somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বদলে যাওয়ার গল্প।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বদলে যাওয়ার গল্প।

১.
আমার বাবা প্রতিদিন সকালে অফিসে যাওয়ার সময় দেখেন আমি ঘুমাচ্ছি, ফিরে এসেও দেখেন একই ভাবে ঘুমাচ্ছি। তাই উনার ধারনা আমি সারা দিনই ঘুমাই। মাঝখানে যে আমি ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস, টিউশানি, আড্ডা সব দিয়ে এসে স্বান্ধ ঘুম দিচ্ছি এটা উনাকে দেখানো যায় না। আামার উদ্দেশ্যে তাই উনার একটাই বাক্য ব্যায় হয়- ‘হু! নবাব আলীবর্দি খাঁ, ঘুমায়।’ অথচ আমি জানি নবাব বাদশাহরা রাজ্য দখলের ভয়ে ঘুমাতো কম, প্রাসাদের মধ্যে কিলাকিলি করতো বেশি। আর আমি স্বান্ধ ঘুম সেরে রাতে আবার যখন উঠি বাবা ততক্ষণে ঘুমিয়ে পড়েন। তাই সাপ্তাহীক ছুটির দিন ছাড়া পিতৃদেবের সাথে আমার খুব একটা দেখা হয়না।

এমনি একদিন ছুটির দিনে ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলাতে কচলাতে ড্রয়িঙরুমে গিয়ে দেখি কিছু গেষ্ট বসে আছেন। আমাকে দেখেই তাদের আগে আমার বাবাই বলে উঠলেন- ‘বাহ্ ছেলেটাতো বেশ বড় হয়ে গেছে দেখি!’
মেহমানরাতো অবাক! – ‘ভাই কার ছেলে ও?’
‘-কেন আমার।’ সবার কপালের ভাজ দূর করতে উনি ব্যাখ্যা করলেন- ‘আসলে ওকে আমি দাঁড়ানো অবস্থায় দেখিনাতো, সব সময়েই দেখি বিছানায় শোয়া। তাই ও কতটুক বড় হয়েছে কেউ জিজ্ঞেস করলে বুজানোর জন্যে আমাকে এই ভাবে হাত দেখাতে হয়।’ বলে বাবা হাত দুটো কাঁঠাল মাপার মত করে দুদিকে প্রসারিত করে দেখালেন। মেহমানদের সালাম আদাপ দিয়ে কেমন আছেন জিজ্ঞেস করছি এমন সময় বাবা আবার খেকিয়ে উঠলেন- ‘তোমার মুখের ভাষাটাতো আর শুদ্ধ হলোনা দেখি। স্কুল কলেজের সবাই তোমার চাঁদনি-ভাষাটা বুজে?’ আমার ভাষায় একটু নোয়াখালির আঞ্চলিক টান আছে সত্যি, মায়ের বাড়ি নোয়াখালি বলে। তাই এটা নিয়ে খোঁচাতেই বাবা সবচেয়ে বেশি মজা পান চাঁদনি ভাষা মানে চান্দের দেশের ভাষা বলে। এক ঢিলে দুই পাখি, আমার সাথে সাথে মা এবং পুর শ্বশুরকূলকে একটা কিছু দেয়া গেল তাই। আর তখন সামনে বসা মেহমানরাও ছিলেন মূলত মায়ের কাজিন মানে আমার লতায় পাতায় মামা মামী। তাই বাবা কথাটা বলে আরাম পেলেন বেশি।

