somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুদ্ধ করে আলাদা দেশ বানিয়ে কি পেলাম”- এই প্রশ্ন করা কতটা পাপ!

২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৩:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বাধীন দেশে কি পাইলাম প্রশ্নে যে চ্যাতা চ্যাতা উত্তর গুলো আসে তার বেশির ভাগই উন্নয়নের ফিরিস্তি। ঐ পাকিস্তানের চাইতে আমাদের দেশটা এখন উন্নত হওয়ার পথে এমন সব পরিসংখ্যান। বিষয় হলো, স্বাধীনতা যুদ্ধের আগের ঘটনা প্রবাহে আমরা দেখি যে তখনকার পাকিস্তানও উন্নতির গ্রাফে ভালোই ছিলো। যেটা ছিলো না তা হলো সেই উন্নয়নে আমাদের বাংলার মানুষদের ন্যয্য হিস্যা। বিরোধের মূলেই ছিলো সম্পদ আর তার আয়ের বন্টন বৈষম্য। পুরো পাকিস্তানের জিডিপি আর কিতাবি পরিসংখ্যানগত উন্নয়ন নিয়ে তো তখনো প্রশ্ন ছিলো না। আপত্তির জায়গা যে বন্টন ব্যবস্থা, তার আইন কানুন যে এ্যাসেম্বলিতে বানানো হবে সেখানেই বাংলাদেশের মানুষ ঢুকতে পারছিলোনা। কারন, এখানকার মানুষরা নিজেদের ভোটের কোন দাম পাচ্ছিলোনা।
.
পূর্ব পাকিস্তান হয়েগিয়েছিলো পশ্চিমের কারখানার কাঁচামাল উৎপাদক, আর সেই কাঁচামালে তৈরী নিম্নমানের পণ্যের ক্রেতা। সহজে বুঝাতে ঘটনাটা এভাবে বলা যায় যে -কৃষক তরমুজ ফলিয়ে বিক্রি করবে আশি টাকা পিস এ। এর পর সেই তুরমুজের জুস কিনে খাবে একশ টাকা এক গ্লাস, একশ গ্লাস দশ হাজার টাকায়। এই চক্র সময়ের সাথে সথে যত গড়াবে কৃষক তত পরিনত হবে কারখানা মালিকের কৃতদাসে। কুয়ালালামপুরের মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক মোহাম্মদ নিয়াজ আসাদুল্লাহ ২০০৬ সালে তার এক গবেষণায় দেখিয়েছেন যে পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যা পশ্চিমের চেয়ে বেশি হওয়া স্বত্বেও সরকারি উন্নয়ন বরাদ্দে বৈষম্য কতটা পাহাড় সমান ছিল। বৈষম্যের খতিয়ান নিয়ে বিবিসির করা ২০২১ সালের বিশদ প্রতিবেদনটা এখােন দিলাম। (https://www.bbc.com/bengali/news-55803132)
.
বন্টনের এই হিস্যা চাইতে গিয়ে মরতে হয় আমাদের ত্রিশ লাখ মানুষকে। সাথে দুই লক্ষ রেপ, আর ভয়ংকর অবর্ণনীয় দুর্ভোগ, কষ্ট। আমাদের হাজার বছরের জানা ইতিহাসে সবচেয়ে চড়া দামে কেনা একটা স্বাধীন দেশ, নিজেদের শাসন ব্যবস্থা, নির্বাচন, পার্লামেন্ট ব্যাবস্থা সব ঠিক মত পেলাম কিনা সেই প্রশ্ন কি করা যাবে না!! ঘরের ফ্রিজে একটু পানি লীক হলেই তো হায় হায় করে উঠি সবাই, এত দামী জিনিষ, দরকারি জিনিষ ঠিক মত কাজ করছে না বলে। তক্ষুনি কাস্টমারে কেয়ারে ফোন দিয়ে সার্ভিস করাতে যাই। আর প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরেও যার দাম দিয়ে ঘা শুকাবে না সেই রাষ্ট্র যন্ত্রে যখন ভোটের জন্যে সুবর্ণচরে কোন মা রেপ হয়, অফিসে অফিসে ঘুষের বন্যা বয়, রাস্তায় রাস্তায় আর পিলারে পিলারে লুটপাটের ঘা লাগতে থাকে তখন কি প্রশ্ন করা যাবে না যে ত্রিশ লাখ মানুষ, দুই লাখ রেপ কি কম হয়ে গেলো! এটা ঠিক করার জন্যে কোন সার্ভিস সেন্টার থাকবে না!
.
এই দেশেতো প্রতিটা নি:শ্বাসে নি:শ্বাসে স্বাধীন করে কি পেলাম এই প্রশ্ন আসার কথা। জিডিপির জন্যে না বরং ইনসাফ এর জন্যেই যে এত রক্ত গেছে, এটাতো সবার বুঝার কথা। ডাল মাপতে গিয়েও যদি একশ গ্রাম কম পরে দোকানদার কে মনে করিয়ে দেয়ার কথা যে – ”আমারটা যাতে তুমি মেরে খেতে না পার” সেটা নিশ্চিত করতেই আমাদের ত্রিশ লাক্ষ প্রাণ দিয়ে দিতে হয়েছে। এই দেশটাতো কুতুবদিয়ায় জেগে উঠা হঠাৎ পাওয়া কোন চর না। এটা বহু দামি দেশ, বহু দামি। তাই সাবধান।
.
#Afnan_Abdullah

নোট: সাতই মার্চের ভাষণ: Click This Link
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×