যখন এ পর্ব লিখব লিখব মনে করছি তখন সংশ্লিষ্ট প্রধান সংস্থা বিপিডিবি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবনা রেখেছে। বানিজ্যিক পর্যায় বলে বিশেষায়িত করলেও তা্র যে সর্ব ক্ষেত্রেই প্রভাব তা সহজেই অনুমেয়।বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর দাম বৃ্দ্ধি মানে আপাত ভাবে সরকারের আয় ব্যয়ের একটা স্বমন্বয়ের সুযোগ মাত্র যদিও দারিদ্র্য বিমোচন, মধ্য আয়ের দেশ,শিল্প নির্ভর স্বপ্নের সাথে তার দূরত্ব যোজন যোজন মাইল। মোটা দাগে বলা যায় অর্থনৈতিক চরমাবস্থা, রাজনৈতিক ও সামাজিক সুস্বপ্নকে চুরমার করে অপেক্ষাকৃ্ত দূর্বল গণতন্ত্রের দেশকে অস্থিতিশীল করবে। এমন এক সময়ে এসে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে যখন উৎপাদন ছাড়া সরবরাহ আর বিপণনের ক্ষেত্রে আগ্রহ কম বা অস্পষ্ট এবং প্রান্তিক পর্যায়ে সেবার মান আর গ্রাহক বৃ্দ্ধির ইচ্ছা অনুপস্থিত। অন্য দিকে যে ব্যক্তিটি বিদ্যুৎ পেলনা সেও এর মুল্য বৃ্দ্ধি জনিত প্রভাবে বাজারে গিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ, এবং নিম্ন ও স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য তা পর্বত সম।
তবুও পণ্য হিসাবে এবং প্রতিশ্রুত পরিকল্পনার দিক ভেবে যদি বিদ্যুতের মূল্য বাড়াতেই হয় তবে মনে রাখতে হবে সরবরাহের মান, অর্থনৈতিক প্রভাব এবং উৎপাদন খাতে এর যথাযোগ্য ব্যবহার। প্রস্তাবনায় বৃ্দ্ধির রোড ম্যাপে এ গুলোর ব্যাপারে যথাযথ আলোচনা আশা করেছিলাম এবং কৃ্ষি, শিল্প, সমাজ কল্যান বিষয়ক স্বমন্বয় প্রয়োজন ছিল।
একটু অন্য দিকে মুখ ফিরানো যাক, আমাদের জাতীয় আচারণে অসহিষ্ণুতা,অবকাঠামোগত দূর্বলতা, জ্বলানী স্বল্পতা, সর্বক্ষেত্রেই অব্যবস্থাপনার কারণে সাধারণ মানুষ প্রকৃ্ত উৎপাদনশীল খাতে সম্পৃক্ত হবার সাহস করছেনা, বানিজ্যিক ব্যাংকে ক্রমাগত সুদের হার পতনের জের ধরে ছুটে চলেছে পুঁজি বাজারের দিকে।আর জনতার পুঁজি যারা গ্রহণ করছে তারা উৎপাদনকে প্রাধান্য না দিয়ে ঘুরে ফিরছে পুঁজি বাজারের অলিতে গলিতে যার ফলে বাজার আজ প্রকৃ্ত বৈশিষ্টহীন তথাকথিত পুঁজি বাজারে পরিণত হয়েছে।।যেখানে ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলেছে বিনিয়োগকারীর জন্য এক মুখি পথ সেখানে সংশ্লিষ্ট সংস্থা গুলো দূষছে বেচারা বিনিয়োগকারীকে ।এ দায় যেমন মূদ্রা নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থার ঠিক তেমন বাজার নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থার, বানিজ্যিক ব্যাংক এবং সরকার নামক যন্ত্রের।
যদি বিদ্যুৎ আর অবকাঠামোর কথা আজও চিন্তা করা যায় তবে খুব নিকট ভবিষ্যতে দেখা যাবে মানুষ তার জনশক্তি ঘন্টা নষ্ট করে কেবল পুঁজি বিনিয়োগ করে বসে না থেকে পুরো দেশকেই উৎপাদনের কারখানায় পরিণত করেছে। পুঁজির প্রবাহ আর উৎপাদনের গতি অর্থনীতিকে বেগবান করেছে। এখন যারা এ ব্যপার গুলো দেখ ভাল করছেন তাঁদের পরিচর্যার ধরণে হাজারো সমস্যা আছে, যেমন বলা যায় পুস্তকি জ্ঞানকে ব্যবহারিক ভাবে প্রয়োগ যোগ্য করবার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে পারছেন না তাঁরা।আই এম এফ, আর বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের চাহিদা ও ভাগ্য নিয়ে কাজ করবেনা ফলে তাদের ফর্মুলা বাংলাদেশ উন্ন্য়নের জন্য হাজারটা পদ্ধতির একটা হতে পারে প্রধানটা নয় কোন মতেই।ঋনের প্রবাহ ও সহায়তা কমলেও আমরা ওদের ফর্মুলা নিতে আগ্রহী কারণ এতে ব্যর্থতার দায় এড়ানো যায় আর টেকসই ব্যবস্থাপনা বা পরিকল্পনার জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে শ্রম দিতে হয়না। বিশ্বায়নের চাপে তাই প্রতি দিনই হারিয়ে যাই আমরা নিজের অজান্তে-----------
(চলবে--------------)