মা ডেকে বললেন বাজারে যেতে। মেহমানদের জন্যে সাথে বাসায় ফ্রিজে রাখতে মুরগী আনতে। বাবা বলে দিলেন – ‘চামড়া ছিলে মুরগী আনবে, বুজেছো।
পাশ থেকে মা বললেন- ‘ওতো চামড়া খেতেই বেশি পছন্দ করে।’
‘- বুজলাম না একটা ছেলের সব গুলো পছন্দই আজেবাজে হয় কি করে! ফার্মের মুরগীর চামড়া হলো তার খোসা বা প্যাকেট, রাজ্যের ময়লায় ভরা। সেটা আবার খায় কিভাবে!’ বাবার এই কথায় ছোট বোন রাখীটা সায় দিলো – ‘বাবা, আমারতো শুনেই বমি চলে আসছে। ওয়াক!’ বলে সে বমি করার জন্যে বাথ রুমে ঢুকে গেলো। কলেজে পড়া মেয়েগুলা কেন যেন ঢঙের খনি হয়! রাখীর বান্ধবী আছে কতগুলা রিনিঝিনি না কি যেন নাম, একই রকম ঢঙের ডিব্বা। আমাকে দেখলেই নাক সিঁটকায় লর্ড-কর্ণওয়ালিস বলে। তাড়াহুড়া করে বেরুতে গিয়ে ‍এক দিন আমার মুজার ভেতরে প্যান্টের নিচটা ঢুকে রয়ে গিয়েছিলো। সেটা দেখে তাদের নাকি আমাকে মধ্যযুগের ব্রিটিশ সেনাদের মত লাগছিলো। ফাজিলের আখড়া।

অগত্যা বাসায় ছয়টা চামড়া ছিলা মুরগী নিয়েই ঢুকলাম। মা মুরগী গুলো হাতে নিয়ে বললেন- ‘দুটা মুরগীতো মরা, বাবা।’ অবাক আমি, চামড়া ছিলার পরতো ছয়টা মুরগীই মরা! বললাম – ‘মা, দুটা কেন, সবইতো মরা! জবাই করে আনছি না!’
মা বললেন- ‘গাধা ছেলে! ধরে দেখ। দুটার শরীর ঠান্ডা, বাকি গুলো গরম। তোরে আগের মরে যাওয়া মুরগী চামড়া ছিলে দিয়ে দিছে।’
বাবা বললেন – ‘হয়েছে, বুজছি। আমি না যাওয়ার পেনাল্টি। এখন তাড়াতাড়ি জুমা পড়তে আসো, আমি মেহমানদের নিয়ে গেলাম।’ তাড়াতাড়ি করে ছোট ভাইটাকে নিয়ে আমিও গেলাম জায়নামাজ নিয়ে।
ছোট ভাই রাকিবটা বললো- ‘ভাইয়া জায়নামাজের দরকার কি মসজিদে?’
‘- কখনো জীবনে ভিত্রে জায়গা পাইছোস? রাস্তায় খাড়াই নামাজ ফড়তে জায়নামাজ লাগবোনা!’
‘-কিন্তু তুমি তো হারাই ফেল…’
‘-চুপ থাক। হারামু ক্যান, তুই আছস কিত্তে?’
নামাজের সালাম ফিরাই আবিষ্কার করলাম আমি রাস্তার দুই পাশে ফকিরের দল নিয়ে মাঝখানে নামাজ পড়ছি। কারো নজরে পড়ার আগেই চলে আসতে গিয়ে দেখলাম আমার আর ছোট ভাইয়ের স্যান্ডেল চুরি হয়ে গেছে। নিশ্চয়ই আশপাশের ফকির গুলার কাম। দুয়েকটা সন্দেহজনক চেহারা দেখে চেক করতে গেলাম। তারা ঝাঁঝের সাথে বললো- ‘ভাইজান, আমরা গরীব হতে পারি, কিন্তু চোর না।
‘- আমাদের ইজ্জ্বত আছে।’
‘-গরীবের ইজ্জ্বতই সব।’ তাদের ভালোই মিলমিশ দেখলাম। আর এই ফাঁকে আমাদের জায়নামাজটাও হাওয়া হয়ে গেলো। তাদের ইজ্জ্বতে আর হাত না দিয়ে ছোট ভাইটাকে ঝাঁড়ি দিতে দিতে বাসায় ফিরলাম।
দরজা খুলে আমাদের দুজনের খালি পা দেখে রাখী যা বুজার বুজে ফেললো। নিজের ছেড়া এক জোড়া স্যান্ডেল দেখিয়ে বললো – ‘পরের বার এইগুলা নিয়ে যাবি। বুজলি।’
অপমানটা গায়ে না মেখে উদাস গলায় বললাম ‘-খালি পা ই ভালো, মাটির স্বাদ পাওয়া যায়।’
এভাবে প্রতিটা ছুটির দিন যায় আমার বিব্রত হতে হতে।

