somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি অতিশয় মানবিক ফেইসবুকিয় গল্প

১১ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[প্রথমেই বলে নেই নামটা শ্রদ্ধেয় ইশতিয়াক ভাইয়ের কাছ থেকে ধার করা। তাঁর গল্পের নাম ছিল একটি অতি আনবিক ফেইসবুকিয় গল্প, আর আমারটা মানবিক। তাঁরটা মনে হয় কল্পনা প্রসূত, কিন্তু আমারটা আসলেই বাস্তব ও সত্য।

ফেইসবুক!!!! কি একখান ওয়েবসাইট বানাইছে:-*। এক্কেরে আমার প্রাণের ওয়েবসাইট । ক্য়দিন ব্যবহার কইরাই প্রেমে পড়লাম। অলটাইম আমারে ফেইসবুকে পাওয়া যায়। কয়েকদিনেই প্রায় শ'খানেক এপ্লিকেশন ব্যবহার করলাম আর ২শ গ্রুপে জয়েন করলাম। তখনকার দিনের কথা মনে হইলে এখনও আমার মনটা হু হু করে। কি দিন কাটাইছি ফেইসবুকের সাথে। হায় আল্লাহ!!! ফেইসবুকটারে তুমি কেন মাইয়্যা মানুষ কইরা জন্ম দিলানা?:(( দিলে ফেইসবুক বুঝত প্রেম কারে কয়।

একদিন পিসিতে আমার তৎকালীন প্রেমিকা অর্থাৎ ফেইসবুক ব্যবহার করছি। হঠাৎ.. একজনের প্রোফাইল পিকচার দেখলাম। ইয়া আল্লাহ। তুমি যা কর ভালোর জন্যই কর। ফেইসবুকরে মাইয়্যা বানাইলে তো আমি আর এর সাথে প্রেম করতে পারতাম না (এই ফাকে বলে রাখি আমি খুবই ভালো ছেলে। একসাথে ২টা মেয়ের সাথে কখনোই প্রেম করি না।;))। আল্লাহ! তোমারে আর তোমার উসিল্লারে ( যে বেটা ফেইসবুক বানাইছে) অশেষ ধন্যবাদ ফেইসবুকরে ওয়েবসাইট আর এই মাইয়্যাটারে মাইয়্যা বানানোর জন্য।

মানুষ এত সুন্দর হয় কেমনে?- মেয়েটার প্রোফাইল পিকচার দেখার পর বারবার আমার এইকথাটাই মনে হচ্ছিল। ফেইসবুকে অনেক মিথ্যা বা ফেইক একাউন্ট আছে- এটা জানা সত্যেও আমার মনে হল- ''এই ছবি আর এই নাম দিয়ে কেউ যদি ফেইক একাউন্ট তৈরি করে তবে সে সমস্ত জাতির সাথে বেঈমানী করেছে।X(( এইটা কোনভাবেই ফেইক একাউন্ট হতে পারে না।"
শেষ পর্যন্ত আমার অনুমানই সত্য হয়েছিল।

ভাবলাম, দেখি বিড়ালের ভাগগে শিঁকে ছিড়ে কিনা। প্রথমেই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট না পাঠিয়ে একটা মেসেজ পাঠালাম- "You are looking so innocent". মেসেজটা পাঠানোর পর আমার যে কি অবস্থা!! (কানে কানে সত্য কথাটা বলে নেই- রাতে ঘুমাতে পারি নাই)। রাত ৩টায় পিসি বন্ধ করে বিছানায় গেলাম। বিছানায় কি আর ঘুম আসে। বিছানায় যদি মনই না থাকে তবে ঘুম আসবে কোথ্থেকে। মনতো আমার ১ম প্রেমিকার কাছে থাকা ২য় প্রেমিকার কাছে। ৫ মিনিট পর পর মোবাইলে ফেইসবুকে লগ ইন করি-মেসেজের উত্তর এসেছে কিনা। ২২ ঘন্টা ১০ মিনিট আমার হৃদয় রক্তাক্ত করে উত্তর আসল। গভীর ভালবাসায় মেসেজের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। অনেক্ষণ মেসেজটা অপেন করলামনা। পড়লেইতো ফুড়িয়ে যাবে। মেসেজটা অপেন করলাম। অপেন করেই হৃদয়টা আবার রক্তাক্ত হয়ে গেল।:(( কারণ, মেসেজটাতে যা লিখা ছিল তা হচ্ছেঃ tnx. এরকম কষ্ট জীবনে বড় কম পেয়েছি। বদ মেয়েছেলে! ২টা লাইন আরেকটু বেশি লিখলে কি এমন ক্ষতি হত? এত ভালোবাসা নিয়ে আমি আমার মেসেজটা পাঠালাম,আর সে কিনা.......

