somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গোবর্ধন আমি আর হোটেল রেডিসন

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গোবর্ধন,আমি আর হোটেল রেডিসন

তো সেইবার অপরাহ্নের বেলায় পদ্মপুকুর পাড়ে বসিয়া গোবর্ধনের সহিত আড্ডা দিতেছিলাম।তো আড্ডার এক পর্যায়ে গোবু এক অদ্ভুত প্রস্তাব দিয়া বসিলো যে বিনা নিমন্ত্রনে বিয়ের দাওয়াত খাইবে,আর আমাকেও তাহার সহিত যাইতে হইবে।আমি অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় হওয়ায় তাহার প্রস্তাবে অসম্মতি প্রদান করিলাম।কিন্তু দোস্ত আমার নাছোড়্বান্দা,সে যেইটা বলিবে,তাহাতে না করিবার সাধ্য তাহার পিতার ও ছিল বইলা আমার জানা নাই।যাই হোক,রাজি হইল্ছিলাম।তো তারপর সে বলিলো,সে ফাইভ স্টার হোটেলে বিয়ে খাইতে যাইবে।তাহার কথা শুনিয়া আমার তো মুত্রবিসর্জনের উপক্রম হইলো।কারণ চায়ের দোকানে খাইতে গেলেও আমি আগে আমার পকেট চেক করি,যে টাকা নিয়া গেছি কিনা।পরে আবার অপমানিত হইবো কিনা এই ভয়ে।
তো যাই হোক,সে আমাকে আশ্বাস দিয়া বলিলো,আরে বেটা আমি আছি তো।ন টেনশন।
দিনক্ষন ঠিক হইবার পর থেকেই প্রস্তুতি নেয়া শুরু করিলাম,এই বন্ধুর বাসা থেকে প্যান্ট,ঐ বন্ধু বাসা থেকে শার্ট,ওর বাসা থেকে ব্লেজার(আর গভীরে না যাই)।
তো নির্ধারিত দিনে হোটেল রেডিসনের সামনে উপস্থিত হইলাম,কিছু সময় পরে গোবুর আগমন ঘটিলো।তিন বছরের বাচ্চা যেইরুক তাহার বাবার হাত ধরিয়া হাটে,আমিও ঐরুপ গোবুর হস্ত খানা আকড়াইয়া ধরিয়া হোটেলে ঢুকিলাম।
তো হোটেলে ঢুকিবার পর সময়ের সহিত আমার অঙ্গ প্রত্যঙের ভাইব্রেশন সমাণুপাতিক হারে বাড়িতে লাগিলো।এইভাবে কিছু কাল অতিবাহিত হইবার পর গোবু বলিলো,চল বরের সাথে সেলফি তুলি,তো যেই কথা সেই কাজ।বরের সামনে যাইয়া নানারুপ অঙ ভঙিমার সাথে আধ কেজি ওঞনের হাসির সহিত গোটা দশেক সেলফি তুলিলো।অতপর সে বলিলো চল খাইতে বসি।অতি উত্তম প্রস্তাব,একটা সুন্দর দেখিয়া একখানা টেবিলে আসন গ্রহণ করিলাম।টেবিলের উপর একখানা প্লেট ব্যাস্তানুপাতিকে রাখা,তাহার দুই পাশে একখানা কাটা চামচ,আর একখানা আকাটা চামচ রাখা।মায়ের হাত ছাড়া জীবনে ভাত খাই নাই,আর আজকে খাব চামচ দিয়া…!ভাবিতেই আমার শরীর শিউরাইয়া উঠিলো।পরমুহুর্তেই মনে হইলো,চিন্তা কিসের।গোবু আছে তো।ও যা করিবে আমিও তাহাই করিবো।তো গোবুরে দেখিলাম সে চামম্চের গুষ্ঠি উদ্ধার করিয়া চিকেন এর গুষ্ঠি উদ্ধার করা শুরু করিয়া দিলো,তাও তাহার হস্ত খানা ব্যাবহার করিয়া।আমি আর কি করিবো,বাধ্য বালকের ন্যায় তাহাকে অনুসরন করিলাম।মনের সুখে মুরগীর গুষ্ঠি উদ্ধারকার্য করিতেছি,তো খানিকক্ষন পরে এক সুন্দরী ললনার আগমন ঘটিলো,সে আসিয়া গোবর্ধনকে উদ্দেশ্য করিয়া বলিলো আপনি কোন পক্ষ?আর জানেন না চিকেন চামচ দিয়া খাইতে হয়।এইরুপ প্রশ্ন শুনিয়া আমি তো নাই।তো যা দেখিলাম,গোবর্ধন উঠিয়া দাড়াইলো,একখানা টিস্যু দিয়া মুখ মুছিয়া মেয়েটার দিকে(অবশ্য গোবু যে মেয়েটার চোখের দিকে তাকায় নাই,তাহা আমার স্পষ্টই মনে আছে) তাকাইয়া বলিলো,

এই যে ম্যাডাম কোনটা কীভাবে খাইতে হয়,আর কোনটা কীভাবে চাবাইতে হত,তাহা আমি খুব ভালো করিয়াই জানি।আর আমি রোজ যেইসব হোটেলে সকালের নাস্তা করি,সেইসব হোটেলের মেয়ে ওয়েটার ও তোমার থেকে স্মার্ট।এইরুপ অপমানিত হইবার পর,ললনা তাহার আধ ইন্চির ওড়না খানা দিয়া তাহার মুখ চাপিয়া ধরিয়া ঐ স্থান পরিত্যাগ করিলো।আর গোবুর এইরুপ জবাবে মেয়েটার মোক্ষম শিক্ষা হইছে ভাবিয়াই আমার গর্বে ফুলিয়া উঠিলো(বক্ষ)।আমার যতদুর মনে পড়ে গোবু আজীবন নাট্টু মামার চায়ের দোকানে বাকিতে নাস্তা সারিয়া আসিছে।ও যে ফাইভ স্টার হোটেলেও নাস্তা করে,এই কথা আমার জানা ছিলো না।যাই হোক,পুনরায় মুরগীর গুষ্ঠি উধার কার্যক্রম শুরু করিলাম আর ভাবিলাম…
গোবু তোমরা বেঁচে থাকো।তোমরা আছো বলিয়াই আমরা আছি।
গোবু তোমরা দীর্ঘজীবী হও..…
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×