সেদিন রাতে খেতে বসে ক্যাম্পাস থেকে বান্দরবানে ক্যাওকাড়াডঙ জয় করতে যাওয়ার টাকা চাইতেই বাবার চোখ জোড়া সরু হয়ে গেলো। বললেন- ‘তুমিতো ঠিক মতো হাঁটাই শিখনি এখনো, পাহাড়ে উঠবা ক্যামনে। তোমার টিম যাবে একদিকে, আর তুমি যাবে আরেক দিকে। পরে কিডন্যাপ টিডন্যাপ হয়ে দৌড়াদোড়ি লাগাবে সবার।’
রাখী ফোড়ন কাটলো- ‘বাবা, সমস্যা নাই। কিডন্যাপাররা বিরক্ত হয়ে ওকে আবার স্ব-সম্মানে ওগলাই দিয়ে যাবে।’
বাবা বললেন- ‘টেবিলের উপর উঠে ঘরের সব গুলো ফ্যান মুছে দেখাও যে তুমি ব্যালান্স রাখতে পার। তার পর দেখা যাবে।’
কাজটা করতে গিয়ে চেয়ার ফসকে পা মচকে গেলো। এবার বাঁকা একটা হাঁসি দিয়ে নতুন শর্ত দেয়া হলো – ‘প্রতি সকালে অন্তত এক ঘন্টা পাশের উদ্যানে দৌড়ে দেখাতে হবে। দৌড় শেষে আমার সামনে এসে দশটা পুশ-আপ দিয়ে পাশ নাম্বার নিয়ে ঘরে ঢুকবা। ঠিকাছে?’ ঠিকাছে বলে নতুন মিশনে যোগ দিলাম।

পরদিনই বাসার সবাই মিলে আমাকে জোর করে বিছানা থেকে টেনে তুলে, বাসার বাইরে ঠেলে দেয় ব্যায়াম করতে যাওয়ার জন্যে। মূলত ঘটনাটা ঘটেও সেই দিনই। দৃশ্যত সাদামাটা সেই ঘটনাটাই এই লিখার মূল ঘটনা।

ভোরে ঘুম কাতুরে চোখ দুটা মেলে অবাক হলাম। দেখি উদ্যান ভর্তি মানুষ জটলা পাকিয়ে পাকিয়ে ব্যায়াম করছে একেক জন ব্যায়াম গুরুর তত্ত্বাবধায়নে। আজব! এরা সবাই কি বান্দরবন যাবে নাকি!

আমিও একটা বড় সড় দলে ভিড়ে গেলাম। বিচিত্র সব ব্যায়ামের ভঙ্গী। শরীরের প্রত্যোটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গের আলাদা আলাদা ব্যায়াম করাচ্ছে। হাত-পায়ের ব্যায়াম, হাঁটুর ব্যায়াম, মাজার ব্যায়াম, চোখ ঘুরিয়ে চোখের ব্যায়াম। পুর শরীর দুমড়িয়ে মুচড়িয়ে টনটনে চনমনে করে দিলো। সব শেষে ট্রেইনার বললো- ‘এইবার আমরা মনের ব্যায়াম করবো। মানে হৃদয়ের ব্যায়াম।’
হৃদয় বলার সাথে সাথেই খেয়াল হলো চারপাশে অনেক হৃদয়বান মেয়েও আছে। নিজের হৃদয়টা হঠাৎ’ই জোরে রক্তপাম্প করে সজাগ করে দিলো আমাকে হৃদয়ের ব্যায়াম কি বুজার জন্যে।

কিন্তু গুরুজি হৃদয়ের ব্যয়াম বলেই হো হো হা হা করে বিকট হাসা শুরু করলো। সাথে সাথে আশপাশের মোটকু শুটকু সবাই’ই বিকট শব্দে হেলেদুলে হাসতে লাগলো। এটাই নাকি হৃদয়ের ব্যায়াম! এত্ত্ব নকল হাসির মাঝে পড়ে আমার সত্যি সত্যি হাসি চলে এলো। হঠাৎই একটা হাসির শব্দ কানে বেশ মধু ঢালতে লাগলো। নকল না, সত্যিকারের হাসি। আমি বেকুবের মত চারদিকে তাকাচ্ছিলাম। চকিত চোখে পরলো হাসির উৎস। টানা চোখ, ফর্সা মুখ, লম্বাটে গড়নের এক মেয়ে, নকল হাসির ভিড়ে আমার মতই সত্যিকারের হাসি হাসছে। তার লম্বা কালো চুল স্কার্ফের ফাঁকে কিছুটা বেরিয়ে এসেছে। মেয়েটাকে ইরানি মেয়েদের মত দেখাচ্ছে। চোখাচোখি হতে একটু ইতস্তত করে হাসি থামালো, পরক্ষনেই আবার হাসি শুরু করলো। শুনেছি ভোরে স্বর্গের জানালা খুলে দিয়ে স্বর্গীয় বাতাস আসে ভূ’লোকে, আমার মনে হলো দুয়েকটা দুষ্ট টাইপ পরীও জানালা টপকে পালিয়ে মর্তে ঘুরতে আসে এই সময়।

