ধরা যাক, বিশ্বের জলবায়ু উষ্ণ হয়ে ওঠার প্রধান কারণ কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমন একসময় একেবারে বন্ধ করা সম্ভব হলো। তাহলে নিশ্চয়ই পরিবেশ উষ্ণ হওয়া নিয়ে আর দুশ্চিন্তা থাকবে না? সে আশা বৃথা। গবেষকরা বলেছেন, কার্বনের নির্গমন রাতারাতি একেবারে বন্ধ করা গেলেও জলবায়ু পরিবর্তনের যে ফল তা পাল্টে দেয়া সম্ভব নয় । অন্তত আগামী এক হাজার বছর সে চিন্তা বাদ দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) গবেষকরা এ ভয়াবহ তথ্য দিয়েছেন।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ ফুলে ওঠার যে মাত্রা তাতে কার্বন নির্গমন একেবারে বন্ধ হয়ে গেলেও পরবর্তী এক হাজার বছরে এ চিত্র পাল্টে দেয়া সম্ভব হবে না।
এনওএএর গবেষক সুসান সলোমন জানান, গবেষণাটি এ সপ্তাহের ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাটিতে কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমনের বর্তমান হারের (প্রতি ১০ লাখে ৩৮৫ ভাগ) সঙ্গে নির্গমন সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নেমে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা তুলনামূলক পরীক্ষা করা হয়েছে। শিল্প যুগের আগে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বনের হার ছিল প্রতি ১০ লাখে ২৮০ ভাগ।
গবেষণায় দেখা যায়, বাতাসে কার্বনের মাত্রা জলবায়ুতে যে প্রভাব ফেলছে তা ‘অপরিবর্তনীয়’। এর ফলে বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাবে এবং নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কমে যাবে।
গবেষকরা জোর দিয়ে বলেছেন, ২০০০ থেকে ২১০০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন যে হারে বাড়বে তাতে আগামী এক হাজার বছর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ঠেকানো সম্ভব হবে না। আর সমুদ্র ফুলে ওঠার অর্থ দাঁড়ায় উপকূলবর্তী এলাকাগুলো ডুবে যাওয়া এবং পরিণতিতে পৃথিবীর মানচিত্রে পরিবর্তন।
আর যেসব অঞ্চলে শতাব্দীজুড়ে বৃষ্টিপাতের মাত্রা হ্রাস পাবে সেসব অঞ্চলে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পানির অভাব দেখা দেবে, ঘন ঘন অগ্নিকাণ্ড হবে এবং বিস্তীর্ণ এলাকায় দেখা দেবে খরা।
সূত্র : এএফপি