প্রতিদিন নতুন নতুন প্রযুক্তির পরিবর্তনের ফলে পৃথিবী দ্রুত বদলে যাচ্ছে। প্রযুক্তিগত এই অগ্রগতির সাথে তাল মিলাতে গিয়ে বাংলাদেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এইসব পরিবর্তনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে দেশের আইনি ও নিয়ন্ত্রন কাঠামোকে সাজানোর জন্যে বাংলাদেশ 'ডেটা সুরক্ষা আইন' তৈরির লক্ষে কাজ করছে।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, সব বিদেশি কোম্পানিকে বাংলাদেশের ভেতরে ডেটা সেন্টারে তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে। কোন ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ বা সংরক্ষণ করতে হলে তার সম্মতি থাকতে হবে। ব্যবহারকারীর সম্মতিপত্র ছাড়া কোন স্পর্শকাতর তথ্য সংগ্রহ করা যাবে না। যেসব তথ্য বা উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে, তা সংগ্রহকারীর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক হতে হবে। অপ্রয়োজনীয় কোন তথ্য সংগ্রহ করা যাবে না।
বাংলাদেশ চায়, দেশের ভেতর থেকে যারা ফেসবুক ইউটিউবে সহ বিভিন্ন ধরণের এপ্স ও প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন তাদের তথ্যগুলো দেশের ভেতরেই সংরক্ষণ করা হোক। এই আইন বাস্তবায়ন হলে দেশের নাগরিক এবং প্রতিষ্ঠানের তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহজ হবে এবং বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহারকারীদের তথ্য অনুমতি ছাড়া বিক্রি করতে পারবে না।
বিদেশি প্রতিষ্ঠানের তথ্য-উপাত্ত রাখতে বাংলাদেশের ডেটা সেন্টার তৈরি করতে হবে না কারণ বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে একাধিক ডেটা সেন্টার রয়েছে। এবং এই লক্ষে বাংলাদেশ অবকাঠামো গত অনেক উন্নয়নও করেছে এবং করছে। আবার বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
বাংলাদেশের সরকার 'ডেটা সুরক্ষা আইন' প্রণয়নের যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে আপত্তি করেছেন আমরিকার রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তিনি বলেছেন, এ ধরণের আইন প্রণয়ন করা হলে আমেরিকান যেসব কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যবসা করছে তারা বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে পারে। এটাকে এক ধরণের হুমকিই বলা যায়।
আমার কথা হলো বাংলাদেশ 'ডেটা সুরক্ষা আইন' করলে আমেরিকার আপত্তির কারণ কি? তারা সারা পৃথিবীকে গণতন্ত্রের ছবক দিয়ে বেড়ায়, এটা তাদের কি ধরণের গণতান্ত্রিক আচরণ?
প্রত্যেকটা দেশেরই তো অধিকার আছে তাদের নাগরিকদের তথ্য নিজেদের দেশের ভেতরে রাখতে চাওয়ার। আমেরিকা তাদের দেশের নাগরিকদের তথ্য তো সারাবিশ্বে ছড়িয়ে রাখে না। তাহলে বাংলাদেশের নাগরিকদের তথ্য দেশের ভেতরে রাখতে চাইলে তাদের সমস্যা কেন? অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানই সিঙ্গাপুরে ডেটা সেন্টারে তথ্য সংরক্ষণ করে আঞ্চলিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। সেখানে রাখতে পারলে বাংলাদেশে রাখতে সমস্যা কোথায়?
বাংলাদেশে এধরণের ব্যবস্থা চালু করা গেলে তো প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ আরো একধাপ এগিয়ে যাবে এবং তা দেশের অর্থনীতি বিকাশেও তা ভূমিকা রাখতে সহায়ক হবে।
সামুর একজন সচেতন ব্লগার হিসেবে বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:২১