ব্যায়াম শেষ হতেই দেখি পায়ের ক্যাডসে স্কেট লাগিয়ে গড় গড় করে ইরানি মেয়েটা স্কেটিং করতে করতে চলে গেলো। সাথে আরো তিন চার জন মিলে স্কেটিঙ টিম। জটিল মেয়েতো!
বাসায় ফেরার পথে বিজয় স্মরণীর মোড়ে বামে তাকিয়ে গাড়ী খেয়াল করে করে রাস্তা পার হওয়ার সময় হঠাৎ মাঝ রাস্তায় কে যেন আমার ডান হাতের জামার আস্তিন ধরে আমার সাথেই রাস্তা পার হলো। ততক্ষনে রাস্তায় মোটামুটি গাড়ীগোড়া চলা শুরু হয়ে গেছে। এই পারে এসে ডানে তাকিয়ে দেখি সেই ইরানি। পায়ের স্কেট খুলে ডান হাতে ধরা। ওগুলো পরে রাস্তা পার হতে বোধ হয় ভয় পাচ্ছিলো

সাত সকালে আমার হাত ধরে একটা ইরানী নায়িকার রাস্তা পার হওয়াটা বেশ সচরাচর ঘটনা, ব্যাপারটা এমন বুজাতেই স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করলাম। আমার জামা ছেড়ে তার হাটা ধরার আগেই বললাম –‘ওই রকম করে হাসছিলেন যে, লোক জন কেমন করে তাকাচ্ছিল খেয়াল করেছেন?’
ইরানী এইবার আমার দিকে পূর্ণ দৃষ্টি দিলো আর যেন চিনতেও পারলো, বললো- ‘আমার দিকে কেউ’ই ‘কেমন’ করে তাকাচ্ছিলো না। শুধু আপনিই ….। আর নিজেওতো তাল ভেঙ্গে হাসতে ছিলেন।’
একটু বিব্রত হয়ে বললাম – ‘হঠাৎ সবাইকে ওরকম হেলে দুলে অকারন হাসতে দেখে…..”
- ‘আজকেই প্রথম আসছেন?’ হাটতে হাটতে জিজ্ঞেস করলো ইরানি।
- ‘হুঁ, ঘুম থেকে উঠতে পারিনা।’ ইতস্তত করে স্বীকার করলাম।
- ‘কষ্ট করে উঠে একবার চলে আসলেই দেখবেন নেশা ধরে গেছে। প্রতিদিনই চলে আসবেন তখন। বাসা কোথায় আপনার?’ বলতে বলতে মেয়েটা রাস্তার পাশের একটা ফাষ্টফুডের দোকানে ঢুকলো। বোকার মতো আমিও তার সাথে ঢুকে পড়ে জবাব দিলাম -‘এইতো এইখানেই, মনিপুরি পাড়া, আপনার?”
- ‘এদিকেই’। ভাবছিলাম এদিকেই কোন দিক সেটা যেতে যেতেই দেখা যাবে। কিন্তু ক্যাফে থেকে বেরিয়ে মেয়েটা বাসার দিকে গেলোনা তখন, বললো আমার ক্লাশ আছে।
সে কথা বলছিলো চমৎকার ভাবে গুছিয়ে, সারাক্ষনই হাসি মুখ। চারুকলায় ছবি আঁকার ক্লাশে যায় সে সকালে। কফি খেতে খেতে যট্টুক জানা গেলো তা হলো, ছবি আঁকার ক্লাশ থেকে সে যাবে জিমেট (GMAT) কোচিঙ এ। সে মূলত বায়োকেমেষ্ট্রিতে অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে আছে। আমি তখন বিবিএ ফাইনাল ইয়ার। কোন এক অদ্ভুত কারনে মেয়েটা দেখলাম দারুন স্বাবলিল, যেন অনেক দিন ধরে চিনে আমাকে।

