somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবুঝ পৃথিবী ও তার ছায়া

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(ধৈর্য ধরে পড়ুন)
টংয়ে বসে চা খাবার অভ্যাস হয়েছে গত বছর থেকে, যখন ভার্সিটিতে ভর্তি হই তখন থেকে বন্ধুদের সাথে আসা। তবে হেটেলের চায়ের চেয়ে রং কড়া, দামে সস্তা খাটি চা, অনেক ধরনের কেমিকেল কিংবা ডিম, বিস্কুট ইত্যাদিরমিশ্রণ এ চায়ে হয়না, আম জনতার নাগালে। প্রথম প্রথম ভালো লাগতো না। অস্বস্তি লাগতো, আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে গেছে। এখানে সবাই মুখের লাগামহীন কথাবার্তা বলে সংযমের দরকার পড়ে না। চা প্রিয় এক পরিবারে জন্ম আমার। উৎসর্গ আমার নাম, একটি প্রইভেট ভার্সিটিতে বি.বি.এ পড়ছি। আমার সাথে আমার স্কুল-কলেজের কোন বন্ধু ভর্তি হয়নি। তাই খুব একা একা লাগতো, মানুষের অপরিসীম মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতার বলে আমিও মানিয়ে নিয়েছি।
সাধারণত টংয়ে কিছু বিস্কুট আর কলা, পানি থাকে। আমি যে টংয়ে নিয়মিত বসি এখানে অন্য ধরনের ব্যাবসাও আছে। ব্যাপারটা আমার এতোদিন চোখে পড়েনি, গতকাল পড়েছে। আমার ক্যাম্পাসের পাশের যে টং পরিবেশ আর এই টংয়ের পরিবেশ আলাদা, রাস্তার বিপরীতে চায়ের টং, নতুন ভার্সিটি হওয়ায় এইখানে ব্যবসা জনজমাট, চায়ের দোকান ছিলো কয়েকটা তখন, ইদানিং ফটোকপি মেশিনসহ, টেলিকম সেন্টারো চোখে পড়ছে। অবৈধ স্থাপনা, কিছু দিন আগে সব তুলে দেয়া হয়েছিলো, ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিলো এই সব অস্থায়ী স্থাপনা। কিন্তু আবার ব্যাঙের ছাতার মত গজে উঠে এইসব দোকান। ফুটফাতের দোকান রাস্তার পাশে চায়ের টং আর খালি জায়গা পেলে বসতি, দোকান নির্মাণ ইত্যাদি নিয়মিত বিষয়।
শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান এর পাশাপাশি বেকারত্ব এ অন্য রকম সমস্যা এই জনপদের মানুষ গুলোর, অল্প ব্যয়ে স্বল্প আয়ের চিন্তা থেকে অনেকে এইসব ব্যবসায় ঝুঁকছেন।
পেঠের দায়ের কেউ এই ছোট খাটো ব্যাবসা করলে তাদের দোষ দেয়া যায়না। রাষ্ট্র যাদের উপার্যনের ব্যবস্থা করে দিতে পারেনা তাদের উপার্যনের এর এই পথটুকু পাঁচ মিনিটে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয় কোন অজু হাতে?
চট্রগ্রামের চকবাজার এলাকার প্যারেড মাটের চতুর্দিকে বেশ কিছু টং আর হকার রয়েছে। যেখানে স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি, হাসপাতাল রয়েছে সেখানে রয়েছে টং, হকার, আর ভ্রাম্যমান দোকান, (ভ্রাম্যমান কথাটা বলাই আমার এক ফ্রেন্ড এর বলা একটি কথা মনে পড়লো। আমার ফ্রেন্ড সোহেল, সে বলেছিলো ইদানিং নাকি শহরে ভ্রাম্যমান মাজার দেখা যাচ্ছে) থাকবে।
আজকে যার হাতের চা পান করছি, হয়তো কাল এই জায়গায় সে থাকবেনা, অন্য জায়গার টং গাড়বে, বা তাকে তুলে দেয়া হবে।
অদ্ভুত মানুষের সম্পর্ক!
