ভারতের সাথে আমাদের জনম জনম ভালোবাসা আছে।মাঝে যদিও কিছুটা ঘাটতি দেখা গেলেও, এখন ভালোবাসার সর্বোচ্চ পর্যায় পৌছে গেছি। এর থেকে আরো ভালোবাসা দেখাতে গেলে এক দেহে বিলীন হয়ে যাওয়া ছাড়া আর দেয়ার কিছুই নাই।
আমরা ভারতের ভালোবাসা পেতে কি করি নাই? আমরা আমাদের চেয়েও ভারতের স্বার্থের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি।ট্রানজিটসহ বাংলাদেশের কাছে ভারতের যা যা চাওয়া, তার কোনও কিছু দিতেই প্রশ্ন করি নাই বা গড়িমসি করি নাই । ভারতের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটানো বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় না দিয়ে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছি। এমনকি নিজেদের ইন্টারনেট স্পীড কমিয়ে নাম মাত্র মুল্যে ব্যান্ডউইথ দিয়েছি। মোট কথা,যখন যা চেয়েছে,সব বিনা আপত্তিতে দিয়ে দিয়েছি।
কারন আমাদের ভালোবাসা ভারতের প্রতি অপরিসীম ।
ভারতও নাকি আমাদের ভালোবাসে।তবে ভারতের ভালোবাসার প্রকাশ সাইকো লাভারের মতো। আর এই ভালোবাসা এখন অতি উচ্চপর্যায়। তাই আমাদের মারেও আগের থেকে বেশী।
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর গুলিতে গত পাঁচ বছরের মধ্যে এ বছরই সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় বাংলাদেশী সীমান্ত এলাকায় নিহত হয়েছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলছে, চলতি বছরে এ পর্যন্ত বিএসএফের গুলিতে ৪৫ জন বাংলাদেশী নিহত হয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩৩ জন।
তবে দোষ কিন্তু আমদেরই বেশী । বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ বা বিজিবি`র প্রধান মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ তাই বলেছেন। মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন এক্ষেত্রে বাংলাদেশীদেরও দোষ রয়েছে। কিন্তু আইনভঙ্গ করে সীমান্ত অতিক্রম করলেই হত্যা করতে হবে কেন? এই প্রশ্নের জবাবে মেজর জেনারেল আাজিজ জানান, ভারতের সাথে আলোচনার সময় তিনি বরাবরই এই কথাটি তুলে আসছেন।তবে ভারতীয় পক্ষ থেকে কোন জবাব ছিল কি না, সে সম্পর্কে তিনি অবশ্য কোন মন্তব্য করেন নি।
আবার পাকিস্তান ভারতের শত্রু রাষ্ট্র। কিন্তু >>>>>>>>>
এ তিন বছরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ-এর হাতে নিহত বাংলাদেশি নাগরিকের সংখ্যা এ পর্যন্ত একশ। চলতি ডিসেম্বর মাসে এ সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।একই সময়ে পাকিস্তান ভারত সীমান্তে বিএসএফ-এর হাতে ৪৬ জন পাকিস্তানি নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহত পাকিস্তানি নগারিকদের বড় একটি অংশ সামরিক এবং আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য। আর বাংলাদেশের নিহত নাগরিকরা সবাই নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ। পাকিস্তানির চেয়ে বেশি বাংলাদেশি হত্যা করছে বিএসএফ
বিএসএফ-এর হাতে নিহতের হিসাব:
সাল ২০১৩ ২০১৪ ২০১৫ মোট
বাংলাদেশ ২৭ ৩৩ ৪০ ১০০
পাকিস্তান ১৫ ০৯ ২২ ৪৬
উইকি’র হিসাব অনুযায়ী, ২০১৩ সালে সীমান্তে বিএসএফ-এর হাতে ১৫ জন পাকিস্তানি নাগরিক নিহত হয়েছেন। ২০১৪ সালে ৯ জন এবং চলতি বছরে এপর্যন্ত ২২ জন পাকিস্তানি নাগরিক নিহত হয়েছেন। এই সীমান্তে পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতেও প্রায় সম পরিমাণ ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন।
পরিসংখ্যানের তথ্য উপাত্ত নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন ভারতের মানবাধিকার সংগঠন বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম)-এর প্রধান কিরীটি রায়। তিনি বলেন,‘ আমাদের পরিসংখ্যানও তাই বলছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ-এর হাতে যত হত্যাকাণ্ড ঘটে পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তার চেয়ে অনেক কম।শুধু তাই নয় ভারতীয় নাগরিকরাও বিএসএফ-এর হাতে নিহত হচ্ছেন। গত এক বছরে বাংলাদেশ সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তে ২৫ জন ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন।এরা বাঙালি। আর পুরো সীমান্তের হিসাব করলে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে।’
তিনি বলেন,‘ বাংলাদেশ ভারতের বন্ধুরাষ্ট্র আর পাকিস্তান ভারতের শত্রু রাষ্ট্র। কিন্তু সীমান্ত হত্যার পরিসংখ্যান তা বলে না। বন্ধু রাষ্ট্রের নাগরিকদের কি এভাবে হত্যা করা যায়? আর বাংলাদেশি যেসব নাগরিককে হত্যা করা হয় তারা নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ। তাদের গুলি করাই তো বেআইনি।’
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘ এতদিন গরু চোরাচালানকে সীমান্ত হত্যার কারণ হিসেবে বলা হত। কিন্তু এখন তো গরু চোরাচালান বলতে গেলে শূন্যের কোঠায়। তারপরও সীমান্তে বিএসএফ-এর হাতে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বাড়ছে। আসলে সীমান্ত হত্যার পেছনে আসল কারণ হল ভারতের মনোভাব। ভারত কাশ্মিরসহ পাকিস্তান সীমান্তে নিয়োজিত বিএসএফ সদস্যদের এখনও ঘুরিয়ে আবার বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়োগ করে। তাদের অধিকাংশই বাংলা ভাষাভাষী নয়। তাদের মনোভাব যুদ্ধংদেহি। ফলে পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হচ্ছে না।’
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১২