আমার জীবনে অনেক বিচিত্র ও মজার অভিজ্ঞতার মাঝ দিয়ে প্রায়ই যেতে হয়েছে। সেখান থেকেই কিছু ১৮+ পোস্ট আপনাদের জন্য দিলাম।
১
আমি যে স্কুলে পড়ালেখা করতাম তা সিলেটের একটি নামি-দামি স্কুল। ২০০৪ সালে যখন আমি ক্লাস এইটে পড়ি তখনকার ঘটনা। আমাদের টিফিন টাইম ছিল ১১টা থেকে ১১:২৫ পর্যন্ত। ঠিক স্কুল বিল্ডিয়ের নিচে ছিল ক্যান্টিন। ক্যান্টিনের সামনে ছেলেরা ও মেয়েরা আলাদা আলাদা লাইনে দাঁড়িয়ে টিফিন কিনে। তো সেদিন ক্যান্টিনে বিক্রি হচ্ছিল ডালপুরি। আমি লাইনে দাঁড়িয়ে টিফিন কিনার জন্য অপেক্ষা করছি। আমার পাশের লাইনে একটা মেয়ে টিফিন কিনছে। মেয়েটা সিলেটি। সিলেটিদের একটা প্রধান সমস্যা হচ্ছে শুদ্ধ বাংলায় অর্থাৎ প্রমিত বাংলায় কথা বলার সময় তারা প্রায়-ই শুদ্ধ ও সিলেটি ভাষা মিশিয়ে ফেলে। যেমন,
এই ফাল (লাফ) দিওনা।
মেয়েটা ৪টা ডালপুরি কিনল। তারপর ডালপুরি বিক্রেতাকে উদ্দেশ্য করে বলল, আংকেল একটা কিস দেন। ডালপুরি বিক্রেতাতো পুরোপুরি থ। এদিকে আমরা ফেটে পড়েছি অদম্য হাসিতে। মেয়েটা নিজেও লজ্জায় লাল হয়ে তাড়াতাড়ি পালিয়ে বাঁচল।
উল্লেখ্য, সিলেটি ভাষায় পলিথিন ব্যাগকে কিস বলা হয়।
২
আমার কলেজ জীবনের ঘটনা।
একদিন আমি বাজার থেকে হেটে হেটে বাসায় ফিরছি। পথে দেখা হয়ে গেল কিছু কলেজ ফ্রেন্ডদের সাথে। তাদের দলনেতা রফিক নামে আমার এক বন্ধু। ওরা আসছিল ক্রিকেট খেলে মাঠ থেকে।
আমাকে দেখেই রফিক বলল, দোস্ত হেব্বি একখান খেলা হইছে। অনেক কষ্টে জিতলাম। অনেক রিস্ক নিয়া খেলতে হইছে।
আমি ফাজলামি করে বললাম, দোস্ত হিরো কনডম ব্যবহার কর। হিরো থাকলে রিস্ক নাই।
রফিক: হিরো কনডমে এখন আর কাম হয়না মিয়া। হিরো কনডম দিয়া করতে গেলে দেখবা ঐটার মাথা ফুটো হইয়া গেছে। এরচেয়ে টোস্ট বিস্কুটের প্যাকেট দড়ি দিয়া বাইন্ধা ব্যবহার কর। থাইলে আর রিস্ক নাই।
আমি বললাম, তোর কথা শুনে মনে হচ্ছে তুই মনে হয় প্রায়-ই ব্যবহার করিস।
এর উত্তরে রফিক এমন কথা বলল যে আমি আর কোনদিন-ই কাউকে এই কথা বলিনি।
রফিক: মাইয়ারা যে ব্রা পড়ে এইটা তুমি কেমনে জান। কোনদিন পইড়া দেখছ নাকি।
৩
আবার স্কুল জীবনের কাহিনী। ক্লাস টেন-এ পড়ার সময় বাংলাদেশ স্কাউটসের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত লাইফ স্কিল কোর্সে অংশগ্রহণ করি। যারা লাইফ স্কিল কোর্স সম্বন্ধে জানেন না তাদের বলছি,লাইফ স্কিল কোর্সে বয়:সন্ধিতে যে সকল পরিবর্তন হয়, প্রজনন তন্ত্র, এইডস ইত্যাদি সম্বন্ধে সাধারণ পরিচিতি তুলে ধরা হয়।
বিকালে কোর্স পরিচালনাকারী রোভাররা স্কাউটদের অংশগ্রহণে একটি নাটক আয়োজন করলেন। নাটকটা এরকম:
প্রথম দৃশ্য: একজন ছেলে একটা মেয়েকে - একটা ছেলেকে কাপড় পড়িয়ে মেয়ে বানানো হয়েছিল- হাত ধরে আছে। টি-সেল লিখা কাপড় গলায় ঝুলানো কয়েকজন তাদের ঘিরে আছে। হঠাৎ এইচআইভি লিখা লাল কাপড় গলায় ঝুলানো কয়েকজন তাদের দিকে দৌড়িয়ে এসে ধাক্কা দেয় এবং টি-সেল লিখা কাপড়ওয়ালাদের বন্ধন ভেঙ্গে যায়। তখন এইচআইভি লিখা লাল কাপড়ওয়ালারা ভিতরের দুজনকে ঘিরে ধরে।
দ্বিতীয় দৃশ্য: দ্বিতীয় দৃশ্য-ও প্রথম দৃশ্যের অনুরূপ। শুধু পার্থক্যটা হচ্ছে এবার মেয়ের হাত ধরে রাখা ছেলেটার মাথায় একটা সবুজ কাপড় বাঁধা। এখন এইচআইভি লিখা লাল কাপড়ওয়ালারা টি-সেলদের ধাক্কা দিলে টি-সেলদের বন্ধন ভেঙ্গে যায় না, বরং এইচআইভি কাপড়ওয়ালারা দুরে ছিটকে পড়ে।
আপনারা নিশ্চয় বুঝে গিয়েছেন ঐ সবুজ কাপড়টা কনডমের চিহ্ণ। প্রথমে কনডম ছিল না তাই টি-সেল ধ্বংস হয়ে গিয়েছে ও এইচআইভি আক্রমণ করেছে। দ্বিতীয়বার কনডম ছিল তাই আক্রমণ করেতে পারে নি।
এরপর একজন রোভার নাটকের সবকিছু বুঝিয়ে বললেন। তারপর নাটক সম্বন্ধে কারো কোন প্রশ্ন আছে কিনা জিজ্ঞেস করলেন। একটা ছেলে উঠে দাঁড়ালো।
ছেলে: আচ্ছা, প্রথমবার এইচআইভি আক্রমণ করলেও দ্বিতীয়বার করতে পারলো না কেন।
রোভার: কারণ, দ্বিতীয়বার কনডম ব্যবহার করা হয়েছিল। মাথায় যে সবুজ কাপড় ছিল ঐটা কনডমের প্রতীক।
ছেলে: আচ্ছা, কনডম কি মাথায় পড়ে।
ক্লাসে তখন কি অবস্থা সেটা বলা বাহুল্য।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ৮:০৬