ক্যাফে থেকে বেরিয়ে রিক্সায় উঠার সময় পাশ দিয়ে সাঁই করে একটা এ্যপাচি বাইক যেতে দেখে সে বললো – ‘আমার এই রকম বাইকে উড়তে ইচ্ছে করে, আপনি এমন করে বাইক উড়াতে পারেন’?
চালাতে পারেন না বলে মেয়েটা উড়াইতে পারেন বলছে কেন!
বললাম- ‘উড়াইতে তো পারিনা’। যদিও মনে মনে আমি তখন ইরানিকে নিয়ে বাইকে উড়ছি। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে যানবাহনের মধ্যে আমি শুধু সাইকেলটাই চালাতে পারি। সেটা শিখতেও তিন বার পায়ের চামড়া ছিলছে। মিথ্যা বলতে ইচ্ছা করছিলোনা প্রথম দিনেই।
‘- ও, পারেন না? পারলে অননেক মজা, ঠিক না?’ মেয়েটার মুখে সান্ত্বনার ভাষা।
মুচকি হেসে সায় দিলাম – ‘হু।’
ইরানি চলে যাওয়ার পর মনে হলো আরে তার নামটাইতো জানা হলো না। বুজতে পারলাম রোদ ঢল বৃষ্টি তুষার পাত যাই হোক প্রতি সকালেই আমি এই উদ্যানের লেকের পাড়ে ‘হু হা হা হি’ করে হৃদয়ের ব্যায়াম করতে আসবো। আর প্রতি দিনই ইরানিকে রাস্তা পার করে দিবো। আমি না থাকলে সে একা রাস্তা পার হবে কি করে?

২.
কিন্তু মেয়েটার অতি গুন আমার হৃদয়ে ঘুন ‍ধরাই ‍দিলো। বন্ধু সাকিবরে বললাম – ‘এক মেয়ে এত্ত কিছু পারে কেমনেরে! এত্ত পারফেক্ট মানুষ কেমনে হয়! সমস্যা মনে হয় একটাই, খালি কথা কয়। ভিমরুলের চাকের মত, টোকা মারলেই ভৌঁ ভৌঁ করতে থাকে।’
‘-হুঁ, ব্যাপারটা ছোঁয়াছে, তুইও ভন ভন করতেছস।’
‘- আরে সে ঠোঁট দুটা গোল গোল করে কেমন সুন্দর করে কথা কয়, ওমনে কইতে গেলেতো আমার চাপা ব্যাথা করে।’
‘- তুইও কোন কন্ঠশীলনে ভর্তি হয়ে যা। ইকুয়াল-ইকুয়াল, মানে সমানে সমান। লেভেল প্লেয়িঙ গ্রাউন্ড তৈরী কর।’
‘- ঠিক বলেছিস। এর কাছে যাওয়া আর কাছে থাকার জন্যেতো তার আগ্রহের ব্যপার গুলো আমার মধ্যেও থাকতে হবে।’
‘- হুম। না হলে প্রতি দিনই সে চেহারায় সান্ত্বনার ভাষা ফুটাই রাখবে আর ‘পারেন না!’ ’পারেন্ না!’ বলবে।’

ঐ দিনই এক জোড়া স্কেট নিয়ে এলাম। ভর্তি হয়ে গেলাম GMAT কোচিঙে। সাকিবের পরামর্শানুযায়ী সমানে সমান হতে হবে। রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লাম। বাসায় এত দিন ভোরে ব্যায়ামে না পাঠিয়ে বেশ বড় ক্ষতি করে দিয়েছে আমার এমন একটা ভাব করলাম। পরদিন নিজেই উঠে বেশ আমুদে মনে বেরিয়ে পড়লাম। কিন্তু আজব, মেয়েটা ঐদিন আসলো না। আমাকে প্রতিদিন আসতে বলে নিজেই আসলো না! উৎসাহ হারালাম না। কিন্তু মেয়েটা পরদিনও এলোনা। এর পরদিনও না। তার পর দিনও না।

