সস্তা আবেগ ছেড়ে আসুন শ্রমিকদের প্রাপ্য মর্যাদা দিতে শিখি
আসুন নিম্নোলিখিত কাজগুলো মন না চাইলেও করতে থাকি-
১) শ্রমিক কে আপন ভাই মনে করি, কারন প্রত্যেক মুসলমান ভাই ভাই।
২) শ্রমিক ভদ্রলোকটিকে সেই মানের খাবার ই খেতে দেই যেটা আমি খাচ্ছি।
৩) সুনির্দিষ্ট সময়ের ভিত্তিতে ভাড়া/পারিশ্রমিক মিটিয়ে নিই এবং কাজ শেষে তার গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই(অর্থাৎ খুব তাড়াতাড়ি)তার প্রাপ্য তাকে দিয়ে দিই। এ ব্যাপারে টালবাহানা করা জুলুম, আর মজলুমের দোয়া থেকে বাঁচা বুদ্ধিমানের কাজ, কেননা সে বদদোয়া করা মাত্রই কবুল হয়।(যেমন রিক্সা ভাড়া রিক্সায় ওঠার আগেই মিটিয়ে নিন নচেৎ পরে সে যা চাইবে তাই দিতে হবে নচেৎ সেটা জুলুম বলে বিবেচিত হবে)
৪) সমাজের গরিব শ্রেণীর লোকদের কে ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নেই, কেননা শৃঙ্খলার স্বার্থেই আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে মালিক ও শ্রমিক শ্রেণী সৃষ্টি করেন এবং এই নিয়ম কেয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে। কাজেই যারা এই শ্রেনীকরণ মানতে চান না আমি বলব যত দ্রুত সম্ভব মার্ক্সীয় শ্রেণী বিলোপের আজব ও অসম্ভব মতবাদ ত্যাগ করে মুসলমান হয়ে যান এবং শ্রমিকদের প্রাপ্য হক দিয়ে দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৫) আসুন অহঙ্কার ত্যাগ করি, জান্নাতের পথ ধরি, শ্রমিক মজদুর রিক্সাওয়ালা ফকীর নির্বিশেষে সবাইকে আগে সালাম দিই। মার্ক্সীয় অর্থনৈতিক সাম্য অসম্ভব ও অবাস্তব হলেও ইসলামের মানসিকতা ও মানবিকতার সাম্য সম্ভব, আর ইতিহাস তার বাস্তবতার সাক্ষী।
৬) আপনি যদি আল্লাহর হুকুম মত চলনেওয়ালা ধনী হন তবে আপনার সমতুল্য একজন আল্লাহর হুকুম মত চলনেওয়ালা গরীব আপনার চেয়ে ৫০০ বছর আগেই জান্নাতে চলে যাবে। কাজেই তাদের সাথে সুসম্পর্ক রাখা বুদ্ধিমানের কাজ।
৭) আপনার শ্রমিক, কর্মচারি,রিক্সাওয়ালাকে নামাযের সুযোগ দিন; নচেৎ আপনি পুরা বিশ্বের মালিক আল্লাহর প্রতিপক্ষ হওয়ার জন্য তৈরি থাকুন।
৮) আপনার নিয়োজিত শ্রমিক কে আল্লাহর ভয়ে সৎ থাকার হুকুম করুন। কেননা আপনার উপর যেমন তার অধিকার আছে, আপনারও তার উপর অধিকার আছে,শ্রমিক সৎ ও আল্লাহভিরু না হলে স্বভাবতই সে আপনার কাজে ফাঁকি দিবে।
৯) শ্রমিককে আপনার কাজে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ দিবেন না এবং নামায,খাওয়া ও বিশ্রামের সময়ের ভিতর ও আপনি কোনরুপ কমতি করবেন না। ‘চুক্তিকৃ্ত পূর্ণ সময় নিষ্ঠার সাথে কাজ করা’- আপনার প্রতি শ্রমিকের দায়িত্ব, এটা তাকে ভাল ভাবে বুঝান।
১০) সর্বোপরি আমাদের মনে রাখতে হবে যে, মানুষের হক নষ্ট করা হলে সেটা কিন্তু আল্লাহ মাফ করবেন না, যতক্ষণ না মজলুম ব্যক্তির নিকট হতে তা মাফ করিয়ে নেওয়া না হয়।
আসুন বদলে যাই, বদলে দিই
বি দ্রঃ মালিক শ্রমিক সম্পর্ক ও অধিকার বিষয়ে জানার জন্য ভাল কোন আলেমের লেখা বই পড়া উচিৎ, ‘আহকামে যিন্দেগী’ ৩য় সংস্করণ ৪৩৭-৪৩৯ পৃষ্ঠায় এব্যপারে সংক্ষিপ্ত হলেও মুল্যবান কিছু নির্দেশনা আছে, দেখে নেওয়া যেতে পারে।