ব্লগের শক্তি কতটুকু ? ক'জন পড়ে ব্লগ ? ব্লগের উদ্যোগে এ যাবৎকালে বড় কি সাফল্য এসেছে ? ব্লগ কর্তৃপক্ষ কি সাহসী ? তাদের কি দেশের প্রতি দরদ আছে ? তারা ভালবাসে দেশকে ? দেশের মাটিকে ? মানুষকে ?
এক ফারাক্কার ছোবলে বিকলাংগ জীবন বয়ে বেড়াচ্ছে ভাটি জনপদের মানুষগুলো । ধুঁকতে ধুঁকতে সবুজ বনানী এগিয়ে যাচ্ছে মরুময় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে । আমাদের খাল-বিল-জীববৈচিত্র-নদীনালা উৎকণ্ঠিত মানবসৃষ্ট অশনিসংকেতে ।বাংলাদেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্যের প্রতি সবচেয়ে বড় হুমকি ফারাক্কা । আমরা কোনদিন মেনে নিতে পারবনা ফারাক্কা ।
আমাদের ততোধিক বিকলাঙ্গ রাজনীতিকদের নিস্ক্রিয়তা আর দেশের প্রতি ভালবাসাহীনতা আমাদের পোড়ায় ভীষণ । আমরা বৃথা আস্ফালনে হাত-পা কামড়াই নিজেদের । আমাদের রক্ত যুদ্ধের ডাক দেয় । আমরা প্রাচীন মানুষের জীবনকে এখনকার চেয়ে ভাল মনে করি - যেখানে বেঁচে থাকা মানেই বীরের জীবন । আর এখানে কেবল নপুংশকেরাই বেঁচে থাকে । সকল অন্যায় অবিচারের সাথে আপোস করেই আমাদের পথ চলতে হয়, যে যত বেশী আপোসী সে তত ভব্য-সভ্য-আধুনিক !
চলমান বৈশ্বিক ও রাষ্ট্রিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা দাঁড়াতে পারিনা । আমরা শক্তিমানের শক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারিনা ।আমরা ক্ষমতাবানদের ক্ষমতার দর্প ভেঙ্গে দিতে পারিনা ।আমরা পোস্ট মডার্ণ দাসত্বের জীবনে হেসে খেলে বেড়াই । আমরা সন্তুস্ট আমাদের দাসজীবনে ।
তবু কিছু ব্যতিক্রম থাকে । এদের কারণে এখনো টিকে আছে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, মনুষ্যত্ব । বিবেকের ঘুণ ধরা দরজায় আঘাত হানুক নয়া কালবৈশাখী 'টিপাইমুখ বাঁধ' ।
সহব্লগার ধীবর তুলে ধরেছেন এই বাঁধের অশুভ প্রভাবের কথা ।আরো জনাকয়েক ব্লগার এ প্রসংগে একটা আন্দোলন গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে পোস্ট দিয়েছেন । ধীবরের লেখাটা স্টিকি করা দাবী জানানো হয়েছে ।আমরা কর্তৃপক্ষের সাড়া পাইনি ।
ধীবর কিছু মতামত চেয়েছেন ব্লগের নবীন প্রবীণ সবার কাছে - কিভাবে ভারতের এই হীন প্রচেষ্টা রুখে দেয়ার জন্য আমরা কাজ করতে পারি ।আমার কিছু প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখার অনুরোধ করছি-
১.নেটের মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা । এখানে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশীদের হত্যা করা, ফারাক্কার প্রভাব, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের অনধিকার চর্চা সহ অন্যান্য আরো বিষয় স্থান পেতে পারে ।
২.বাংলাদেশের বাইরে অবস্থানরত সকল বাংলাদেশীসহ পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে অবস্থিত মানবতাবাদী এবং পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোকে এর সাথে সম্পৃক্ত করা ।
৩.পৃথিবীর সকল রাস্ট্র ভারতের বন্ধু নয় । সুতরাং ভারতের বন্ধু নয় এমন রাষ্ট্রগুলোর কাছে বাংলাদেশের যৌক্তিক দাবীগুলো এবং ভারতের অন্যায়গুলো তুলে ধরা । প্রয়োজনে এদেশে অবস্থিত সকল বিদেশী দুতাবাসসহ অন্যান্য সংস্থায় স্মারকলিপি প্রদানের ব্যবস্থা করা ।
৪."একশন কমিটি এগেইনস্ট টিপাইমুখ ড্যাম" এর সাথে যোগাযোগ করা এবং তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করা ।
৫.যার যেখানে একসেস আছে প্রতিটি যায়গায় টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা ।
৬.দেশের সরকারী বা বিরোধী সব দলের কাছেই এ ব্যাপারে স্পস্ট বক্তব্য চাওয়া এবং সব দলের পক্ষ থেকেই যেন ভারতীয় দুতাবাসে প্রতিবাদ লিপি পাঠানো হয় এ ব্যাপারে আলাপ আলোচনা করা ।
৭.বিশেষ করে যুক্তরাস্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীরা যেন এই ব্যাপারে উদ্যোগী ভূমিকা নেয় সে ব্যাপারে তাদের সাথে যোগাযোগ করা ।
আমি একজন নবীন । কিছু মতামত দিলাম ।অযৌক্তিক হলে গ্রহণের দরকার নেই । আমি চাই যৌক্তিক কিছু বেরিয়ে আসুক আমাদের লেখা থেকে । যেভাবে এগুলে ভারতকে এই চক্রান্ত থেকে রুখা যাবে সেভাবে যেন এগুতে পারি আমরা । আমি সবার মতামত আশা করছি । সেই সাথে সাথে টিপাইমুখ বাঁধ বিরোধী আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি ।