somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুলিশের এ বর্বরতা বন্ধ না হলে রাষ্ট্রের এ বাহিনীর বিরুদ্ধে একদিন জেগে ওঠবে জনতা

০৩ রা জুলাই, ২০১১ বিকাল ৪:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একজন সীমা চৌধুরী
নিরাপদে মারা যায়

চট্টগ্রামের রাউজান থানার বাসিন্দা সীমা চৌধুরী। ডেটলাইন ১৯৯৬
সালের ৯ অক্টোবর। মধ্যরাতে চার পুলিশ সদস্য সীমাকে তার
নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যায়। জেলখানার নিরাপদ হেফাজতে ১৯৯৭ সালের
১৭ ফেব্রুয়ারি সীমা মারা যায়। কি বিচিত্র দেশ!সীমা ধর্ষণ ঘটনার একটি মামলা হলেও আইনের ফাঁক ফোঁকরে বিনা তদন্তে সব আসামি খালাস পায়। রায়ের ওপর
ভিত্তি করে আলামত গোপন ও সঠিক তদন্ত না করায় অ্যাডভোকেট এলিনা খান তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ জুন ২০০২ সালে এই মামলার তিন
নম্বর আসামি রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের নাম তালিকা থেকে প্রত্যাহারের আদেশ দেন স্পেশাল জজ আদালত। আমাদের বোন সীমা আজও তার বিচার পায়নি। সীমা হত্যার বিচার কবে করবে রাষ্ট্র? রাষ্ট্র কি সীমার আর্তনাদ শুনতে পারছে না।
ইয়াসমিন; আমাদের ক্ষমা করিস বোন
সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য তৈরি হয়েছে পুলিশ ফোর্স। সেই পুলিশের হেফাজতেই নিরাপদ থাকেনি ইয়াসমিন। ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট। ঢাকা থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশে রওয়ানা দেয় মেয়েটি। দশমাইল নামক স্থানে নেমে একটা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল ইয়াসমিন। ভোর রাতের নীরব পথ-ঘাট। এমন সময় একটা পুলিশ জিপ এসে ইয়াসমিনকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে জিপে তুলে নেয়। জিপে থাকা তিন পুলিশসদস্য উপর্যুপরি ধর্ষণ করে চলন্ত গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ইয়াসমিনকে! মৃত ইয়াসমিনকে দেখতে পান ভোরে নামাজ পড়তে আসা কিছু মুসল্লি। যে দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিল ইয়াসমিন, সেই দোকানদার সাক্ষী দেন পুলিশের বিরুদ্ধে। কিন্তু নিশ্চুপ থাকে পুলিশ বিভাগ। মরে গিয়ে ইয়াসমিনের সান্তনা এটুকুই যে ইয়াসমিনকে তার মা-বাবা ফিরে না পেলেও ওই তিন দানবের যে মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। এটাই সান্ত্বনা!

ধর্ষণ শব্দটি বুঝার আগেই ধর্ষিত আমার বোন তানিয়া


চঞ্চল ও দুরন্ত ছয় বছরের শিশু তানিয়া ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট প্রাঙ্গণে খেলছিল সাথী শিপনের সঙ্গে। টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন দেখা দিলে একজন অপরিচিত ব্যক্তির কাছে সে জানতে চায় টয়লেট কোথায়। ওই ব্যক্তি টয়লেট দেখানোর নামে তাকে কোলে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ কনট্রোল রুমের বাথরুমে। সেখানে সে পুলিশসহ তানিয়াকে ধর্ষণ করে। প্রচণ্ড যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠলে তানিয়ার গলা চেপে ধরে এবং শেষে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যায় তাকে। ধর্ষণ শব্দটা বোঝার আগেই ধর্ষিত তানিয়া ঘটনার বর্ণনা দেয় এভাবে_'কোলে তুলে দোতলায় পুলিশের রুমে নিয়ে যায় এবং পেটের ওপর উঠে ব্যথা দেয়।' ধিক এ অসভ্য মানুষগুলোকে। তানিয়ার কথাগুলো আজও কানে বেজে ওঠে। চোখের কোণে জমাট বেধে যায়। আহ তানিয়া!
বছর কয়েক আগে হরতালে মনি বেগম নামে এক মহিলার কথা মনে আছে নিশ্চয় সবার। রাজপথে সবার সামনে এ নারীর কাপড় খুলে ফেলে লম্পট কিছু পুলিশ। নারীর ওপর পুলিশের বর্বরতা এখনও চলছে।

আজকের হরতালেও পুলিশ আগের পরিচয়ে হাজির হয়েছে। নারীদের ওপর অসভ্য শারিরীক নির্যাতন করেছে এ বাহিনী। এভাবে চলতে থাকলে রাষ্ট্রের এই পুলিশ নামক বাহিনীর বিরুদ্ধে একদিন জেগে ওঠবে জনতা। সে দিন বেশি দূরে নয়। সাধু সাবধান!
২৭টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×