কিন্তু না, কিছু কিছু তুলা হয়না। যাদের ক্ষুদ্র ব্যবসায় আড়ালে আরো বড় ব্যবসা চলে। যেখান থেকে অনেকে অনেক ভাবে উপকৃত হচ্ছে। কেউ নেশা দ্রব্য, কেউ সাময়িক আনন্দ নেয়ার জন্য আবার প্রশাসনের লোকজন ভালো টাকা পায় এই সব ব্যবসা থেকে। শুধু একটি নেটওয়ার্কের ওয়্যারলেস হয়ে এই কাজ করে এই সব দোকান। আমি যেখানে বসে আছি। এইখানে ও এই ধরনের গন্ধ পাচ্ছি। গন্ধ যে আমি পাই তা না, অনেকেই পায়, আর পায় বলে দোকানে এতো ভিড়, ভিড়ের কারণ হিসেবে যে কথা প্রচলিত তা হলো চা অসাধারণ চায়ের জন্য এই দোকান বিখ্যাত। ব্যাাপার টা ভিন্ন। অনেক ধরনের খদ্দর রয়েছে এই দোকানের। পুরোটা আাঁচ করতে হয়তো কয়েক দিন সময় লাগবে বা সন্ধ্যার পরে আসলে হয়তো কিছুটা জানা যাবে।
কিন্তু জেনে কি হবে, এইতো সবাই জানে, আমার জানা না জানা নিয়ে তো তেমন বড় কোন ব্যাপার ঘটবেনা। যারা জানার তারাতো জানে। যাদেরকে আমরা অভিযোগ করবো, তারও তো এসবের রক ভক্ষক সব, কিছুণ আগে এক লোক এসে বলে গেলো ছাত্রী লাগবে। এইখানে ও অনেক কিছু আন্দাজ করা যায়, সেখানে পাঁচ টাকা চা বা ভাংতি টাকার কাজ সেখানে দেখা যায় পাঁচশো, এক হাজার টাকার নোট দিয়ে যাচ্ছে, আর দোকানের এক লোক খাতায় তাদের নাম আর মোবাইল নাম্বার লিখছে। এখন বিকেল, তাই মানুষ নাম বুক করা শুরু করেছে। আমার পাশে এক ভদ্র লোক জিজ্ঞেস করলেন দোকানদারকে, ভাই এই গুলো কিসের টাকা! লোকটা কিছুণ তাকিয়ে থেকে হেসে উত্তরটা দিলো, না ভাই সমিতির টাকা। লোকটা আমার পাশে এসে ফিস ফিস করে বলে, দিনে পাঁচশ, এক হাজার টাকার সমিতি বাহ!
ভদ্র অভদ্র সবাই জানে, কিন্তু কেউ মুখ খুলবেনা। মুখ খুলার সময় চলে গেছে। যে যা করবে করুক তাতে আমার কী- এমন একটি ভাব সবার চোখে-মুখে। সেই দিন টেম্পু করে ভার্সিটিতে যাচ্ছি, ড্রাইভার সিগারেট খাচ্ছে, আমি ড্রাইবারকে বললাম ভাই সিগারেট খাচ্ছেন কেন? তার পরেও ড্রাইবার সিগারেট ফেলেনা, এর পরে আমার সামনে এক ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে বললাম ভাই দেখলেন গাড়ীতে লেখা আছে ধূমপান নিষেধ, তারপরেও ড্রাইভার সিগারেট খাচ্ছে। ভদ্রলোক আমার দিকে একবার তাকিয়ে তারপর মাথা নিচে করে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায়। এমন ভাব তাতে আমার কী।
আমি আর আমার এক খালু রিক্সায় করে যাচ্ছি। রাস্তা পার হওয়ার পর রিক্সা থামলো, এই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে রিক্সা সামনের চাকা এক লোকের পায়ে বাজে, লোকটা পেছন দিকে ফিরে ’দেখে শুনে চালাতে পারিসনা ‘ বলে তার বাবার সমান লোক্কে ঠাস্ ঠাস্ কওে কয়েকটা । থাপ্পড় মেেের আবার পায়ের জুতা খুলে আবার মারল । আমরা হতবাগ! স্থানীয় কোন গুন্ডা বা রাজনীতি করে এমন কেউ হতে পারে। আমরা সবাই রাজনীতির কাছে বন্ধি।
মানুষ কেমন যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে তা বলে শেষ করা যাবেনা। নিজের কোন তি না হলেই হলো, সব কাজ করা যাবে। এই জগতে এই দুনিয়ার।
একটু একটু করে এই সমাজ পুরো পৃথিবীতে বিরাজ করবে একদিন।
