somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিজরাদের মূল স্রোতের সাথে জীবনযাপন কি অসম্ভব?

২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৮:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষ হিজরা হয়ে জন্মায় না আমরাই তাকে ধীরে ধীরে হিজরা করে তুলি। পথ পথিক সৃষ্টি করে না পথিকই পথ সৃষ্টি করে। এপর্যন্ত পড়ার পর যারা ভাবছেন পোষ্ট থেকে হিজরা সম্পর্কে জানতে পারবেন তাদের সবিনয় নিবেদন হিজরা সম্পর্কে জানতে চাইলে দয়া করে গুগলে হিজরা লিখে সার্চ দিন এবং জেনে নিন। এ পোষ্ট সেজাতীয় নয়। পোষ্টটি হিজরাদের মানবাধিকার নিয়ে। তো শুরু করা যাক।

কয়েকদিন আগে আমার এক শুভাকাঙ্ক্ষী আমার কাছে নিবেদন করেছেন আমি এবং আমরা যেন হিজরাদের মানবাধিকার নিয়ে কিছু লিখি। তার ধারণা তাহলে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এবং হিজরাদের জীবনে সত্যিকারের কোন পরিবর্তন আসতে পারে। তার ইমেইল থেকে কয়েক ছত্র এখানে দিলাম যা মোটেও অপ্রাসঙ্গিক নয়।

"আমি কিছুদিন আগেও ইন্টার সেক্স মানুষদের সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতাম না। অনার্স পড়বার সময় জেনেটিক্সের স্যারের কাছ থেকে এবং বই পড়ে জেনেছি। শুনে অবাকই হয়েছি একটা মানুষ পড়াশোনা করতে পারে না শুধু মাত্র সে মেয়ে না ছেলে এটা নির্ধারিত নয় বলে! লেখা-পড়া বা চাকরি এসব যে কোন মানুষই করতে পারে। দরকার শুধু হাত-পা আর মস্তিষ্ক। ওদেরও সব আছে তাও পারে না। শেষে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে টাকা তুলে আর অভাবে পরে খারাপ কাজ (আমাদের দৃষ্টিতে) করে বেড়াতে হয়। আমরা তাদের গালা-গাল করি। খারাপ দৃষ্টিতে দেখি এবং মন্দ বলে থাকি।

একজন ইন্টার সেক্স মানুষ যদি আপনার ছেলের/মেয়ে পাশে বসে পড়া শোনা করে বা কাজ কর্ম করে তবে কি খুব দুনিয়া ওলট পালট গোছের কিছু হবে? তাই যদি না হয় তবে কেন আমরা এই বিষয়ে চিন্তা করবো না কিংবা যাদের চিন্তা করা উচিৎ তাদের কে কেন স্মরণ করাবো না।
আমার না মাঝে মাঝে এই ভেবে খুব অবাক লাগে যে একটা মানুষের পড়াশোনা, চাকরী এটা তো কখনই তার প্রজনন ক্ষমতার উপর নির্ভর করতে পারে না,তাও কেন এই মানুষেরা লেখা পড়ার সুবিধা থেকে বঞ্চিত?! আমার অবাক লাগে কিন্তু যারা এই নিয়মটা পাল্টাতে পারে তাদের মনে হয় কোন অনুভূতিই নেই। নইলে দিনের পর দিন এই বিষয়ে কোন কাজ কেন হয় না?"

আমার নিজের বোধ বা মতামত এই ইমেইলে বক্তব্যকেই সমর্থন করে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে হিজরাদের মূল স্রোতের সাথে জীবনযাপন কিভাবে সম্ভব?
আমার নিজের মতামত এখানে দিলাম। আপনাদের মতামতের প্রত্যাশায়।

আমি মনে করি দুভাবে হিজরাদের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
এক.
বর্তমানে যারা হিজরা বলে অভিহিত তাদের প্রচলিত সমাজ অনুমোদন করে এমন কাজের মাধ্যমে পুনর্বাসন করতে হবে। হতে পারে তা লেখাপড়া বা কারিগরি বা বৃত্তিমূলক কাজ। সম্ভব হলে তাদের বাবামায়ের কাছে ফিরে যাবার পরিবেশও তৈরি করা যেতে পারে। এব্যাপারে সরকার ও এনজিও কে এগিয়ে আসতে হবে।

দুই.
পরিবারে এমন বৈশিষ্ট্যের শিশুকে শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে বিবেচনা করে তাদের জন্য নির্ধারিত বিদ্যালয়ে পড়াশোনার ব্যবস্থা করতে হবে। অনেক পরিবারের পক্ষে হয়ত সেসব স্কুলে যাওয়া সম্ভব হবে না সেক্ষেত্রে সরকার বা এনজিও কে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।
তারচেয়েও বড় কথা এমন শিশুকে হিজরাদের হাতে তুলে দেয়া যাবে না, দিলে হত্যার ক্ষেত্রে যেমন কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হয় এক্ষেত্রেও তেমনই কঠোর শাস্তির সম্মুখীন করতে হবে। আজ কোন বাবামা চাইলেই তার শিশুকে হত্যা করা তো দূরের কথা নির্যাতন পর্যন্ত করতে পারে না। আইন তা সমর্থন করে না। ঠিক তেমন একটি আইন করা প্রয়োজন যাতে আর কোন বাবা-মা তার এজাতীয় শারীরিক প্রতিবন্ধী (যাদের আমরা হিজরা বলে থাকি) সন্তানকে হিজরাদের হাতে তুলে দিতে না পারে।
এবিষয়ে আইনের পাশাপাশি সচেতনতাও বাড়াতে হবে।

কিন্তু আমার শুভাকাঙ্ক্ষীর মতো আমারও একই প্রশ্ন, বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাধার দায়িত্ব যাদের হাতে আমরা তুলে দিয়েছি তারা কি শুধু ভোটের হিসেবই করবেন না কি সমাজের এমন গুরুতর বিষয়ের প্রতিও সুদৃষ্টি দেবেন তা এক মস্ত বড় প্রশ্ন হয়েই থাকবে?
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৮:৫৩
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×