বহুকাল আগে লিওনার্দো দা ভিঞ্চি নামক এক শিল্পী একেঁছিলেন “মোনালিসা” নামের এক রমণীর মাথা থেকে কোমর অবধি এক তেলরঙা চিত্র। ফ্লোরেন্সের সকল রহস্য যেনো উৎসারিত হয়েছিলো মোনালিসার ভুবনভোলানো হাসিতে। পাঁচশো বছর পেরিয়ে গেছে, আজো সেই হাসির রহস্য হানা দেয় সৌন্দর্য্যপিয়াসী মানসরাজ্যে। সমস্ত ক্যানভাসের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে মোনালিসার অধর, যেমন অভিযাত্রীর হাতের নকশায় কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে গুপ্তধন।
কলিকালে...... কামবায়গ্রস্ত ভিঞ্চি'দের যান্ত্রিক তুলির আঁচড়ে মোনালিসা’রা ক্যানভাসে নয়, কুটিল হাসিতে ধরা দেয় আমাদের খবরের কাগজে কিংবা মোড়ের রাস্তার ঢাউস বিলবোর্ডে। আর মোনালিসার হাসিতে নয়, শিল্পীর তুলি তাঁর সমস্ত শিল্পরস যেনো ঢেলে দেন কলিকালের মোনালিসাদের ললন্তিকার শেষাংশে। আমরাও আমাদের তীক্ষ্ম দূরদৃষ্টি দিয়ে সেই রস আস্বাদন করে নিই, তৃপ্ত হই।
আজ আমাদের বিশালবঁপু বুঁর্জোয়াদের খাবারের প্লেটে আকর্ষণীয় আইটেম হিসেবে ধরা দেয় ভারী সঙে সজ্জিত মোনালিসারা। স্বল্প জীবনবোধসম্পন্ন অথবা জীবনরস প্রায় শেষ হয়ে যাওয়া অক্ষম এসব বুঁর্জোয়ারা যখন তাঁদের পেট পুরে যায় কিংবা অরুচিতে গা গুলিয়ে উঠে তাঁদের, তখন উচ্ছিষ্টের মত ছুঁড়ে ফেলে দেয় মোনালিসাদের। তারপরও মোনালিসারা মুখে কৃত্রিম হাসি নিয়ে ধরা দেয় নতুন কোনো খাবারের রেসিপিতে।
কথায় বলে, “দর্শনেই অর্ধভোজন”।
অর্ধভোজনে কেঊ তৃপ্ত, আর আমরা কেউবা তৃপ্ত হতে পারিনা। তাই বিপ্লবের আগুন ছড়িয়ে যায় আমাদের সমস্ত শরীরজুড়ে। গলগলিয়ে নেমে আসে লাভা। আমরা হাতে তুলে নিই রাইফেল। বহুদিনের অব্যবহারে রাইফেলের ট্রিগারে মরিচা ধরে, বারকয়েক ঘষা দিয়ে আমরা সেই ট্রিগারের জং ছুটাই। আর তক্ষুনি আমাদের রাইফেল থেকে বিপ্লবের শেল ছুটে, একদলা বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে আমাদের রাজপথে।
তারপর......
আমরা বিপ্লবে সাময়িক ক্ষান্তি দিই। আর ছুটে চলি নতুন কোনো মোনালিসার দর্শনে, অর্ধভোজনে অথবা বিপ্লবের নেশায়।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৩৩