somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইন্টারভিউ’র প্রস্তুতি গাইড লাইন

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি বেলা সত্যিঃ এখন আর কেউ আটকাতে পারবে না’। হ্যাঁ, চাকরি পেলে আপনাকে কেউ আটকাতে পারবে না। কিন্তু চাকরি পাওয়ার আগে আপনাকে আটকাবার মতো হাজারটা বাধা আছে। একটা পদের জন্য শত শত এমনকি হাজার হাজার আবেদনও অনেক সময় প্রতিষ্ঠানে জমা পড়ে। সেখান থেকে কিছুটা বাছাই হয়ে লিখিত পরীৰার জন্যও আমন্ত্রণ পান প্রচুর আবেদনকারী। লিখিত পরীৰার কঠিন বৈতরনী যারা পার হয়ে আসতে পারেন তাদের জন্য রয়ে যায় ‘ইন্টারভিউ’ নামক মৌখিক পরীৰার চ্যালেঞ্জ। আর এই চ্যালেঞ্জ যারা বিনা কাঁপুনিতে অর্থাৎ ঝামেলাবিহীনভাবে আত্মবিশ্বাসের সাথে পাড়ি দিতে পারেন তারাই কেবল বলতে পারেন- ‘চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি।’ ইন্টারভিউ নামক যে হাতিয়ারটির সঠিক নিশানার উপর নির্ভর করছে চাকরি নামের সোনার হরিণটি সেই ইন্টারভিউ এর জন্য প্রস্তুতিটাও হওয়া উচিত জোরদার। কিভাবে নেবেন ইন্টারভিউ এর প্রস্তুতি, তারই নানান খুঁটিনাটি বাতলাতে গাইড লাইন এর এবারের আয়োজন।

গ্রন্থগত বিদ্যাঃ
‘গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন, নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন’। আপনার একাডেমিক রেজাল্ট অসাধারণ। আপনার মার্কশীটের দিকে তাকিয়ে মুগ্ধ হয়ে যান যে কেউ । কিন্তু যেইনা আপনার পঠিত বিষয় থেকে কেউ কিছু জানতে চান অমনি আপনি চুপসে যেতে বাধ্য হন। কারণ ভার্সিটির শেষ পরীৰাটা দিয়ে আসার পর আপনার বইয়ে ধূলোর আস্তরণই কেবল পড়েছে। অতএব, অনার্স লেভেলে কিংবা গ্র্যাজুয়েট লেভেলে আপনি যে বিষয়গুলো পড়েছেন সেগুলোকে নিয়মিত ঝালিয়ে নিন। এতে আপনার লিখিত পরীৰাটা যেমন হবে অসাধারণ, তেমনি ইন্টারভিউ বোর্ডেও আপনার মাঝে থাকবে হাজারগুণ আত্মবিশ্বাস।

প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানুনঃ
যে প্রতিষ্ঠানে আপনি ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন, যতোদূর সম্ভব সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিন। এই যেমন কবে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, প্রতিষ্ঠাতা কে, মালিকপৰে কারা কারা আছেন, তাদের সামাজিক পরিচিতি- এই সব। প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক আয়, উৎপাদন কতো, ভবিষ্যত সম্ভাবনা কেমন এসবও জেনে রাখতে পারেন। সম্ভব হলে ওদের বার্ষিক রিপোর্টটা পড়ে নিন। ওই প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে পারেন। পত্রিকার রিপোর্ট, ইন্টারনেট, গ্রন্থাগার ঘেটে ওই ধরনের ব্যবসার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমান পরিস্থিতি কেমন- বুঝে নিন। এরপর আপনার কাজ হবে যে পদের জন্য ইন্টারভিউ দিতে যাবেন ভাল করে সেই পদের দায়িত্ব বোঝার চেষ্টা কর্বন। ধরা যাক, আপনি একটি টেলিকম কোম্পানির মার্কেটিং ডিভিশনের একটি পদের জন্য ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন। আপনার উচিত মার্কেটিং এর কাজ-কর্ম সম্পর্কে আগে-ভাগে ধারণা অর্জন করা। প্রয়োজনে মার্কেটিংয়ে কাজ করেন এমন পূর্ব-পরিচিত কিংবা টেলিকম কোম্পানির সিনিয়র বড় ভাই বা বোনের সাথে কথা বলে ধারণা নিন।

