বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসীদের বিক্ষোভ
স্টাফ রিপোর্টার
বাংলাদেশে অব্যাহত মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের, গণগ্রেফতার ও রিমান্ডের নামে নেতাদের ওপর জুলুম, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, বিচার ব্যবস্থায় নগ্ন হস্তক্ষেপ, সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়া, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ, জাতীয় নেতাদের ওপর পুলিশি নির্যাতন ও তাদের রিমান্ডে নেয়ার প্রতিবাদে ‘বাংলাদেশ ওয়াচ অস্ট্রেলিয়া ইনকরপোরেটেড’ ক্যানবেরায় বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে মানবাধিকার সংস্থার প্রেসিডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় গবেষক ড. মাযহারুল ইসলামের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশী মানবাধিকার কর্মীরা বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীদের প্রচণ্ড ক্ষোভের কথা তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বরাবর এক স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপির কপি অস্ট্রেলিয়া সরকারের বিদেশ বিভাগ, মানবাধিকার কমিশন, পত্রিকা সম্পাদক, টিভি সাংবাদিক, সংসদ ও সিনেট সদস্যদের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা দেশের বর্তমান সার্বিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি, দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ ওয়াচ অস্ট্রেলিয়ার প্রেসিডেন্ট তার বক্তৃতায় দেশের বর্তমান মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি এবং বর্তমান সরকারের কপটতা তুলে ধরেন। একদিকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশ লীগকে দিয়ে সন্ত্রাস দেশের শিক্ষাঙ্গন থেকে শুরু করে সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে, একই সঙ্গে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে বাধা দিয়ে নাগরিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে। বিরোধী দলের যাদের এখন বিচারের নামে প্রহসনের মাধ্যমে নির্যাতন করা হচ্ছে, ক্ষমতার জন্য এক সময় তাদের পদধূলি নিয়েছে এবং একসঙ্গে আন্দোলন করেছে। তারা আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি ও দৈনিক আমার দেশ-এর বাধাহীন নিরবচ্ছিন্ন প্রকাশনা দাবি করেন।
বক্তারা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে বাবার কপটতার খেলা আবার তার মেয়ে খেলতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রীর বাবা সেই সময়ে ১৯৫ যুদ্ধাপরাধীকে ক্ষমা করে এবং ভুট্টোকে আলিঙ্গন করে ৩০ লাখ শহীদকে অপমানিত করেছেন। কারণ জুলফিকার আলী ভুট্টো ছিলেন ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়কার সব থেকে ঘৃণিত যুদ্ধাপরাধী। আজ তার মেয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়ে হঠাত্ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জিগির তুলে দেশকে ফেইলড রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র করছেন। আজ দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে ডিজিটাল শাসন নয় বরং মানবতার শাসন দরকার। অনৈক্য নয়, ঐক্যের ডাক দিন। হিংসা নয় ভালবাসায় হৃদয় জয় করুন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ড. ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাহাত্তরের একদলীয় বাকশালী ভূত আবার নিরীহ জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। ওরা হিংসা ছড়াচ্ছে চারদিকে। সাম্রাজ্যবাদ, হিন্দুত্ববাদ, নাস্তিক্যবাদ, বিদেশিদের স্বার্থরক্ষাকারী গোষ্ঠী আজ খামচে ধরেছে বাংলাদেশের মানচিত্র। বিসমিল্লাহ রেখে বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়ার ঘোষণা এক প্রতারণা এবং ধর্মকে নিয়ে ব্যবসা করার নামান্তর। আওয়ামী লীগের পায়ের তলা থেকে মাটি দ্রুত সরে যাচ্ছে। তারা এখন অগাধ পানিতে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে তারা যেভাবে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর চেষ্টা করছে, এটা তাদের রক্ষা করার ক্ষেত্রে কানাকড়ি অবদানও রাখবে না।
দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা এবং প্রবাসীদের মাঝে দেশে বিনিয়োগের আস্থা তৈরি করে দেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিতে হবে বলে তারা উল্লেখ করেন।