somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃহত্তম বৌদ্ধ-বসতি : টিভি নিষিদ্ধ, আইফোন ওকে

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আকাশের বুকে ঢেউ ভাঙার মতো পাহাড়। নীল-সাদার মেঘে ভেসে-ওঠা সবুজ বরণ। চারপাশে, চারদিকে পাহাড় ঘেরা। সেই পাহাড়ের কোল চুয়ে তির তির করে যেন বয়ে চলেছে অজুত-সহস্র পানিরাশি। পাহাড়ি ঝরনার মতে সে নয়। পুরো কোল জুড়ে আপন বেগে পাগলপারা। ভুল ভাঙে কাছে গেলে। উপত্যকার মরীচিকা! হয়তো তাই। তবু, স্রোতই তো। প্রাণের স্রোত। পাহাড়ের কোলে এ এক গ্রাম। প্রকৃতি তার রূপরসগন্ধ যেন উজাড় করে দিয়েছে। তার ওপর খোদকারিতে আরও অপরূপা। শ'য়ে শ'য়ে হাজারে হাজারে বাড়ি। একঘর পড়শি বসত করে। তবে, গাঁয়ের পাশের আরশিনগর নয়। চীনের শেংদু থেকে ৩৭০ মাইল।



১২,৫০০ ফুট উঁচুতে শান্ত, নিরিবিলি গ্রাম। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ-বসতি। হ্যাঁ, ৪০ হাজার বুদ্ধ সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসিনী আছেন এখানে। নানা ভাষাভাষির হলেও যাদের ঘর এক, পরিধান এক, ধর্ম এক, একসঙ্গে শিক্ষা। একসঙ্গে প্রার্থনা। দেশকালগণ্ডির সীমাবদ্ধতা নেই। কেউ এসেছেন পাশের তিব্বত থেকে, কেউ চীনেরই, কারও আগমন মালয়েশিয়া থেকে কারও বা আসা তাইওয়ান, হংকং নয়তো সিঙ্গাপুর। উদ্দেশ্য একটাই, তিব্বতীয় বৌদ্ধধর্মের পাঠ। সেই পাঠের জন্য এখানে গড়ে উঠেছে একটা প্রতিষ্ঠান, যার নাম লারুং গর বুদ্ধ অ্যাকাডেমি। এই অ্যাকাডেমিকে কেন্দ্র করেই চারপাশে বৌদ্ধ-বসতি। গা ঘেঁষাঘেঁষি পড়শি হলেও, সেখানে একটা শৃঙ্খলা আছে। পড়শির বয়স ও লিঙ্গ অনুযায়ী পাশাপাশি এক একটা জেলা। এ গ্রামের সবাই যে পড়ুয়া, তা নয়। সেখানে কিছু তিব্বতীয় বাস করেন বংশপরম্পরায়। কিন্তু, তারাও সেখানে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো নয়। সুন্দরভাবে মিলেমিশে রয়েছেন। সব ঘর, সবার ঘরই প্রায় একরকম। তিনটে করে ঘর। কারও ঘরে আলাদা করে শৌচাগার নেই। বাড়ির অদূরে, নির্দিষ্ট জায়গায় একসঙ্গে, সবার জন্য শৌচাগার। বাড়ির রং-ও এক। লাল-খয়েরির মিশেল মিলন মহান যেন। ভোরে মন্দের প্রার্থনা, সবাইকে বেঁধে রেখেছে একসুরে। এত পরিপাটি, তবু খুব বেশি আগে নয়, এই তো সেদিন জন্ম। গত শতকের আশির দশকের প্রথমেই।


এখানকার আবাসিকদের কাছে এ গ্রাম স্বর্গ। মৃত্যুর পর এখানে আলাদা করে শেষকৃত্যও হয় না। পাহাড়ের পাথুরে মাটি। যে মাটি খুঁড়ে সমাধিস্থ সম্ভব নয়। তাই মৃত্যুর পর পাহাড়চুড়োয় রেখে আসা হয় মরদেহ। খুবলে খায় শকুনে। টেনে নিয়ে যায় কোনও বন্য পশু। এতে মন খারাপ হয় না। কারণ, তারা বিশ্বাস করেন, মৃত্যুর পর শরীর শূন্য কুম্ভের মতো। তাই সংরক্ষণ করে রাখার মানেও তারা পান না। তবে ছবির মতো গ্রামে কিন্তু টিভি নিষিদ্ধ। কোনও ঘরেই টিভি নেই। দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ আইফোনে। চাইলে যে কেউ-ই যেতে পারেন এই বদ্ধগ্রামে। বাইরের অতিথিদের জন্যে দুটো আবাসও রয়েছে। পাহাড় বেয়ে কুড়ি ঘণ্টার কষ্টপথ হলেও এমনই তার হাতছানি, এলে কিন্তু ফিরে যেতে ইচ্ছে করে না। আপন হতে আপনজন করে নিতে সময় লাগে না। - See more at: Click This Link
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×