কতক্ষন একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকবার পর, গেট টুগেদারে উপস্থিত হওয়া দুজন মানুষের কথোপকনঃ
- আপনি তাহলে কে?
- জ্বি! আমি অমুক। তবে ব্লগে লিখি অমুক নামে। আপনি?
- জ্বি আমি অমুক আর আমার ব্লগ নিক অমুক!
একে অপরের ব্লগ পরিচয়টা জানবার পর, পুরো দস্তুর অপরিচিত দুজন মানুষ তুমুল উচ্ছ্বাসে একে অপরকে প্রচন্ড আবেগ আর ভালোবাসা নিয়ে জড়িয়ে ধরল।
ব্লগারদের মধ্যকার সম্পর্কটা বোধ করি এমনই! এটা বাস্তবের থেকে অনেক বেশী ইমাজিনড। আর এজন্যই ব্লগ কমিউনিটিটাকে একটা কল্পিত সম্প্রদায় বলতে আমার খুব ভালো লাগে। আর এই কল্পিত সম্প্রদায়ের মানুষেরা যখন একজন আরেকজনের নিকট বাস্তবে এসে ধরা দেন তখন তাদের মধ্যকার প্রাথমিক আলাপচারিতাগুলো বোধ করি এমনি হয়।
প্রিয় সহ-ব্লগারবৃন্দ!
আপনারা যারা আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের আসমা আখতার হল রুমে হাজির হয়েছিলেন, যারা প্রচন্ড ইচ্ছা থাকা স্বত্ত্বেও হাজির হতে পারেন নাই আর যারা উপস্থিত না থেকে পুরোটা সময় ব্লগারদের এই গেট টুগেদারের পেছনে উৎসাহ-উদ্দীপনা যুগিয়ে চলেছিলেন তাদের সকলের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা এবং ভালোবাসা। একটা কথা আমি বারবার বলতে চেয়েছি, ব্লগ দিবস উপলক্ষে ব্লগারদের গেট টুগেদার কোন ভাবেই ব্যাক্তির একক কোন অনুষ্ঠান নয় বরং এটা আমাদের প্রোগ্রাম। সারা বিশ্বের ব্লগারদের প্রোগ্রাম। দুঃখিত! আমাকে ক্ষমা করবেন, এটা প্রোগ্রামের থেকে অনেক বেশী একটা পরম্পরা! একটা মিলন মেলা। টানা পরপর তিন বছর নিরাপত্ত্বার অযুহাতে আমাদের এই মিলন মেলা বন্ধ থাকা কোন ভাবেই কাম্য ছিলনা। তাই এবার আমি ক্ষুদ্র একটা উদ্যেগ নিয়েছিলাম, পরেরবার সেই দায়িত্ব হয়তোবা আপনাকেই নিতে হবে।
গেট টুগেদারে আমরা প্রায় ৪০ জন ব্লগার উপস্থিত ছিলাম! ব্লগারগনের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা তো থাকছেই, তবে আমি সব থেকে বেশী কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে চাই প্রাক্তন কয়েকজন ব্লগারের প্রতি যারা ব্লগে অনিয়মিত হয়েছেন অনেক আগেই কিন্তু ব্লগারদের সাথে তাদের যে বন্ধন সেই বন্ধন এখনো ছিন্ন করতে পারেন নাই। আর ছিন্ন করতে পারেন নাই বিধায় ব্লগার নিমচাদ, ব্লগার কবি রেজওয়ান তানিম, ব্লগার ঘুড্ডির পাইলট, ব্লগার স্বর্নমৃগ, ব্লগার অলওয়েজ ড্রিম এবং ব্লগার হামিদ আহসান প্রমুখ বরেন্য ব্যাক্তিবর্গ হাজির হয়েছেন সেই গেট টুগেদারে!
ব্লগার নিমচাঁদ
ব্লগার কবি রেজওয়ান তানিম
ব্লগার ঘুড্ডির পাইলট
ব্লগার স্বর্নমৃগ
ব্লগার অলওয়েজ ড্রিম
ব্লগার হামিদ আহসান
এছাড়াও উপস্থিত তিনজন মানুষকে স্যালুট না জানালেই নয়! তারা হলেন,
আমাদের ব্লগের বোধকরি সর্ব-বয়োজেষ্ট্য ব্যাক্তিটি! ব্লগার ইসমাইল ভাই। যে অদম্য সাহস আর শক্তি নিয়ে তিনি আমাদের এই গেট টুগেদারে হাজির হয়েছেন, আমি তাকে স্যালুট জানাই!