চায়ের টাকাটা দিয়ে ওখান থেকে চলে এলাম। আজ বাসায় একটু দেরিতে ফিরবো। অভিজ্ঞতার দরকার আছে, অনেক গোয়েন্দা কাহিনী পড়েছি। এবার একটু করতে সমস্যা কোথায়? যদিও কোন উপকারে আসবে বলে মনে হয় না তার পরেও অভিজ্ঞতার দরকার আছে। দরকার আছে নিজেকে পরীক্ষা করার এবং মানুষকে বোঝার।
ত্রিশ টাকা রিক্সা ভাড়া দিয়ে চকবাজার থেকে এম. আজিজ স্টেডিয়াম আসলাম। সাথে আমার এক বন্ধু। টেস্টডিয়াম না, গন্তব্য সি.আর. বি. পাহাড়। স্কুল ও কলেজ জীবনে অনেক বার গিয়েছি এই পাহাড়ে কতবার, কত বন্ধু, কত স্মৃতি ওই পাহাড়ে আজ যাচ্ছি মনের সুখে হাটবো বলে। সাথে পুরানো দিনগুলোকে স্বরণ করা। আমার সাথে আমার বন্ধু মুন্না, যাকে নিয়ে বেশী আসতাম ওই পাহাড়ে। দুজনে কথা বলতে বলতে পাহাড়ের দিকে হাঁটতে লাগলাম।
তিন বছর খানিক আগে আমরা দুজন কাস ফাঁকি দিয়ে এই খানে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছি। হঠাৎ দু’জন যুবক এসে হাজির একজন হালকা পাতলা শরীর, তামাটে রং, চেহেরায় বস্তি বস্তি ভাব, আরেক জন চাকমা টাইপের, মোটামোটি স্বাক্ষ্যবান। ওরা বললো ‘আমরা শান্তি কমিটির লোক, গতকাল সকাল আটটায় এই পাহাড়ে একজন লোক নিহত হয়েছে, তাই এখানে আড্ডা দেয়া যাবে না। আপনারা চলে যান। আমরা উঠে চলে আসতেছি এই মুহুর্তে তারা পিছন থেকে ডেকে বললো কিছু টাকা দিয়ে যান, মাল খাবো। আমি বললাম শান্তি কমিটি কি মাল খায়! তারা বললো চুপ থাক্। তারপর আমার বন্ধু মুন্না ভয়ে ভয়ে ২০ টাকা বের করে দিলো, এবং দু’জন খিচে দৌড় দিলাম। দৌড়ে এসে রেলওয়ের এক কর্মকর্তাকে জানালাম ব্যাপারটা, এর পর প্রায় তিন বছর পর আবার আসছি এই পাহাড়ে। আমরা পাহাড়ে যেদিক উঠ্ছি সেদিক দিয়ে আগে দুএকবার বার এসেছি কিন্তু আজ একে বারে চেনা যাচ্ছে না। উন্মুুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে উঠা এই রাস্তার ধারে অনেক বসতি গড়ে উঠেছে। রাস্তা প্রায় চেনাই যাচ্ছেনা। কারো কাছ থেকে জিজ্ঞ্যেস করতেও মন চাচ্ছেনা। কারণ কেউ যদি সুযোগ সন্ধানী থাকে, নিরিহ মানুষ পেলে কিছু হাতিয়ে নিবে বলে। আমি ভাবতে ভাবতে মুন্না একজনকে জিজ্ঞ্যেস করে ফেলেছে। ভাই এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া যায়? লোকটি হ্যা, বলার সাথে আমরা যাত্রা শুরু করলাম।
স্কুল, কলেজ ফাঁকি দেয়া ছাত্রদের এবং প্রেমিক প্রেমিকাদের জুটি ও বেশ চোখে পড়ছে। যা আগে খুব কম দেখা যেত, মাঝে মাঝে চোখে পড়তো। এক সময় যেখানে থেকে আমরা পালিয়ে ছিলাম সেই জায়গায় এসে উপস্থিত। আগে এখানে কোন ক্যান্টিন ছিলো না। এখন একটি ক্যান্টিন হয়েছে। ক্যান্টিনে বসে চা খেলাম তারপর হাঁটতে লাগলাম দু’জনে। আমি আনমনে গান করছি। মুন্না ধারাবাহিক ভাবে মেবাইলের রেকর্ডিং অন করে দিয়েছে। প্রথম প্রথম আমাকে না জানিয়ে রেকডিং করলে খেপে যেতাম এখন করিনা, তার ভালো লাগলে করুক, আমি গান করলে সে রেকর্ডিং করে এবং গান শেষ হলে সার্টিফিকেট দেয়া শুরু করে। মুন্নার সাথে আমার আগের মত দেখা হয়না। তাই যতটুকু দেখা হয় এর ভিতর ঘুরা ফেরা, গান করা, অভিজ্ঞতা শেয়ার করা, অনেক দিনের জমানো কথা থেকে শুরু করে সব শেষ করতে হয়, আবার কখন না কখন দেখা হবে। দেখা হয়, মাঝে মাঝে, আবার বছরও চলে যায়। ভার্সিটিতে ভর্তি হবার পর থেকে সময় একদম পাইনা বললেই চলে। তার সম্পর্কে আর দু’একটি কথা আমাকে বলতে হয়। সে আর আমি এক সাথে পড়তাম, তবে ঘনিষ্ট ছিলাম না। আমার বড় বোনের মেয়ে সানজিদাকে নিয়ে এসেছিলাম শহরে পড়াবো বলে, আমার আম্মু তখন বাড়িতে ছিলো আমার ইমিডিয়েট বড় ভাই এর এস.