শেষে বন্ধুবান্ধব সবাই মিলে একটা টিম বানালাম। কাজটার একটা অফিসিয়াল নামও দিলাম -“সার্চিঙ দ্যা পার্সিয়ান কুইন।”
রাখী শুনে বললো – ‘তোর টিমের কাজ কি মেয়েটাকে খোঁজা। খোঁজ, দ্যা সার্চ!’
বিরক্ত হলেও দেখালাম না। সবারই সাহায্য দরকার। বললাম- ‘তোর টিম বলছিস কেন? তুইও আছিস এই দলে। বল আমাদের টিম। তোর বান্ধবীনা কয়েকটা আছে রিনিঝিনি, ছবি টবি আঁকে। তাদের বলনা একটু খোঁজ খবর করতে।’
‘‘- আমার রিনিঝিনি নামে কোন বান্ধবী নাই। রিমঝিম নামে আছে, তার অনেক কাজ আছে তোর ঐ ‘হোয়াট ইজ লাভকে’ খুঁজে বের করা বাদেও।’’ বলে সে আমার রুম থেকে উঠে গেলো। যাওয়ার আগে থামড়া দিয়ে আমার হাত থেকে তার স্মার্ট ফোনটা স্মার্টলি নিয়ে শাষালো- ‘আমার মোবাইল নিয়ে গেম খেলবিনা। নিজেরটা তো চোরেরে দিয়ে আসছোস। আমার মনে হয় কি জানিস, এই শহরের প্রত্যেকটা পকেটমার ছিনতাইকারী তোরে চিনে ফেলছে সহজ শিকার হিসাবে। তারাও অপেক্ষা করতেছে তুই কখন নতুন মোবাইল কিনবি আর তারা সেটা চুরি করে নিবে।’

৩.
কোন এক অদৃশ্য শক্তি আমাকে প্রতি ভোরেই লেকের পাড়ে তাড়িয়ে নিয়ে যেতে লাগলো। আমার আশৈশব লালিত আলস্য ভেঙ্গে গেল। পড়াশোনা সহ সব কাজে আসলো অতিরিক্ত মনোযোগ। আসেপাশের সবাই আমার বিষ্ময়কর পরিবর্তনে টাশকিত। আমার ভেতরে কে যেন বলে যাচ্ছিলো নিনাদ, ‘যোগ্য হও’, ‘যোগ্য হয়ে উঠ’। কখনো যেন আর না শুনতে হয় ‘ওহ্! পারেন না!’। সব পারতে হবে, সব।

কিন্তু যার কাছে থাকার জন্যে আমার পরিশ্রম তাকে আর দেখতে পাচ্ছিনা। সকালে উঠার নেশা সেই ইরানী চেহারার মেয়েটা কোন ধুতরা বিচি খেয়ে কাটিয়ে ফেলেছে কে জানে। নাম, নাম্বার, ই-মেইল আই.ডি কিছুই জানিনা। চারু কলাতে গিয়ে বেশ কয়বার সকালে ঘুরে আসলাম। পাড়ায় পরিচিত সবার কাছেই জিজ্ঞেস করলাম কেউ বলতে পারলোনা। অন্য যারা স্কেটিঙ করে সকালে তারা তাকে শুধু আমার মতই পার্কেই দেখেছে বলে জানালো। তাহলে এই মেয়ে কোথায় হারিয়ে গেলো!

বন্ধুরা বললো একদিনের একটুখানি দেখার একটা মেয়ের জন্যে এত্ত হুরুস্তুল করার কি হল! কাউকে কিছু বুজানো গেলো না। সময় গড়াতে লাগলো। আমিও স্কেটিঙ শিখে গেছি এর মধ্যে। শিখতে গিয়ে একবার মাথাও ফাটালাম। কিন্তু মাথা কুটেও মেয়েটার দেখা পেলাম না আর।

