শুনেছি সুখেই বেশ আছো, কিছু ভাঙচুর আর/ তোলপাড় নিয়ে আজ আমিও সচ্ছল, টলমল/ অনেক কষ্টের দামে জীবন গিয়েছে জেনে/ মূলতই ভালোবাসা মিলনে মলিন হয়, বিরহে উজ্জ্বল। ..... হেলাল হাফিজের কবিতা
সাবিহা মফস্বলের মেয়ে। সেখানেই প্রেম হয় মারুফের সাথে। তুমুল প্রেমের স্রোতে ভাসে তারা। এমন একটা দিনও কাটেনি যখন ভালোবাসার বহ্নি তাদের উড়ায়নি আকাশে। মারুফ ঢাবিতে চান্স পায় না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে পড়তে হয়। তাই ভালো ছাত্রী হয়েও সাবিহা ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষা দেয় না। ভর্তি হয় ইডেনে।
কিন্তু মারুফ কেমন যেন বদলে যেতে থাকে ধীরে, ধীরে। চিরচেনা অচেনা হয়ে যায় সাবিহা কিছু বুঝে উঠার আগেই। সাবিহা অনেক কাদেঁ। কিন্তু মারুফ আর ফিরে আসে না।
ভালোবেসে সাবিহার হাতে একটা আঙটি পড়িয়ে দিয়েছিলো মারুফ। একদিন এসে সাবিহার হাতের সেই আঙটিটাও খুলে নিয়ে যায় সে। সাবিহা, যে সাবিহা কোনদিন একমুহূত্বের জন্যও মারুফের আঙটিটা হাত থেকে খুলেনি, সে তখন শুন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল, হাতের আঙ্গুলে আঙটির বসে যাওয়া সাদা দাগটার দিকে। মারুফ বলে যায়, আর কভু দেখা হবে না।
একই শহরে তারা থাকে। অথচ মারুফ আর সাবিহার নেই। এই কষ্ট সাবিহাকে নিত্য জ্বালাতো। সে ভেঙ্গে পড়ে।
জীবনের কাছে পরাজিত সাবিহা একদিন ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করে। এসময় তাকে সবচে বেশী সঙ্গ, সাহস, প্রেরণা যোগায় বন্ধু সোহেল। সেই সোহেল এক সময় সাবিহার সবচে কাছের মানুষ হয়।
আর মারুফ? চলে যাওয়ার ৯ মাস পর সাবিহা একদিন আকস্মিক জানতে পারে, মারুফ মারা গেছে। তার মৃত্যুটা পুরোপুরি রহস্যে ঘেরা। কেউ কেউ বলে সাপে কেটেছে, কেউ বলে, বিষ খাইয়েছে কেউ। মারুফের মৃত্যুর খবরে রাত ২টায় সাবিহা ছুটে গিয়েছিল, তার লাশের উপর আছড়ে পড়ে কেদেছে। সোহেলই তাকে নিয়ে গিয়েছিলো, সাবিহার কান্না দেখে অঝরে কেদেছে সোহেলও।
সাবিহা এখন সোহেলের। তবু সে কোনদিন ভুলতে পারেনি মারুফকে। কিছু কিছু ভালোবাসা কোনদিন ভুলা যায় না।