ গুলো থেকে এক জন ছাত্র অনার্স কিংবা মাস্টার্স পাশ করে কি তার প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে সক্ষম হচ্ছে?
আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি ইউনিভার্সিটির এ্যাডমিশন সিস্টেমের অদক্ষতা। ভর্তির এপ্লিকেশন জমা দেওয়া থেকে শুরু করে ক্লাস আরম্ভ করতে ৪-৫ মাস লেগে যায়। অথচ বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের অফিস গুলোতে একগাদা কর্মকর্তা কর্মচারী আছে যাদের বাস্তবে কোন কাজ নেই। প্রতি বছর ভর্তি এবং ফাইনাল পরীক্ষার সময় অযথা নানা রকম কাগজপত্র নিয়ে ডিপার্টমেন্টের অফিস, হল অফিস, এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিস, ব্যাংকে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়, শুনেছি পাশ করার পর সার্টিফিকেট পাবার ভোগান্তি এর কয়েক গুন বেশী। এসব ক্ষেত্রে দক্ষতা এবং জবাবদিহিতা কবে চালু হবে?
ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইট শুরু থেকে আজও under construction. লাইব্রেরী তে কোর্সের সবচেয়ে প্রয়জনীয় বই গুলোরও সর্বশেষ এডিশন পাওয়া যায়না। এসি থাকার পরও তা চালু করা হয় না।
সবচেয়ে হতাশজনক হল ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ না করার সিদ্ধান্ত। আমার এই বাইশ বছরের জীবনে ছাত্র রাজনীতির কোন সুফল দেখতে পাইনি, তবে এর বদৌলতে গত তিন বছরের ইউনিভার্সিটি জীবনের উল্লেখযোগ্য সময় ছুটি কাটিয়েছি যা ভবিষ্যতে সেশন জ্যাম বলে গন্য করা হবে। একবছর বিরতির পর আবার ক্যাম্পাসে যত্তসব নেতাদের সদর্পে চলাফেরা এবং মিছিল করতে দেখা যাচ্ছে।
এর মানে কি গুটি কতক ভিসি পরিবর্তন বাদে উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নে এই সরকারের কোন অবদান নেই?