প্রতিদিন অফিসে এসে ২-৪টা পত্রিকা পড়া নিয়মিত অভ্যাস। আজকে নয়াদিগম্তে একটি নিউজ পড়ে আঁতকে উঠলাম! বিস্তারিত জানার জন্য অন্য পত্রিকাগুলোর মূলপাতাগুলো দেখলাম। আর কোথাও এই গুরুত্বপূর্ণ খবরটি পেলাম না।
খবরটি হলো, গতকাল বিকেল ৫টার দিকে ভারতের ৩ শতাধিক বিএসএফ ২ শতাধিক ভারতীয় নাগরিক নিয়ে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের পাদুয়ার ৫০০ মিটার ভিতরে ঢুকে পড়ে এবং পাদুয়ার প্রায় ২৩০ একর জমি নিজেদের দখলে নিয়ে যায়। বিডিআর মাইক দিয়ে এর মৌখিক প্রতিবাদ করলেও শত্রুপক্ষ সরে যায়নি। বিস্তারিত দেখুন।
বাংলাদেশের জন্য গতকাল ছিল শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস, আর আগামীকাল বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনগুলো জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ - ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত আছে। কিন্তু বিজয়ের প্রায় ৪০ বছরের মাথায় এখন চিন্তা হচ্ছে আমরা কি এখনো সত্যিকার স্বাধীন ও দেশপ্রেমিক হতে পেরেছি?
দেশকে মায়ের মতো ভালবাসার শ্লোগান দিয়ে সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের চেষ্টা করলেও প্রতিদিন বিএসএফের গুলিতে মায়ের স্বাধীন (!) সন্তানগুলো সীমান্তে জীবন দিচ্ছে - এর প্রতিকারের জন্য কার্যকর কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না দেশের সংখ্যাগরিষ্ট ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্টিং মিডিয়া। সীমান্তের লাখ লাখ স্বাধীন বাংলাদেশীরা মূলত ভারতের হাতে পরাধীন। হিউমান রাইটচ ওয়াচের মতে গত ১০ বছরে বিএসএফ সীমান্তে ৯০০ বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে (গতকালের পত্রিকা দেখুন)। এই গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যানটি দেশের অধিকাংশ দেশপ্রেমিক ও নিরপেক্ষে (!) মিডিয়াতে মূল খবর হিসেবে আসেনি।
আমাদের বর্তমান সরকার অতিরিক্ত ভারতপন্হী ও ভারতনির্ভর হওয়ায় পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত দূর্বল। প্রথম প্রথম সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী-এমপিরা ট্রানজিট ও ট্রান্শিপমেন্টের মাধ্যমে দেশের জন্য কোটি কোটি টাকার রেভেনিউ অর্জনের ফাঁকা বুলি আওড়ালেও সম্প্রতি শুল্ক ছাড়ায় ভারতকে নৌ ট্রানজিট দেয়ার একটি মহড়া দেখেছি।
গতকাল বিকাল ৫টার পরে ভারত কর্তৃক পাদুয়া দখলের খবর ঘটনার ২০ ঘন্টারও বেশি পরে দেশপ্রেমিক মিডিয়ার পাতায় দেখা যায় না। বিদেশে থাকায় জানিনা দেশের জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলো এই ঘটনা কিভাবে প্রচার করছে।
এর উপর পাঠকদের সুচিন্তিত মতামত আশা করছি।