৪.
অবশেষে রাখীর বান্ধবী রিমঝিম সার্চ-টিমে যোগ দিলো। সে আমাকে নিয়ে গেলো তার চারুকলার এক সিনিয়র ভাই শফিকের কাছে। সেই শফিক ভাইকে ইরানির চেহারার পুর বিবরন দিলাম। বর্ণনা থেকে শফিক ভাই ইরানির একটা ছবি আঁকলো সেটা মোটামুটি ইরানির মত হলো। অনেক দিন পর ছবিতে তাকে দেখে আমি মন্ত্র মুগ্ধের মত তাকিয়ে রইলাম। শফিক ছবির মেয়েটাকে চিনতে পারলেন। বললেন – এ তো ছবি আঁকা শিখতো না এখানে, ভর্তি ই্চ্ছুকদের শেখাতো মাঝে মাঝে এসে। ওকে নিয়ে এসেছিলো লাবনি’।

লাবনি আপু বললেন – ‘রোদেলার সাথে আমার পরিচয় জিমেট কোচিঙ করতে গিয়ে। ক্লাশের মধ্যেই হঠাৎ হঠাৎ অসাধারন স্কেচ করে ফেলতো পেন্সিল দিয়ে। তখন অমি তাকে এখানে নিয়ে আসতাম মাঝে মাঝে নতুনদের প্রক্মি ক্লাশ নিতে’।
যাক, মেয়েটার নামটা জানা গেলো এত্তদিন পর। তবে লাবনির কাছ থেকে পরে জানলাম হতাশ হওয়ার গল্প। রোদেলার বাবা বাঙলাদেশী হলেও মা অবাঙ্গালী পাকিস্তানী। বললাম –‘সে কি তাহলে পাকিস্তান চলে গেছে’?
লাবনী বললেন -‘না, যত দূর জানি তার কানাডা যাওয়ার কথা, বাবা মা ঐখানেই থাকে। বাঙলাদেশে সে দাদা-দাদীর কাছে বেড়াতে আসে মাঝে মাঝে। তখনো তাই আসছিলো’।
রোদেলার দাদা-দাদি কোথায় থাকেন সেটা লাবনী জানতো না। ঐ জিমেট কোচিঙ থেকে তার ঠিকানা নিয়ে গেলাম সেই ঠিকানায়। কিন্তু সেখানে তারা নাকি এখন আর থাকেনা। রোদেলার দাদা মারা গেছেন এর মধ্যে। তাই তারা বাড়ী ভাড়া দিয়ে দাদীকে কানাডা নিয়ে গেছে।

রোদেলার স্কেচটাকে আরেকটু মেরামত করালাম শফিক ভাইকে দিয়ে। সেটার ছবি তুলে আমার ফেসবুক প্রো-পিক বানালাম। সাথে সাথেই অদ্ভুত সব কমেন্ট আসতে লাগলো। ‘ভাইজান, জেন্ডার কি অটো চেন্জ হই গেছে, নাকি অপারেশান করলেন’। ‘জেন্ডার দেখি ‘মেইল’, আর ছবি ঝুলাইছেন মাইয়াগো, সলিঙ্গ ভাললাগেনা!’ আরো কুৎসিত অশ্লিল কথা বার্তা। সবই সহ্য করতে লাগলাম। আমাদের পুর সার্চ টিমের সবারই প্রো-পিক বানানো হলো রোদেলার স্কেচটাকে। প্রচুর শেয়ারিঙ হলো। কিন্তু কোন কাজের কাজ হলো না। ঐ ইরানি বোধ হয় ফেসবুক ইউজই করেনা।

৫.
এদিকে আমার গ্রাজুয়েশান শেষ হয়ে গেলো। GMAT এ বসলাম। সেভেন্টি ফাইভ পার্চেন্ট প্লাস্ নাম্বার পেলাম। কানাডা ইমিগ্রেশানের এ্যপ্লাই করলাম। ভালো একটা স্কলারশীপও পেয়েছিলাম। হয়েও গেলো। ওখানে গিয়ে রোদেলার দেখা পেয়ে যাবো এইটা দুরাশা। তবুও কেন যেন মনে হচ্ছিলো হবে। ততদিনে মেয়েটার প্রতি আমার তৈরী হয়েছে অসম্ভব রকম কৃতজ্ঞতা। তার সাথে বছর দেড়েক আগের ঐ কিছুক্ষনের দেখা, অল্প কিছু কথা আমার ‍ভিতরে কি এক অদ্ভুত পরিবর্তন আনলো! তাকেতো আমার অরেকবার দেখতেই হবে। তাকে বলতে হবে আমিও এখন (বাইক) উড়াইতে পারি।

