একবার চিন্তা করুন তো, আপনি একটিমাত্র বইতেই পেয়ে যাচ্ছেন নির্বাচন সংক্রান্ত বিস্তারিত ধারণা ও যাবতীয় তথ্য। ব্যাপারটা নিশ্চয়ই ভাবতেই খুব ভাল লাগছে, তাই না? এখন আপনি জানতে চাচ্ছেন, এমন কোনো বই কি বাংলা ভাষায় লেখা হয়েছে? হ্যাঁ, হয়েছে। আমাদের জন্য এমন একটি অসাধারণ বই উপহার দিয়েছেন লেখক নেসার আমিন। বইয়ের নাম দিয়েছেন ‘বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ও ফলাফল (১৯২০-২০১৬)’।
আপনি আমার সাথে একমত হবেন যে, আমরা যখন কারো কাছ কোনো তথ্য নেই, তখন তার পরিচয় জানতে চাই। একইসঙ্গে জানতে চাই যে বিষয়ে লিখেছেন তিনি কি ঐ কাজের সাথে যুক্ত? এক্ষেত্রে উৎরে গেছেন বইটির লেখক নেসার আমিন। নির্বাচনী তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে এমন সংগঠন ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক’-এর সহযোগী সমন্বয়কারী হিসেবে লেখক বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের নির্বাচন ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করছেন। আপনি হয়তো বলবেন, বুঝলাম তিনি আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে লিখেছেন, তিনি কি বিশ্বের অন্যান্য দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশন নিয়ে লিখেছেন? হ্যাঁ, লিখেছেন।
নিশ্চয়ই আরও প্রশ্ন করবেন, নির্বাচনী ব্যবস্থা ছাড়া লেখক এই বইতে আর কোন কোন বিষয়ে আলোচনা করেছেন? এক্ষেত্রেও এক প্রতিভা দেখিয়েছেন লেখক। লেখক তার বইতে সেই ১৯২০ সাল থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচন পর্যন্ত সকল নির্বাচনের ফলাফল তুলে ধরেছেন এবং বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছেন। আরেকটু ব্যাখ্যা করে বললে-- বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের (সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ) বিস্তারিত ফলাফল লেখক তুলে এনেছেন উক্ত বইতে।
ও আচ্ছা, তাহলে তো এটি একটি অসাধারণ বই হয়েছে। লেখক বইতে আর কিছু কি লিখেছেন? হ্যাঁ, এখানেই শেষ নয়, বইয়ের পরিপূর্ণতা দেয়ার জন্য তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের ইতিহাস ও পরিচিতি, নির্বাচনী আইন এবং রাষ্ট্র আকারে বাংলাদেশের একটি সার্বিক চিত্র তুলে ধরেছেন বইতে।
বইটির প্রশংসা করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বইয়ের মুখবন্ধে লিখেছেন, ‘সংসদ নির্বাচন ছাড়াও বিগত ৪৫ বছরে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিভিন্ন স্থানীয় সরকারের নির্বাচন। আমি মনে করি, ভবিষ্যতে তুলনামূলক বিশ্লেষণ এবং গবেষণার জন্য এসব নির্বাচনের ফলাফল সংরক্ষণ প্রয়োজন। আমি জেনে আনন্দিত হয়েছি যে, আমার স্নেহের সহকর্মী তরুণ লেখক নেসার আমিন... এই বিরাট কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করেছে। এই অসাধারণ কাজটির জন্য তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। তাকে বিশেষভাবে অভিনন্দন, কারণ জাতি হিসেবে সে আমাদের একটি বড় দুর্নাম ঘুচিয়েছে। বাঙালিদের একটি বড় দুর্নাম হলো যে, আমরা কোনো তথ্য সংগ্রহ ও রক্ষণাবেক্ষণ করি না, যা নেসার ভুল প্রমাণিত করেছে।... সংকলিত এই বইয়ে নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি।’
আর বইয়ের লেখক নেসার আমিন মনে করেন, বইটি একদিকে যেমন আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা দেবে, অন্যদিকে নির্বাচনী ফলাফলগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেফারেন্স বই হিসেবেও এর পরিগণিত হতে পারে।
বক্তব্য কি একটু দীর্ঘ হয়ে গেলো? না না, ঠিক আছে। এমন একটি বই সম্পর্কে জানান দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার বর্ণনা মতে, এটি তো বাংলাদেশের একপ্রস্থ নির্বাচনী কোষ’। বইটি সংগ্রহ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এখন বলনু, বইটি কীভাবে সংগ্রহ করবো? বলছি শুনুন, বইটি পাওয়া যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলায়, প্রান্ত প্রকাশনের স্টলে (স্টল নং: ৩৪০-৩৪১)।
ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
-----------------------------------------
‘বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ও ফলাফল (১৯২০-২০১৬)’
লেখক: নেসার আমিন
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৩৪৫ (এ ফোর কাগজে)।
প্রচ্ছদ: অরুপ মান্দী
মূল্য: ৬৫০ টাকা।
প্রকাশ করেছে: প্রান্ত প্রকাশন।
ফেসবুক পেজ: http://www.facebook.com/election.bd
লেখকের ফেসবুক আইডি: https://www.facebook.com/nasar.du