গোবর্ধন এখন গুম…
তো বেশ কিছুদিন ধরিয়া গোবর্ধনের সহিত কোনো দেখা সাক্ষাত হয়নি।ভাবিলাম,দোস্ত আমার গুম হইয়া গেলো নাকি।কিন্তু তা হয়নি।
এরিমধ্যে একদিন ভরদুপুরে রাস্তা ধরিয়া হাটিতেছিলাম।তৎক্ষনাত দেখিলাম গোবর্ধন একখানা কাচ্র ঘেরা দোকানের ভিতর উকি মারিতেছে।আমি তাহার নিকট গেলাম,এবং তাহার পৃষ্ঠদেশে হাত রাখিলাম,আর তাতে সে ভীত হইয়া হচকচাইয়া উঠিলো।পিছে তাকাইয়া আমাকে দেখিয়া সে ভরসা পাইয়া বলিলো,
ও দোস্ত,তুই…
আমি তাহাকে আশ্বাস দিয়া বলিলাম,হ দোস্ত আমি।কিন্তু তুই এইখানে বাইকের শো-রুমের সামনে কি করোস।
দোস্ত একখানা মুচকী হাসি দিয়া কহিলো,
দোস্ত একখানা অতি গুপনীয় কাহিনী ঘইটা গেছে।
আমি তো নাই,বলিলাম,কি হইছে রে দোস্ত।
সে বলিলো,তার সাথে নাকি কোন মেয়ের প্রেম নিবেদন চলিতেছে।
অতপর আমি বলিলাম
অতপর আমি বলিলাম,
বড়ই মধুর সন্দেশ দোস্ত,তা প্রেমের সাথে এই বাইকের দোকানে কি সম্পর্ক।
গোবর্ধন তাহার মুখখানা সাড়ে তিন ইন্চি করিয়া বলিলো,দোস্ত আমার গার্লফ্রেন্ড বলছে,৭ দিনের মধ্যে বাইক কিনতে হইবে।নাইলে নাকি সে আমার সাথে আর থাকবে না।
আমি বিদ্বান এর মত একখানা ভাব লইয়া বলিলাম,বড়ই চিন্তার বিষয়।তা কি করবি ঠিক করছোস!
সে বলিলো,বাইক কিনবো।
আমি জিজ্ঞেস করিলাম,টাকা আছে কত?
সে উচ্ছলিত কন্ঠে জবাব দিলো,
তা দোস্ত একেবারে কম নাই।ভালোই টাকা আছে।
আমি বলিলাম,আরে বেডা আছে কত?
সে বলিলো,সে তাহার মোবাইল খানা বিক্রি করিয়া পাঁশত টাকা পাইয়াছে,এর বাহিরে তাহার কাছে সাতাশ শত টাকা ছিলো।এই মোট বতিশ শত টাকা।
আমি বলিলাম,তা দোস্ত কি বাইক কিনবি?ফোনিক্স নাকি সানসি
সে বলিলো,আরে দোস্ত সাইকেল কিনুম না তো।বাইক কিনুম,বাইক…ঐ যে কালা কালা এক পদের বাইক আছে না।আলসার নাম…
মনে মনে বলিলাম,খাদ্য গ্রহন করে খয়রাত করিয়া,আর পাদ প্রদান করে,লন্ঠন জ্বালাইয়া।
।কি যে কস দোস্ত,ঐসব বাইকের দিন আছে নাকি।এতগুলা টাকা দিয়া ঐসব ভুয়া বাইক কেনার দরকার নাই।তার চেয়ে তুই একটা সানসি সাইকেল নিয়া বাসায় চইলা যা।
সে কহিলো,না রে দোস্ত হেতি কইছে,বাইকই লাগবো।
আমি অতপর তাহাকে বুঝাইআ বলিলাম,যে তাহার কাছে যে টাকা আছে,তাতে আলসার বাইকের হেডলাইটটাঅ হইবে না।
সে আমার কথায় আশাহত হইলো,তাহা আমি ভালো করিয়াই বুঝিলাম।তাই তাহাকে বলিলাম,
দোস্ত আমার কাছে একখান আইডিয়া আছে।
গোবর্ধন আকাশে চাঁদ হাতে পাওয়ার এক্সপ্রেশন দেখাইয়া কহিলো,কি আইডিয়া দোস্ত।
আমি বলিলাম,একটা কাম করলে ক্যামন হয়।আমি তোরে গুম কইরা ফালাই।তারপর তোর বাপের কাছে ফোন কইরা বলি,যে তুই গুম হইয়া গেছোস।৩ লাখ টাকা না দিলে,ছাড়বো না।
গোবর্ধন তখন আবেগে কান্দিয়া ফেলিলো,এবং আমাকে তাহার প্রাণের চেয়ে প্রিয় ভাই বলিয়া সম্বোধন করিলো।
যেই চিন্তা সেই কাজ,
ক্রিং ক্রিং কুট কুট
ক্রিং ক্রিং কুত কুট
-হেলো কেডা কইতাছেন?
-আমি নাককাডা মহসীন।(মোটা গলায়)
-তা আমার কাছে কি?নিচের গুলাও কাডা লাগবে নাকি!
-আরে না,আমি আপনার ছেলেরে কিডন্যাপ করছি।৩ লাখ টাকা নিয়া অমুক জায়গায় আইসা পড়েন।নাইলে ছেলের লাশ পাইবেন।
গোবর্ধনের বাপ আবেগে কান্দিয়া দিয়া যাহা কহিলো,তাহা শোনার জন্য আমি কিংবা গোবর্ধন কেউ ই প্রস্তুত ছিলাম না।সে বলিলো
-আমনে আমার ধম্মের ভাই।আমনেরে আমি আর এক লাখ টাকা বেশী দিমু,ওরে আমনের কাছেই রাইখ্যা দেন।নাইলে খুন কইরা ফালান।
গোবর্ধন তাহার পিতার এইরুপ আচরনে বিশেষ ব্যাথিত হইলো,তাহা ভালো করিয়াই বুঝিলাম।
সে উঠিয়া কহিলো,চল দোস্ত একখান সাইকেলই কিন্যা আনি।
আমি তাহাকে সতেরোশো টাকা দিয়ে infinity handed এর একখানা সাইকেল কিনিয়া দিলাম,আর পনেরোশত টাকা তাহাকে খুন না করা বাবদ কমিশন সাদরে গ্রহন করিয়া সুর্যাস্তের পুর্বেই বাসার জন্য রওয়ানা করিলাম…