যানজট নিরসনে যে সকল উপায়ের আশ্রয় নেওয়া হয়ে থাকে সাধারণত সেগুলো হল, নতুন রাস্তা নির্মাণ, একসিস্টিং রাস্তার প্রস্থ বৃদ্ধি, বাস সার্ভিস কিংবা ট্রেন সার্ভিস চালু করা। ইদানিং উল্লিখিত উপায়গুলো ব্যয়বহুল হয়ে পরায়, নগর পরিকল্পনাবিদরা উন্নত বিশ্বে, সকালের যানজট কমানোর জন্যে কিভাবে সকালের কিছু ট্রিপ দিনের অন্যান্য সময়ে ডাইভার্ট করা যায় কিংবা কিভাবে ট্রিপের সংখ্যা কমানো যায় সে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
ঢাকার রাস্তায় সকালবেলা (মর্নিং পিক আওয়ারে) যে সকল কারনে মানুষ যাতায়াত করে তার অন্যতম দুটি কারন হচ্ছে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্যে এবং স্কুল এ যাওয়ার জন্যে। ঢাকার বেশিরভাগ স্কুলেই স্কুল বাসের কোন ব্যবস্থা নেই যার ফলে স্কুলের বাচ্চাদেরকে গাড়ীতে করে কিংবা রিক্সা অথবা সিএনজিতে করে স্কুলে যেতে হয়। অনেক অভিভাবক একা একা সন্তানকে ছেড়ে দিতে সাহস পান না, বিধায় তারা তাদের সন্তানকে স্কুলে দিয়ে যান এবং ছুটি হলে আবার নিয়ে আসেন।
ঢাকার সব স্কুলগুলোতে যদি স্কুল বাস থাকতো তাহলে অভিভাবকদেরকে তাদের সন্তানদেরকে দিয়ে আসতে কিংবা নিয়ে আসতে হতো না। এর ফলে অনেকগুলো ট্রিপ কমে যেতো। আবার স্কুল বাসের ব্যবস্থা থাকলে অনেকগুলো ট্রিপ একটা ট্রিপে পরিণত হতো। যেমন আগে যেখানে ৮টা বাচ্চা প্রত্যেকে আলাদা আলাদা রিক্সাতে স্কুল গেলে আটটা ট্রিপ হতো, সেই আটটা বাচ্চা একটা স্কুল বাসে করে স্কুলে গেলে আটটার যায়গায় মাত্র একটা ট্রিপ হবে। অর্থাৎ অনেকগুলো ট্রিপ কমে যাবে।
যেহেতু ট্রেন সার্ভিস চালু করা কিংবা নতুন রাস্তা নির্মাণ করা ব্যয়বহুল এবং সময় সাপেক্ষ তাই আমি মনে করি ঢাকার যানজট নিরসনে স্কুল বাস উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখতে পারবে।
সরকারকে স্কুলগুলোকে স্কুল বাস চালু করার জন্যে আইন করতে হবে যাতে স্কুলগুলো তা মানতে বাধ্য হয়। এছাড়াও স্কুলের ১০০০ ফিটের মধ্যে কোন প্রাইভেট কার, রিক্সা কিংবা সিএনজি পার্কিং, অথবা থামতে দেওয়া যাবে না যাতে করে অভিভাবকরাও বাধ্য হয় স্কুল বাসে করে তাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে। আমার বিশ্বাস এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও যানজট কমবে।