এস.সি পরীক্ষা বলে। আমি ও এস.এস.সি পরীক্ষার্থী তাই, বাসায় আমার বড় আপু ছিলো, এবং সানজিদাকে মহিলা মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দিব। আমার ভাগিনির বয়স সাত বছর, এবং তার অদ্ভুদ এক রোগ ছিলো যা ডাক্তাররা শনাক্ত করতে পারেনি, হুজুররা বলে জ্বীনের সমস্যা। ডাক্তার বলে মানসিক। ও মাঝে মাঝে অদ্ভুদ আচরণ করতো, দুই এক মিনিটি আনমনা হয়ে থাকতো, তার পর ঘুমিয়ে পড়তো। ডাক্তার বলেছে রোগটি যখন উঠে তখন যেন ভিডিও করে রাখে। একদিন হঠাৎ রোগ উঠে, এরপর খিচুনি শুরু হয়, এবং হাসপাতালে নিতে নিতে ব্রেইন ষ্ট্রোক করে। বারো দিন আই.সি.ও. তে থাকার পর মারা যায়, সে অনেক স্মৃতি অনেক কষ্টের কাহিনী, আমার আম্মু আপু সবাই গ্রামে চলে যায়। আর আসেনা, তখন থেকে মুন্নাকে আমার সাথে রাখতাম। তাকে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অনেক কথা সহ্য করতে হয়েছিলো, কিন্তু সে আমাকে ছেড়ে যায়নি। আমাকে বিভিন্ন ধরনের বুঝ দিতো, হাসাতো, এক কথায় মুন্না না থাকলে হয়তো আমি খুব ভেঙ্গে পড়তাম, এস.এস.সি পরীক্ষা দিতে পারতাম কি না সন্দেহ। এরপর এস.এস.সি পরীক্ষার রেজাল্ট বের হলো। সবাই তো হতবাক! সেকেন্ড ডিভিশন।
মুন্না তার বাড়ীর পাশের এক কলেজে ভর্তি হয়। রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়ে। একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করছে। তারপর স্থানীয় কিছু মাদক ব্যবসায়ীকে ধরিয়ে দেয় আইন শৃঙ্খলার বাহিনির হাতে। এখন একটি বেসরকারী টেকনিক্যাল কলেজে কম্পিউটার নিয়ে ডিপ্লোমা করছে।
আমরা মাঝে মাঝে কিছু বিচিত্র অভিজ্ঞতার জন্য বিচিত্র কিছু কাজ করি। যা আমাদের পড়া লেখা ও স্বাভাবিক জীবনে বিঘœ ঘটায়। ফুটপাতে বসে খাওয়া, সস্তা হোটেলে ভাত খাওয়া লক্ষ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়ানো ইত্যাদি।
আবার সি.আর.বি পাহাড়ের কথায় আসছি। অনেক বছরের পুরানো কিছু গাছ। আঁকা বাঁকা পাহাড়টি কোথাও কোথাও দেখলে আলাদা আলাদা পাহাড় মনে হয়।
পুরোটা না ঘুরলে বোঝা যায়না একটার সাথে আরেকটা লাগানো। মাঝখানের উপত্যাকা আর খাদ দেখলে মনে হয় করুন আর্তনাদ করে ডাকছে। আমরা মাঝে মাঝে সাড়া দিই। পুরানো গাছ গুলোর শিকড়ে বসে আমরা কত আড্ডাইনা দিয়েছি পূর্বে, এখন অবশ্যই আধুনিকতার ছোঁয়ায় কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে, সেই শিকড়ে প্রেম জুটি বসেছে। আজকের দিনটির তুলনায় আগামী দিনটি হয় আধুনিক, এই আধুনিকতা ধ্বংস করছে পরিবেশ, সমাজ এবং জাতি।
মুন্না আমাকে পিছনে থেকে ডাকলো, গাছ-পালা দেখতে দেখতে এবং পুরনো দিনের কথা স্বরন করতে গিয়ে আমি তার কথা ভুলেই গেছি, দোস্ত তুইতো কোথায় হারিয়ে গেছিস! আমি পেছন থেকে লক্ষ্য করছিলাম।
তাই নাকি?
হ্যা তাই, আচ্ছা শোন্ পরিবেশটা বড্ড পালটে গেছে তাই না?
হ্যা: কেন?
ঐ দেখ্ মাদ্রাসার এক ছাত্র তিনজন বোরকা পড়া মেয়ের সাথে আড্ডা দিচ্ছে।
আধুনিকতার পুরো ছোয়া লাগলে তারাও বোরকা ও পাঞ্জাবি থেকে বেরিয়ে আসবে, হয়তো একদিন এই ভাবে এত দূরত্ব থেকে কথা বলবে না তারা, আজ বলছে সামনে আরো পরিবর্তন হবে।
কথা বলতে বলতে আমরা দু’জন তাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। উদ্দেশ্য বড় জাম গাছটির নিচে শিকড়ে বসা, লক্ষ্য করলাম তার চার জন আমাদের লক্ষ্য করছে। মুন্না বলছে ছেলেটির সাথে একজন দেখা করতে এসেছে, সাথে দু’জন বান্ধবী নিয়ে এসেছে, বাকি দু’জন আমাদের সাথে হয়তো কথা বলতে চায়। আমরা তাদের দিকে কড়া চোখে তাকিয়ে জাম গাচের নিচে গিয়ে বসলাম, তারা কিছুক্ষণ পর পর আমাদের দিকে তাকাচ্ছে আর কথা বলছে।
মুন্নার মাথায় শয়তানি ঢুকলো, বললো দোস্ত বায়তুশশরফ মাদ্রাসার ছাত্রদের গার্ডিয়ান হিসেবে কাজ করে নাকি ফররহাত হুজুর। খবর পেলে মাঠ থেকে ছাত্র ধরে নিয়ো যায়।
আমি বললাম তোর সাথে পরিচয় আছে?
সে বললো পরিচয়ও আছে মোবাইল নাম্বারো আছে। একটি কল করে দিই।
তার বলার ধরন এই রকম..
আস্সালামুআলাইকুম হুজুর,
কে বলছেন?
হুজুর আমিতো রেলওয়ের কর্মকর্তা বলছি, সি.আর.বি পাহাড় থেকে।
জ্বি বলুন।
হুজুর এইখানে বায়তুশ শরফের ছেলেরা তো পরিবেশ নষ্ট করে ফেলছে। মেয়ে নিয়ে আড্ডা দিচ্ছে।
পুলিশ কে ধরিয়ে দিন।
পুলিশ কোথায় পাবো?
আচ্ছা আপনি একটু কষ্ট করে চোখে চোখে রাখুন আমি আসতেছি।
আচ্ছা।
তারপর মুন্না কল রেখে দিলে আমরা এক দমকা হাসলাম।
আচ্ছা মুন্না তুই এদের নামে হুজুরকে অভিযোগ করলি কেন?
শুন, বণ্যরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে, আমি চুপ করে থাকলাম।
তার পর সে হঠাৎ বললো দোস্ত আমাদের চলে যেতে হবে।
আমি বললাম কেন?
হুজুর আসতেছে আমাদেরকে দেখলে চিনে ফেলবে।
আমি ভাবলাম, হ্যা, চেনারই কথা, আমরাই এই এলাকায় প্রায় পাঁচ বছর ছিলাম।

একসময় হয়তো রাস্তা বড় করতে গিয়ে এই পাহাড়ের অনেক অংশ কেটে ফেলা হবে। হয়তো অনেক বাড়ি ঘর উঠবে যার কারণে এই মনোরম পরিবেশ আর থাকবেনা। চলে এলাম চকবাজার।
এই সময়ের প্রেম বলতে বোঝায়, কোন রকম সময় কাটানো। শেক্সপিয়র বলেছেন ছেলেদের সাথে মেয়েদের বন্ধুত্ব হয়না কারণ এখানে জৈবিক চাহিদা রয়েছে। এই তত্বটি বর্তমান সময়ের সম্পূর্ণ বিপরীত, একজন ছেলের অনেক গুলো মেয়ে বান্ধবী, আর একজন মেয়ের অনেক গুলো ছেলে বন্ধু। সাধারণত অর্থে বয়ফ্রেন্ড বলতে ছেলে বন্ধু এবং গার্লফ্রেন্ড বলতে মেয়ে বন্ধুদের বুঝায়। কিন্তু না যার সাথে ফিক্সড সে বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড, এই ফিক্সড বলা হচ্ছে সেটিও সাময়ীকের জন্য।
আর হুমায়ুন আহমেদ বলেছে ভালো ছেলেদের জন্য মেয়েদের প্রেম জাগেনা, যেটি জাগে সেটির নাম সহানুভূতি।
এই খানে প্রেম বলতে যা বুঝানো হচ্ছে তা আবেগের প্রতিফলন, যৌবন বয়সে ছেলে মেয়েরা বিবেককে প্রশ্রয় দেয়না, তাদের সম্বল আবেগ, সাময়ীকের জন্য আবেগ, সেটি ও আবার কাটিয়ে উঠতে হয় নতুনের আহবানে, কতটা যন্ত্রিক মানুষের মন!