আগে দর্শনধারীঃ
‘আগে দর্শনধারী, তারপর গুণবিচারী’। ইন্টারভিউ বোর্ডে আপনাকে অবশ্যই দর্শনধারী হয়ে উপস্থিত হতে হবে। এর মানে এই নয় যে, মডেল হয়ে আপনাকে ইন্টারভিউতে যেতে হবে। আপনাকে স্মার্টলি নিজেকে প্রেজেন্ট করতে হবে ইন্টারভিউতে। বলা হয়ে থাকে প্রথম দেখার রেশ মানুষের মনে থেকে যায় দীর্ঘদিন। তাই প্রথম দিনই অফিসের কর্তাদের সামনে এমনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে যাতে তারা বুঝতে পারেন আপনি যেকোন জায়গায় এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন। আপনার চেহারা কিংবা ফিগার যেমনই হোক না কেন ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে দাঁড়াতে হবে ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হয়ে।

আত্মবিশ্বাসের সাথে মুখোমুখি হোনঃ
অসাধারণ আপনার রেজাল্ট, দার্বণ আপনার ফিগার, চমৎকার আপনার চেহারা, পোশাক-আশাকে আপনি দুর্দান্ত- কিন্তু ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে গিয়ে আপনি নার্ভাস হয়ে গেলেন। জানা থাকা উত্তর দিতে সময় লাগলো অনেকৰণ। আপনার ফলাফল কিন্তু শূন্য। আপনার রেজাল্ট যেমনই হোক, আপনি স্মার্ট হোন বা না হোন ইন্টারভিউ বোর্ড পর্যন্ত কিন্তু আপনি চলে এসেছেন। অতএব এখানে যদি আপনি প্রশ্নকর্তাদের সন্তুষ্ট করতে পারেন তবে যোগ্যতায় অনেকের চেয়ে পিছিয়েও চাকরির শিকেটি আপনার ভাগ্যেই ছিড়তে পারে। সে জন্য হতে হবে প্রচন্ড আত্মবিশ্বাসী। আপনি যা জানেন, যতোটুকু জানেন তারই জবাব দেবেন আত্মবিশ্বাসের সাথে। যা জানেন না তাও প্রশ্নকর্তার কাছে অকপটে স্বীকার কর্বন। প্রশ্নকর্তারা সৎ এবং আত্মবিশ্বাসী প্রার্থীকেই পছন্দ করেন। তবে এটাও মনে রাখবেন অযথা বাড়তি আত্মবিশ্বাস দেখাতে যাওয়া ৰতির কারণ হতে পারে।

প্রস্তুতির টুকিটাকিঃ
০ ইন্টারভিউতে যাওয়ার আগে, সকালে নাস্তায় কফি বা মিষ্টি জাতীয় কিছু খাবেন না। ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। করলেও দাঁত ব্রাশ করবেন।
০ চুল ভাল করে আচড়ে নিন। সম্ভব হলে চুল ছোট রাখুন। মেয়েরা চুল ভাল করে বেঁধে নিন।
০ ভাল মানের জুতা পর্বন। হাটার সময় যেন শব্দ না হয়।
০ সার্টিফিকেট বহনের জন্য র্বচিসম্মত ফাইল ব্যবহার কর্বন।
০ পারফিউম, আফটার শেভ লোশন ব্যবহার করতে পারেন। তবে তা যেন মাত্রাতিরিক্ত না হয়।
০ মেয়েরা হালকা মেকআপ কর্বন। যেন কিছুতেই উৎকট না দেখায়।
০ পকেটে বা ব্যাগে টিস্যু পেপার রাখুন।
০ ভাল মানের কলম ও ডায়েরি ব্যবহার কর্বন।
০ সেদিনের পত্রিকা ভাল করে পড়ে ইন্টারভিউতে যান।
০ আগের রাতে পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে নিন। চেহারায় যেন ক্লান্তির ছাপ না থাকে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×