somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একান্তই ব্যক্তি আলাপচারিতা

২৫ শে মার্চ, ২০১১ বিকাল ৪:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সরদার ফজলুল করিম স্যার কর্তৃক এক সাংবাদিককে দেয়া পরামর্শকে অবশ্য পালনীয় মনে করে আনিসুল হকের লেখা ‌‍মা উপন্যাস পড়ি প্রথমবারের মতো। আমি এটা করেছি এ জন্য যে আমি বিশ্বাস করি এই জ্ঞানতাপস আনিসুল হকের বইয়ের কাটতি বাড়ানো বা আনিসুল হকের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর তাগিদে সাংবাদিক ভাই (?)কে এ পরামর্শ দেননি, তিনি এটাকে উচিত মনে করেছেন বলেই তা বলেছেন।

উপন্যাসের একেবারে শুরুর দিককার কয়েকটা লাইন (...আজাদের মাকে দাফন করা হবে একটু পরেই। আজ ৩১শে আগস্ট। ১৯৮৫ সাল। গতকাল, ৩০শে আগস্ট, আজাদের মা মারা গেছেন। পাকিস্তানী সৈন্যদের হাতে আজাদের ধরা পড়ার ঠিক ১৪ বছরের মাথায়, একই দিনে, তিনি মারা গেলেন। এটা শহরের অনেক মুক্তিযোদ্ধারই জানা যে, এই ১৪টা বছর আজাদের মা একটা দানা ভাতও মুখে দেন নাই, কেবল একবেলা রুটি খেয়ে থেকেছেন; কারণ তাঁর একমাত্র ছেলে আজাদ তাঁর কাছে ১৪ বছর আগে একদিন ভাত খেতে চেয়েছিল; পরদিন তিনি ভাত নিয়ে গিয়েছিলেন রমনা থানায়, কিন্তু ছেলের দেখা পান নাই। অপেক্ষা করেছেন ১৪টা বছর, ছেলে আর ফিরে আসে নাই। অপেক্ষার এই ১৪টা বছর তিনি কোনোদিন বিছানায় শোন নাই, শানের মেঝেতে শুয়েছেন, কী শীত কী গ্রীষ্ম, তাঁর ছিল একটাই পাষাণশয্যা, কারণ তাঁর ছেলে আজাদ শোবার জন্যে রমনা কি তেজগাঁ থানারয়, কি তেজগাঁ ড্রাম ফ্যাক্টরি সংলগ্ন এমপি হোস্টেলের মিলিটারি টর্চার সেলে বিছানা পান নাই।)পড়ার পর আমার মনে হয়েছিল (অন্ত:পক্ষে) বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরের প্রতিটি সন্তানের জন্য এই বই পড়াবার কর্তব্য তার শরীরের অস্থি-মজ্জার উপস্থিতির মতোই বড়ো জ্বলজ্বলে।

অন্তরাত্মার যে গভীর জায়গা থেকে সন্তানের জন্য মায়ের এই মমতা সেই গভীরের কোনো আভাস তাঁর সন্তান বুঝতে পারুক বা না পারুক মা তাঁর সন্তানকে মমতা দিতেই থাকেন, ভালোবাসতেই থাকেন। বিশ্ব-সংসারের তাবত রত্নভান্ডার একসাথে জড়ো করলেও এ মমতার, এ ভালোবাসার বিনিময়মূল্য দাড় করানো সম্ভব নয়।

এ মা যখন দেশের জন্য তাঁর সন্তানকে কোরবানী দেয়ার কথা ঘোষণা দেন তখন কারোরই বুঝতে বাকি থাকার কথা নয় যে মা শুধুমাত্র দেশের বেলাতেই তাঁর সন্তানের সকল দায়-দায়িত্ব তুলে নিলেন, তুলে নেন। অন্য কোনো জায়গাতেই তাঁর আস্থা নেই।

যে যুদ্ধে মা বুকে পাথর বাঁধলেন (আমার দেশে) সেই যুদ্ধ হয়েছিল ১৯৭১এ, স্বাধীনতার যুদ্ধ। এবং আজকে সেই দিন যে দিনটি ছিলো যুদ্ধ শুরুর দ্বারপ্রান্তে।

কি আশা, কি ভরসায় মা বুকে পাথর বেঁধেছিলেন? কি আশায় সন্তান চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে জেনেও যুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন তা জানবার দায়ভার তাঁর ঐ সন্তানের না যিনি যুদ্ধে গেলেন, মায়ের বুকে মাথা রেখে শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়বার লোভ সংবরণ করলেন; সকল দায়ভার এ সন্তানের/সন্তানদের যারা এখন মায়ের সকল আদর-ভালোবাসা-মমতা (নির্লিপ্ত হয়ে) ভোগ করছি।

আজ, এখন আমরা চিন্তা করে দেখি আমি/আমরা মায়ের কোন সন্তান/সন্তানসকল। আমাদের বসবাস দায়হীন পৃথিবীতে নাকি প্রতিটি দায় এর সাথে অঙ্গাঅঙ্গি হয়ে!!!
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×