নতুন কোন সিস্টেম সাফ্টওয়্যার বাজারে আসলে নেয়ার জন্য আমরা যেমন আগ্রহী তেমন নতুন গার্ল বা বয় ফ্রেন্ড মানব মনের সিস্টেম সাফটওয়্যার, এটিই বর্তমানের বাস্তবতা, আর এসব প্রেম ভালোবাসা মুখরিত করে রেখেছে চকবাজারের গুলজ্বার টাওয়ারের ৩য় তলাকে, মিনি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, কফিশপ ইত্যাদি ইত্যাদি।
বর্তমানে আমার গল্প চকবাজারে, তাই গুলজারের কথা বললাম। প্যারেডের সেই দোকানের কথা ভুলে যায়নি, ওই দোকানেই এসেছি, তবে বসে কিংবা দাড়িয়ে চা খাওয়ার অবস্থান এখন নেই মানুষের ভিড়ের কারণে। আমাকে আরেকটু গভীরে যেতে হবে। এই ভদ্র চেহেরা নিয়ে ভিড়ের ভিতর ঢুকতে পারবো বলে মনে হয় না। আর সেই চেষ্টাও করব না। পাশের টংয়ে বসলাম, এবং যাই ভেবেছিলাম তাই হচ্ছে। কেউ কেউ হাতে ভারি ব্যাগ নিয়ে যাচ্ছে, কেউ কেউ ঠিকানা জেনে নিচ্ছে। আমার এলাকার এক বন্ধু এসব নিয়ে আমাকে একবার কিছু কথা বলেছিল। ঠিক এইখানের বিষয়ে না, সে গোলজার কিংবা চকবাজারে যেসব চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট আছে এই সবের ব্যাপারে বলেছিলো। ওকানে যারা গার্লফ্রেন্ড নিয়ে যায়। তাদের সর্বনিম্ন চারশ টাকার নাস্তা করতে হয়। আর মাঝে মাঝে পুলিশি অভিযান ও হয়। ছাত্র ছাত্রীদের ধরে অভিভাবক ডেকে ধরিয়ে দেয় তারা। কিন্তু কিছু রেষ্টুরেন্ট আছে যেগুলোতে পুলিশ অভিযান চালায় না, এবং ভিতরে হালকা হালকা আলো থাকে। প্রত্যেক জুটির জন্য আলাদা আলাদা বসার ব্যবস্থা, পর্দা দিয়ে পৃথক করা, মোটা মোটি সুরক্ষিত। আর এই সব প্রতিষ্ঠান প্রতিমাসে ৫০,০০০ টাকার মত থানায় গিয়ে দিয়ে আসে।
আমি তাকে জিজ্ঞেস করে ছিলাম। তুই কোথা থেকে জানলি, সেই বলল, আমরা এই লাইনের লোক আমরা জানব না?
আমাদের বাড়ি ওয়ালার গাড়ির ড্রাইবার নুরূ উদ্দিন, মিশুক স্বভাবের লোক, গত সপ্তাহে পুলিশের খপ্পরে পড়েছিলো।
আমাকে বললো ভাই জানেন, পুলিশ গাড়ি থামিয়ে গাড়ির কাগজ পত্র দেখতে চায়লো। কাগজ পত্র দেখালাম, তারপর কয় গাড়িতে উঠ, আমি মালিকের সাথে কথা বলার জন্য মোবইল ফোন হাতে নিতেই ছো মেরে কেড়ে নিলো, আার তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তৈরী করে আমার মালিক কে ফোন দেয়। ট্রাফিক সিগ্নাল মানি নাই বলে। আমার জামিন নিতে এক ত্রিশ হাজার টাকা নেয় ।
এই দেশে টাকা খরচ করলে সব সম্ভব, একটি পুলিশের চাকরি নিতে তিন চার ল টাকা ঘুষ, নেতা-মন্ত্রীর সুপারিশ অথবা দলীয় পরিচয় থাকতে হয়। আজকাল প্রায় চাকরিতে ’মামা’ লাগে। মামা মানে টাকা। সরকারি চাকরি দেশের কোন সাধারণ মানুষের জন্য না, দলীয় ক্যাডারদের জন্য।
গার্মেন্টস নিয়ে কিছু কথা বলতে হয়। কিছু দিন পরপর গার্মেন্টন্স্ এ আগুন তদন্ত কমিটি গঠন হয়, বিচার হয়, সাজা হয় না। গার্মেন্টস এর মালিকরা অল্প দিনে কোটিপতি হয়ে যায়, গরীব দেশে গরীব মানুষগুলোকে খাটিয়ে।
ইন্স্যুরেন্স করা থাকে গার্মেন্টস এর নামে। আর এই টাকা পাওয়ার জন্য বা সরকারি ঋণ না দেয়ার জন্য গার্মেন্টস মালিকদের মনে আগুন জ্বলে, আর সেই আগুন একদিন গাামেন্টসে লেগে যায়।