যতই কানাডা যাওয়ার সময় কাছে আসলো আমার মনে রোদেলার সাথে দেখা হওয়ার আশা ততোই বাড়তে লাগলো। ফ্লাইটের দুদিন আগে আমি বাইক চালাচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম কানাডা গিয়ে কি করবো না করবো। রোদেলার সাথে কোথাও দেখা হয়ে গেলে রোদেলা কি চিনতে পারবে, চিনলে কতটা চমকাবে। কতটা বুজবে যদি জানে যে শুধু তার জন্যেই এত দূর গেছি। রোদেলাকে চমকে দিতে গিয়ে আমি নিজেই হঠাৎ চমকে গেলাম। বাইকটা কয়েকটা ডিকবাজী খেলো হঠাৎ সামনে আসা একটা সি, এন, জি কে সাইড দিতে গিয়ে। প্রায় মাস খানেক হসপিটাল থাকলাম পা ঝুলিয়ে। ঝুলে গেলো কানাডা যাওয়া।

মোটামুটি সুস্থ হয়ে লেপটপটা নিয়ে বসলাম অনেক দিন পর। ফেসবুকে অনেক মেসেজের ভিড়ে লাবনীর একটা মেসেজে আমার বুকের ভিতরটা ধ্বক ধ্বক করতে লাগলো।

৬.
লাবনী মেসেজে জানিয়েছে দুদিন ধরে ‘লা গ্যালারি’তে বেশ কয়েক জন প্রবাসী চিত্র শিল্পির ছবির প্রদর্শনি চলছে। সেখানকার একটা ছবি যেন আমি অবশ্যই দেখি। ছুটে গেলাম হাতে যদিও স্ক্র্যাচ্। অনেক অনেক অসাধারন ছবির মাঝে চোখ আটকে গেলো একটা ছবিতে। একটা ছেলে হাত ধরে একটা মেয়েকে ঢাকার ব্যাস্ত রাস্তা পার করিয়ে দিচ্ছে। মেয়েটার এক হাতে এক জোড়া স্কেট। ছবিটা পেছন দিক থেকে ফ্রেমে ধরা হয়েছে। কারো চেহারা দেখা যাচ্ছেনা। কিন্তু মায়া, নির্ভরতা আর ভালোবাসা ধরা পড়েছে। অপলক তাকিয়ে রইলাম ছবিটার দিকে। পেছনে লাবনি এসে দাড়ালো রোদেলাকে নিয়ে। লাবনীর চোখ ভরা বিষ্ময়, রোদেলার মুখ ভরা আগের মতই হাসি।

জানা গেলো যেই সকালে আমাদের দেখা হয়েছিলো ঐ দিনই মূলত রোদেলার দাদা মারা যান। তাই সে আর আসেনি। পরে দাদীকে নিয়ে সে কানাডা চলে যায়। ‍এখন আবার দাদীর জোরাজুরিতে তাকে নিয়েই দেশে এসেছে।

অবাক হয়ে দেখলাম লা গ্যালারীতে হাজীর হয়েছে আমার পুর পরিবার, সাথে ঐ দিন বাসায় আসা সেই লতা পাতার মামা মামী। রোদেলা মূলত ঐ মামীর আত্মীয়া। ঐ দিন রোদেলার সাথে দেখা হওয়াটা ছিল মূলত আমার মা আর ঐ মামীর সাজানো পরিকল্পনা। আমাকে বদলে দিতে রোদেলাকে তারা এ্যাসাইন করে। কিন্তু রোদেলা হঠাৎ আবার কানাডা চলে যাওয়াতে তারা হতাশ হন। পরে অবাক হয়ে দেখেন ঐ একটুখানি দেখাতেই রোদেলা তার কাজে সফল হয়ে গেছে। রাখি বললো- ‘এই মেয়ের একটু ছোঁয়াতে ভাইয়া এত্ত বদলে গেল! পুরা ছোঁয়া পেলেতো মা তুমি আর তোমার ছেলেরে খুঁজে পাবেনা।’

সবার হাসির রোলের মাঝে আমার ভেতরে তখন বইছে রোদেলার কাছে থাকার তাড়না।
১৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×