ব্লগার এস ইসমাইল ভাই
আছেন আমাদের দুলাভাই! ব্লগার নাহিদ যাকে নন ব্লগার দুলাভাই নামে অভিহিত করেছেন। তিনি আর কেউ নন, আমাদের মনিরা সুলতানা আপার বেটার হাফ। অনেক ব্যাস্ত এবং অমায়িক এই মানুষটার প্রতি শ্রদ্ধা!
ব্লগার মৌরি হক দোলা! সামহোয়ার ইন-এ এখন তিনিই মনে হয় সর্ব কনিষ্ঠ ব্লগার! ইন্টারমিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ারে পড়ছেন। তিনি যে লেখালেখি করছেন এটাই আমার নিকট আশ্চর্য্য মনে হয়েছে। যাই হোক আম্মুর হাত ধরে তিনি সবার আগেই এসে এমনকি আয়োজকদের আগেই এসে উপস্থিত হয়েছেন। স্যালুট এই পিচ্চি ব্লগারের অদম্য দুঃসাহসিকতাকে।
ব্লগার মৌরি হক দোলা
ব্লগার নাহিদ০৯ এবং তার সদ্য কেনা ক্যামেরার প্রশংসা না করলেই নয়। এই মানুষটা পুরোটা সময় ছিলেন ক্যামেরার পিছে। ধন্যবাদ জানবেন ভ্রাতা।
ব্লগার নাহিদ০৯
অপু যেভাবে সার্বক্ষনিক সহযোগিতা করে গিয়েছেন, তা কোনভাবেই ভূলবার নয়! ধন্যবাদ অপু!
ব্লগার অপু দ্যা গ্রেট
দুজন ব্লগার আমাদের মিলনমেলাটিকে আলো করে রেখেছিলেন! একজন আমার বড় বোন তুল্য!
শ্রদ্ধেয় মনিরা সুলতানা আপা!
আরেকজন হলেন নুরুননাহার লিলিয়ান! এই মানবী সুন্দর জানতাম তবে এতটা সুন্দর সেটা জানতাম না। ভালোবাসা জানবেন লিলিয়ান!
ব্লগার নুরুননাহার লিলিয়ান
এর বাইরেও আরো অনেকের নাম বাদ পরে গেল। ব্লগার আহমেদ জি এস, ব্লগার সেলিম আনোয়ার, ব্লগার প্রামানিক, ব্লগার বিদ্রোহী ভৃগু, ব্লগার কাওসার এবং অনেকে। সঙ্গত কারনে (ব্লগ আর ছবি নিতে চাচ্ছে না) আপনাদের ছবি দেয়া গেল না তবে আপনাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা ভ্রাতা।
যাই হোক, যখন আমি এই লেখাটা লিখছি তখন আমার গায়ে ১০৩ ডিগ্রি জ্বর আর আগের রাতে সারাটা রাত বিরামহীন খুক খুক করে কাশি দিয়েছি। শীতের মাঝে বৃষ্টি কোনভাবেই স্বস্তিদায়ক কোন কিছুই নয়, আর সেই বিচ্ছিরি বৃষ্টির মধ্যে ভিজতে ভিজতে মোটর সাইকেল চালিয়ে সামহোয়ার ইন ব্লগ অফিস, এক রঙা এক ঘুড়ির অফিস এবং অন্যান্য ব্লগারগনের সাথে গেট টুগেদারের প্রি-মিটিং গুলো যে আমার শরীরের জন্য ভালো কিছু হচ্ছিলনা এটা তখনই বুঝতে পারছিলাম। আমার শরীরকে শুধু এটাই বলছিলাম, আমাকে শুধু ২১ তারিখ পর্যন্ত সময় দাও। তারপর বিশ্রাম। শরীর বোধ করি আমার কথা শুনেছে।
আপনারা যারা গেট টুগেদারে এসেছেন, ইচ্ছা স্বত্ত্বেও যারা আসতে পারেন নাই এবং যারা পুরোটা সময় অনুপ্রেরনা যুগিয়ে চলেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর কোন ভাষা নেই। আমি আবারো বলছি ব্লগ দিবস আয়োজন কিংবা ব্লগারগনের মিলন মেলা একক কোন ব্যাক্তির কিংবা গোষ্ঠির প্রোগ্রাম নয়। এই প্রোগ্রাম আপনার, আমার! আমাদের সকলের। কিভাবে আমরা ব্লগারগন সকল বিভেদ ভূলে নিজেদের একটা কাতারে নিয়ে আসতে পারি, নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে পারি এবং একটা মানবিক বাংলাদেশ গঠনে আমাদের ভূমিকা কি হতে পারে- সেটাই এখন বিবেচ্য।
ধন্যবাদ জানবেন সকলেই।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৬