আমার গল্পের মূল কথাও হচ্ছে ঘুমন্ত বিবেক বয়ে চলা মানুষ গুলো নিয়ে আলোচনা করা।
এই দেশে প্রচুর ব্যবসা দিক রয়েছে। যা আকল্পনীয়। রাজনীতি হচ্ছে ব্যবসায় মূল কেন্দ্র। তারপর আছে মানুষের ধর্ম নিয়ে, বিশ্বাস নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ব্যবসা, ব্যবসায় হরেক রকম প্যাচে এদেশ আটকানো, বাাঙ্গালী বার বার বেল তলায় যায়তে অভ্যস্ত, বার বার ফাঁদে পড়ে।
ফ্ুঁ ব্যবসা নিয়ে সামান্য অভিজ্ঞতা আছে। আমি যখন ছোট ছিলাম আমাদের বাড়িতে প্রায় সময় হুজুরদের দাওয়াত করা হত। তখন আমার ভাইয়া আমাকে বড় হুজুরের দোয়া করার জন্য কোলে দিত। হুজুর বিভিন্ন রকমের দোয়া পড়ে আমাকে ফুঁ দিত। আমাদের পাড়ার ওবাইদুল কাদের নামে এক বৈদ্য ছিলো। তার ফুঁ ছিলো বিভিন্ন ধরণের মন্ত্র পাঠ করে। মন্ত্রেও একটি লাইন আমার এখনো মনে আছে। ’যে করে অহংকার আমি আমি মারি তার হুংকার, ওয়াং চিং ফুঁ’।
আর ফুঁ দিয়ে জম জমাট ব্যবসা চলছে বাংলাদেশে। মানুষের বিশ্বাসই একমাত্র পুঁজি। অনেক ভন্ডপীর গ্রেফতার হয়। আস্তানা পুড়িয়ে দেয়া হয়। কিন্তু আশ্চ্যর্যের বিষয় হচ্ছে এই ব্যবসা দিন প্রসারিত হচ্ছে। এদের ও নাকি পালিটিকাল লিংক আছে। তাদের আয়ের কিছু টাকা রাজনৈতিক কর্তা ব্যক্তিদের হাতে যায়। ইদানিং রাস্তার পাশে পাশে দেয়ালে, খাম্বায় তাদের বিজ্ঞাপন খুব চোখে পড়ছে। পানির মাধ্যমে হাজিরা দেখা হয়। তুলা রাশি দ্বারা হাজিরা দেখা হয়। চোখের মনিতে হাজিরা দেখা হয়।
এই রকম একটা ঘটনা বলি। আমার ভাগিনি সানজিদা যখন ঢাকায় আই সিও তে মৃত্যুও সাথে লড়ছে হতাশা গ্রস্থ তার পরিবার তখন ছুটে গেলে চট্টগ্রামের চকবাজার নবাব সিরাজদ্দৌলা রোডস্থ জিপুবৈদ্যের কাছে, গ্যারান্টি দিয়ে কাজ করে সে, চার হাজার টাকা নিয়েছে, তিন দিনের ভিতর সানজিদা মারা গেলো, জিপু বৈদ্যকে বলতে গিয়েছিলাম তার কথা। তিনি বললেন, আপনারা ঠিক সময় বান কাটা ফল গুলো তার কাছে নিয়ে যেতে পারেননি।
আমার মা খুব অসুস্থ। অনেক চিকিৎসা করা হলো, কেউ বলে হরমনের সমস্যা, কেউ বলে হার্টের, অপারেশন করতে হবে। ইত্যাদি, ইত্যাদি।

আমার আপুরা কেঁদে কেঁদে হুলস্থুল অবস্থা। ডাক্তারের উপর পূর্ণ আস্থা কখনো কেও রাখে না। বিভিন্ন প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনীয় পরীা নিরীা করিয়ে রোগীদের বেহাল অবস্থা করে ছাড়ে। অনেকেই ােভ প্রকাশ করতে গিয়ে বলে উকিল (এডভোকেট), ডাক্তার, পুলিশ ওরা তিন ক্যাটাগরির ডাকাত। হ্যা, যে কথাটি বলছিলাম, মানুষ বিপদে পড়লে হাতের কাছে যা পায় তাই আকড়ে ধরার চেষ্টা করে কুসংস্কারাচ্ছন্ন আদিম মন টাও আবার জেগে উটে অনেকের।
মেয়েদের কথার অভাব নেই, আমার ছোট আপু কার কাছে যেন শুনেছে। বহদ্দারহাটে নাকি কোন এক জায়গায় এক হুজুর বসেন, তিনি নাকি এসব চিকিৎসায় খুব ভালো। আমাকে খবরা খবর দিয়ে ওকানে যেতে হবে। আর হুজুরের ওখানে রোগীকে যেতে হয় না। আমি তাদেরকে বোঝালাম অনেক ভাবেই তারা বুঝে না। তার পরেও আমার এক ফ্রেন্ড এর সাথে কথা বললাম, হুজুরের ঠিকানাও তার কাছে পাওয়া গেলো। সেও নাকি ওই হুজুরের কাছে অনেক বার গিয়েছে। আমাকে সেই নিয়ে যাবে। আশ্চর্য আমি ওই হুজুরের কাছে যাচ্ছি শুনে আমার পরিবারের সবার চেহেরায় স্বস্তি ফিরে এলো। অন্তত চেহেরা দেখে তাই মনে হয়েছে। আমি আমার বন্ধু শরীফ বহদ্দারহাট থেকে রিক্সায় উঠলাম, গন্তব্য শামসের পাড়া।
