ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের সাম্প্রতিক সৌদি আরব সফর এবং ভারতের বিগত প্রজাতান্ত্রিক দিবসের প্রধান অতিথি হিসেবে সৌদি আরবের মহামান্য বাদশাহকে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে দু'দেশের অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক একটা বিশেষ মাত্রায় উন্নীত হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। সৌদি-ভারত সম্পর্কের এই গভীরতা ও ব্যাপকতায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিস্মিত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ভারত-বাংলাদেশ ও পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিম দেশসমূহকে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য মুসলিম দেশের সাথে সম্পর্ক বিনষ্ট করার কূটচাল চালছে এবং এর মাধ্যমে এ অঞ্চলে তার আধিপত্যবাদী থাবা বিস্তারে পারঙ্গমতা দেখাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ভারত ইসরাইলের কূটনৈতিক নেটওয়ার্ক, স্ট্র্যাটেজিক অবকাঠামো এবং অন্যান্য সুবিধা ও বিশ্বব্যাপী তাদের লবী শক্তিকে ব্যবহার করছে। বাংলাদেশের সাথে সৌদি আরবের সম্পর্ক ধ্বংসের অন্তরালের অন্তর্ঘাতী শক্তি হিসেবে ভারত-ইসরাইলের যুথবদ্ধ কূটচালে পড়ে সরকার বাংলাদেশকে বন্ধুহীন করার চক্রান্তের ফাঁদে পা দিয়েছে বলে বাংলাদেশের কূটনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল আতঙ্কিত।
বিভিন্ন তথ্যসূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, বাংলাদেশের শ্রমবাজার ধ্বংসে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অব্যাহত নেতিবাচক মিডিয়া সন্ত্রাস চালানো হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এবং কোন উপযুক্ত জবাব বা কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হয়নি। বিশেষ করে বাংলাদেশের শ্রমবাজার ধ্বংসের লক্ষ্যে ২০০৮ সাল থেকেই http://www.antirat.com শীর্ষক ওয়েবসাইট খুলে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। এ ওয়েবসাইটের পরিচালকরা নিজেদের পরিচয় গোপন করে পরিকল্পিত এনটি বাংলাদেশ ক্যাম্পেইন তথা ‘ইঁদুর দমন' অভিযান চালিয়েছে। এ সময়ই বাংলাদেশী প্রবাসীর দ্বারা কথিত সৌদি নারীর সম্ভ্রমহানির ভিডিও চিত্র গোটা মধ্যপ্রাচ্যে প্রচার করা হয়। পর্দানশীন সৌদি নারীর সম্ভ্রমহানির কথিত ভিডিও চিত্র কীভাবে, কারা তুললো এবং কী উদ্দেশ্যে প্রচার করলো, বাংলাদেশ মিশন তা নিয়ে কোন তদন্ত করেছে বলেও কেউ জানে না। এদিকে সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় দেশসমূহের মিডিয়া ও বার্তা সংস্থার ওপর ভারতীয় প্রবাসী সাংবাদিকদের একক কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ থাকায় বাংলাদেশ তার অসহায় ভিকটিম হয়েছে। বিগত কেয়ারটেকার সরকারসহ বর্তমান মহাজোট সরকার সংকটের উৎস ও প্রকৃতি নির্ণয় না করে ভারত-ইসরাইল অক্ষের খয়ের খাঁ হিসেবে এই বিষয়টিকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সাথে মিলিয়ে নোংরা ব্লেইম গেম শুরু করেছে। যা বাংলাদেশের লাখ লাখ প্রবাসী শ্রমিকের জন্য মহাবিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
-ফতেহ আলী টিপুর লেখা থেকে সংগৃহীত