বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম : কয়েক বছর চট্টগ্রাম সেনানিবাসের কাছে একটি দর্জির দোকানে কাজ করছিলেন সাইদুর রহমান (৪০)। হঠাৎ নেশায় পেয়ে বসে তাঁকে। কাজকর্ম ফেলে থাকেন নেশা নিয়ে। সংসার চালাতে উপায় না দেখে নগরের নাছিরাবাদ শিল্প এলাকায় গুঁড়ো দুধ তৈরির একটি কারখানায় নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরি নেন স্ত্রী ফরিদা বেগম (২৬)। তিনি দেখতে-শুনতে সুন্দরী ছিলেন। চাকরির কারণে দিনের বেশির ভাগ সময় তিনি বাইরে থাকায় স্বামী সাইদুরের সন্দেহ বাড়ে। স্ত্রীর ওপর অন্য লোকের যাতে নজর না পড়ে, সে জন্য তাঁর মুখমণ্ডল বিকৃত করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সাইদুর বাসায় ডাকাতির ঘটনা সাজান। তিন হাজার টাকায় ভাড়া করেন তিনজন বখাটে। গত ২৮ মে ডাকাত সেজে রাতে ঘরের বেড়া কেটে ফরিদার ঘরে ঢোকে বখাটেরা। ডাকাতেরা বাসা থেকে দুটি মোবাইল ফোনসেট লুট করে যাওয়ার সময় ফরিদার মুখে এসিড় ছুড়ে মারে। হাসপাতালে ফরিদার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সাইদুর বাদী হয়ে ফরিদার তিন সাবেক সহকর্মীকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
নগর পুলিশের পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার রেজাউল আলমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল প্রায় আড়াই মাস ধরে তদন্ত চালিয়ে জানতে পারে, সহকর্মীরা নয়, স্বামীর যোগসাজশে ফরিদাকে এসিডে ঝলসে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এরপর সাইদুরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের একমাত্র সন্তান সাবিক (৪) এখন আছে নানা-নানির কাছে।
সাইদুর গত রোববার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আজিজুল হকের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে তিনি বলেন, ‘নগরের বায়েজিদ থানার চক্রেসো কানন আবাসিক এলাকার সরোয়ার মিয়ার বাড়িতে আমরা ভাড়া থাকতাম। চাকরি নেওয়ার পর ফরিদা বেশির ভাগ সময় ঘরের বাইরে থাকত। এর ফলে আমার সন্দেহ হয় সে অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখছে। এই সন্দেহ থেকে আমি ফরিদার মুখ এসিডে ঝলসে দেওয়ার পরিকল্পনা করি।
Click This Link