হুজুরের বাড়িতে গিয়ে আমি অবাক, লোকে লোকারণ্য। হুজুর নাকি মসজিদে গেছে। আবার দেখি পাঁচ মিনি পর আমাদের ডাকা হলো। অথচ, আমরা মেইন গেইটেই আছি, হুজুর যদি মসজিদ থেকে আসে তাকে এই রাস্তা দিয়ে আসতে হবে।
টিকেট কাটতে হয়, প্রতি টিকিট দুই টাকা করে। এত অল্প টাকায় মনে হয়, চট্টগ্রামের কোথাও হাজিরা দেখা হয় না।
টিকিট কাউন্টারে ভিড়, তাবিজের কাউন্টারে ভিড়, বিলাফের কাউন্টারে ভিড় কম না, আমরা ভিতরে ঢুকলাম সস্তায় পেয়ে আমি আমার নাম সহ পরিবারের আরো পাঁচ জনের জন্য নাম দিয়েছি। নিজের আসল নাম ও মায়ের নাম দিতে হয়। এবং হুজরের কাছে এসে নাম লেখা কাগজটি জমা দিতে হয়।
এর পর দেখার পালা, বান কাটা হয় ডাব দিয়ে। মিনারেল ওয়াটার বোতলের আড়ৎ বলে মনে হচ্ছে। আবার ডাবের সংখ্যাও কম নয়। যাদের সামর্থ্য নেই তাদের জন্য নরমাল পানিও প্লাস্টিকের ছোট বোতল রয়েছে।
আমার পালা আসলো, প্রথমে আমার মায়ের হাজিরা দেখা হলো, মাকে যাদু করা হয়েছে এবং জীনের আছর রয়েছে, বান কাটতে হবে ডাবের পানি খাওয়াতে হবে (ডাব পড়া) তাবিজ লাগবে সব মিলিয়ে পঞ্চাশ টাকা।
দিব?
দেন।
তার পর হুজুর আমার নানির নাম আমার মায়ের নামটি বড় করে বলে হাতের ছুরি উপর দিকে করে বিশেষ ভঙ্গিতে উপর দিকে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে ডাবে ছোট ছোট কোপ মারে। দুই একটা দাগ দেয়।
আমার নাম বললো, আমাকে নাকি যাদু করা হয়েছে। আমারটাও একিই রকম করে কাটা হলো।
হুজুর আমার মায়ের নাম আর আমার নামটিই শুধু বড় করে বলেছে। বাকি কথা গুলো ছোট করে বললো। আরেক বার গিয়েছিলাম হুজুরের কাছে এক মাস পুর্ণ হবার আগেই। আমাকে নাকি আবার যাদু করা হয়েছে। হুজুরের কাছে খারাপ কিছু করার অনুরোধ করতে নিষেধ লেখা আছে দেয়ালে টাঙ্গানো কাগজে। আর হুজুর নিজের ব্যবসার বাইরে একটি কথাও বলেনা।
জিপু বৈদ্য হাজিরা দেখতে বিশ টাকা নেয়। বান কাটতে তিন, চার হাজার চাকা নেয়। এবং মন্ত্র পাড়ে বড় বড় করে যা আমাদের বোধগম্য নয়।
এই হুজুরের আসন রুমে দুইটি দান বাক্স রয়েছে, একটি মসজিদের এবং আরেকটি মাদ্রাসার। নাম হীন মসজিদ ও মাদ্রাসা।
জীপু বৈদ্যের কমন রুমে রয়েছে, মাঝারের বড় বড় ছবি, আধ্যাত্মিক সমিতির সদস্য পত্র, ইত্যাদি। অপরাধ জগৎটা অনেক বড়।
বাচ্চারা খেলার সময় এদিক ওদিক তাদের খেয়াল থাকেনা। কে কোথায় কি করছে তাদের দেখার সময় নেই।
এই পৃথিবীর বাসিন্দাদের অবস্থার অনেকটা সে রকম, একটি গাছের শত শত ডাল পালা থেকে একটি কান্ডের কথা বল্লাম। (সামান্য নমুনা )

বলতে বলতে অনেক কথা হলো বলা,
পৃথিবীটা চলছে এভাবেই চলবে তার পথ চলা,
নৈতিকতা ছেড়ে নোংড়ামি জায়গা করে নিচ্ছে ধীরে ধীরে।
চলবে, যতোদিন মানুষ, নিজ ভূবনে আসবেনা ফিরে।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×