তো সেইবার গোবু নিখোজ হইবার পর সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়িয়াছিলো।কিন্তু আল্লাহর রহমত বেশীক্ষন বর্ষিত হইলো না।সপ্তাহ দুয়েক বাদে সে ফিরিয়া আসিলো।আসিয়াই তাহার বাবার সহিত কলহ লাগাইয়া দিলো।তাহার নাকি কিছু টাকা দরকার,ব্যাবসা শুরু করিবে।কিন্তু তাহার বাবা ইতোপূর্বে তাহাকে ব্যাবসার নামে প্রচুর অর্থ প্রদান করায়,এইবার আর ভরসা পাহিলো না।তো গোবু শেষ্মেষ আমার শরনাপন্ন হইলো।কি আর করিবো।শত হইলেও আমার ডায়পার কালের দোস্ত।তাই তাহাকে কিছু অর্থ দিয়েছিলাম।
তো সে তার প্রতিশ্রুতি যথার্থ ভাবে রক্ষা করিলো।আমি তো অবাক নয়নে চাহিয়া রইলাম তাহার দিকে,আর শুধাইলাম দোস্ত ক্যামনে?
তো সে বাজখাই কোম্পানির একখানা হাসি দিয়া বলা শুরু করিলো।
শোন দোস্ত,ব্যাবসা হইলো বুদ্ধির খ্যালা।যার যত বুদ্ধি,ব্যাবসায় লাভ তার তত বেশী।
আমি বলিলাম,দোস্ত ভনিতা না কইরা বল কিসের ব্যাবসা…
সে বলিলো,নতুন একটা গ্যারেজ দিছি।
আমি বলিলাম,এইটা আর এমন কী?তারপর?
সে বলিলো আরে গ্যারেজ কোথায় দিছি,শুনবি না?অমুক গার্লস স্কুলের সামনে গ্যারেজ দিছি।
আমি শুধাইলাম,এই তোর বুদ্ধি!গার্লস স্কুলের সামনে গ্যারেজ দিয়া কি লাভ?ওরা কি সাইকেল চালায় নাকি!
সে বলিলো,তুই শালা আজীবনই বোকা রইয়া গেলি।আরে বলদ,জানোস না,পোলাগো সাইকেল গার্লস স্কুলের সামনে আইয়াই নষ্ট হয়।সাইকেলের চেইন পড়ে,পান্চার হয়,সব যাইয়া গার্লস স্কুলের সামনে…
আমি অপমানবোধ করিয়া বলিলাম,বাহ,এতদিনে ভালো একটা ব্যাবসা দিলি।একবার যাইয়া দেইখা আসতে হবে।
তো সেইদিন অমুক গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের সামনে আসিয়াই আমার সাইকেলের চাকা পান্চার হইলো।ভাবিলাম সামনেই তো গোবুর গ্যারেজ।ঐখানে যাইয়াই সাড়াবো।
তো গেলাম।যাইয়া বলিলাম,দোস্ত পান্চার হইছে,ঠিক কর তো।বলিয়া পাশের একটা বেন্চিতে আসন গ্রহন করিলাম।
আধা ঘন্টা পর,সে বলিলো,দোস্ত কাজ হইয়া গেছে।সাড়ে চারশো টাকা বিল হইছে।
আমি তো যেন আকাশ থেকে উলটা ভাবে পড়ার মত বোধ করিলাম।সাইকেলের পান্চার ঠিক করতে সাড়ে চারশো…!
আমি তাহাকে শুধাইলাম,এত টাকা কিসে লাগলো…
সে বলিলো,আরে অনেক কাজ করছি।তুই এইসব বুঝবি না।
কি আর করিবো,পাচশো টাকার একটা নোট ধরাইয়া দিয়া পন্চাশ টাকা চাহিলাম।তো সে বলিলো।
এই যে সিগারেট খাইলি,চা খাইলি তাতে ৫০ টাকা হইছে।
আমি কিছু না বলিয়া সাইকেল খানা,কাধে উঠাইয়া বাসার দিকে রওয়ানা করিলাম আর বলিলাম…
হরি দিন তো গেলো,সন্ধ্যে হলো,পাড় কর আমারে…