১৪২২ঃ
উৎসবমুখোশ পরিবেশে আবার উদযাপিত হবে পহেলা বৈশাখ। শহুরে দুঃখের বোঝা বইতে বইতে সুখের খোঁজে উন্মাদ মস্তিষ্ক মেতে উঠবে জোর-জবরদস্তি সুখী হওয়ার প্রয়াসে। ঝরে পড়া অজস্র অশ্রু ভুলে জোর করেই হয়ত কোন এক ললনা লাল শাড়িতে ঘুরে বেড়াবে রাজপথে, কোন তরুণ যূবার ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্নের আস্তাকুঁড়ে হয়ত প্রদীপ জ্বালাবে বৈশাখের প্রথম ভোর। আমরা জোর করে সুখ হাতাব, মুখোশ এঁটে হব সুখী মানুষ।
পাহাড়ের কোন এক নিষ্ঠুর কোণায় এক চোখ পানি নিয়ে আধমরা পড়ে থাকবে ছিঁড়ে যাওয়া রক্তজবা- উপজাতি কন্যা, তিস্তার শুকিয়ে যাওয়া পানিতে ঘোলা চোখে স্বপ্ন ভাসিয়ে দেবে কৃষকের দল, রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে লোভী চোখ খুঁজে বেড়াবে সম্ভ্রম বিক্রি করে খাওয়া অভাবী হাসনাহেনা, ধর্মের হাতে বলী হবে অবিশ্বাসী মানুষ, অবিশ্বাসীদের হাতে হেনস্তা হবে মানুষের বিশ্বাস... প্রত্যহ এভাবে চলতে চলতে স্বার্থের হাতে খুন হয়ে গেছে হৃদয় নামের ঐ কালপ্রিট, হারিয়ে গেছে সুখ। সুযোগসন্ধানী মস্তিষ্কটাও ক্লান্ত হয় সুযোগ খুঁজতে খুঁজতে, হৃদয়হীন বাস্তবতায়ও অভাব পড়ে সামান্য সুখের। অধমের এই মানচিত্রে যখন পদচিহ্ন আঁকেনা কোন সুখী মানুষ, তখন ঐ মুখোশটাই সম্বল- জাতিগত সুখ প্রদর্শনের।
তারমানে কী দুঃখী হয়ে বসে থাকব? না, শেষ মানেই শেষ নয়, শেষ থেকেই শুরু হয় নতুন পথচলা... এ মাটিতে সুখ আছে, এ মাটি বন্ধ্যা নয়, এখনও ফসল ফলে। বৃষ্টি হয় এখনও, ফুরফুরে বাতাসে উড়ে লাল-সবুজের ঐ কেতন। সবসময় নিজে হেসেই সুখী হওয়া লাগেনা, আরেকজনের কান্না মুছেও সুখী হওয়া যায়। এ দেশকে, এ দেশের মানুষকে ভালবেসে সুখ খুঁজি চল, মুখোশের আর দরকার হবেনা।
"মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,
অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা"- শুভ নববর্ষ।।