অনেক চিন্তা-ভাবনা করে ২য় মেসেজটা পাঠালামঃ May I add you.

মেসেজটা পাঠানোর পর আবার কি অবস্থা হয়েছিল সেটা আর বললাম না। কিন্তু একদিন পর যেটা হইল.......:((। আমার মেসেজের বিপরীতে কোন মেসেজ এলো না। কিন্তু তার বদলে যা হলো সেটা শুধু আমার মনে আব্দুল করিমের একটা গান বারবার মনে করিয়ে দিলঃ
প্রেম সেলপিন দিল বুকে, প্রেম সেলপিন দিল বুকে মরি হায় হায়
আমার অন্তরায়, আমার কলিজায়।
মেসেজের প্রত্তুত্তরে আমি যা দেখে প্রেমে পাগলপারা হয়েছিলাম- সেই প্রোফাইল পিকচারটা পরিবর্তিত হয়ে এই আকার ধারণ করল।


এখন আপনারাই বলেন, এই অবিচার কি মেনে নেয়া যায়X(। না যায় না। চিন্তা করলাম গম্ভীর কিছু লিখে পাঠাই। আমি দেখেছি আমার গম্ভীর কথায় প্রায়ই কাজ হয়। যেই ভাবা সেই কাজ। লিখলামঃ 'অ্যাড করতে বলায় প্রোফাইল পিকচার সরিয়ে ফেললেন না সুন্দর বলায় সরিয়ে ফেললেন। যদি অ্যাড করতে বলায় এ কাজটি করে থাকেন তাহলে আমার কিছু বলার নেই। আর আমাকে অ্যাড করার দরকার নেই। আর যদি সুন্দর বলায় এ কাজটি করে থাকেন তাহলে আমি আপনার উপর রাগান্বিত। যদিও জানি আপনার উপর রাগ করার আমার কোন অধিকার নাই। আমি রাগান্বিত কারণ আমি বিশ্বাস করি একজন সুন্দর মানুষকে সুন্দর না বলা অপরাধ। ভালো থাকবেন।'

এই মেসেজটাতেই চিড়া ভিজল। একদিন পরেই এলো সেই বহু আকাংক্ষিত ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। সাথে সাথেই কনফার্ম।

''এই সুজ....ন! এদিকে আয়।"

ইশ! আম্মুটা না কি বিরক্ত করে। ১ম প্রেমিকাকে বন্ধ করে গেলাম। গিয়ে দেখি অবস্থা সিরিয়াস। কাহিনীর সাথে সম্পর্ক নাই বলে কেন সিরিয়াস সেটা আর লিখলাম না। যেতে হলো নানা বাড়ি। নানা বাড়ি আবার পিসি নাই। তাই মোবাইল-ই ভরসা। নানা বাড়িতে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় ফেইসবুকও বেশি ব্যবহার করতে পারলাম না। তবে এর মাঝেই চলল আমাদের পিচ্চি সাইজ মেসেজ আদান-প্রদান। প্রথমে আমি আমার পরিচয় ভালো করে তাকে দিলাম। কি করি, কোথায় পড়ি-এইসব হাবিজাবি। সে-ও তার পরিচয় দিল। পুরো পরিচয়টা আপনাদের দিলাম না। শুধু এইটুকুই বলি-
আমার বয়স তখন ছিল সদ্য আঠারো, আর মেয়েটাও সদ্য তার আঠারোতম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করেছে। আর যে ছবি দেখে আমি পাগলপারা হয়ে ছিলাম তা ফটোশপে এডিট করা।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:৩৭
৩৪টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×