somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্ষমাতায়ন ও সাধারন জনগণ

০২ রা জুলাই, ২০১২ রাত ৩:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একসময় প্রকৃতি মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করত। আজ কালের পরিক্রমায় মানুষ প্রকৃতিকে নিয়ন্তণ করে। মানুষ প্রথমে দলবদ্ধভাবে গুহায় বসবাস করত। সে দলে একজন দলনেতা ছিল। সভ্যতার বিবর্তনে মানুষে নানা গোষ্ঠির সৃষ্টি হয়। সৃষ্টি হয় নানা সাম্রাজ্য। কিছু মানুষ তার বুদ্ধির জোরে সে সকল সাম্রজ্যের মালিক হয়। পরিচিত হয় রাজা, সম্রাট নামে। সৃষ্টি হয় পৃথিবীতে শ্রেণীপ্রথার। উঁচু-নিচু, ছোট-বড়, কালো-সাদা, বেটে-লম্বা, রাজা-প্রজা সহ আরও অনেক শ্রেণীর। সৃষ্টি হয় শ্রেণী বৈষম্যের। যারা উঁচু:-/ জাতের ছিল তারা শুরু করে নিচু:-/ জাতের মানুষকে খাটানো। তাদের মনমত না হলে বেছে নেয় অত্যাচারের হাতিয়ার।

একসময় রাজারাই ছিল রাজ্যের মালিক। বলা হয় রাজ-বাড়ীর সামনে দিয়ে নাকি জুতা পরে যাওয়া যেত না। রাজাদের কুর্নিশ করে চলতে হত। রাজহুকুম না মানলে মেনে নিতে হত নির্মম অত্যাচার, কিংবা সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড।

সে যুগে রাজা বলত প্রজারা শুনত। কিন্তু প্রজারা খুব একটা বলার সুযোগ পেত না। রাজার ছেলে রাজা হত। প্রজা কখনও রাজা হয়েছে তা গল্পে শুনা গেলেও বাস্তবে তা হয়েছে বলে কখনও শুনেনি।

আজ যুগ বদলেছে। নেই সে রাজা-প্রজা। কিন্তু সৃষ্টি হয়েছে নতুন ক্ষমাতায়ন, রাষ্ট্রের সরকার।

আগে ফসল-ফলাদি রাজাদের কর দিতে হত। এখন দিতে হয় টাকা, পার্থক্য শুধু এতটুকুই।

মানুষ একজন রাজাকে কুর্নিশ করত। আজ হাজারও রাজার জন্ম হয়েছে সমাজের স্তরে স্তরে। যাদের প্রতিনিয়ত কুর্নিশ করে পথ চলতে হয়। আগে শোষণ করত একজন। এখন যে যারে যেমনে পারে করে।

রাজাদের আমলে আর যাই হোক প্রজারা চাইলে রাজ দরবারে গিয়ে সরাসরি তাদের অভাব- অভিযোগ শুনাতে পারত। কিন্তু আজকের এই আধুনিক সভ্যতার দিনে সরকার প্রধানের কাছে তো দূরে থাক, তার মন্ত্রী-আমলাদের কাছে পৌঁছানো কতজনের পক্ষে সম্ভব হয়, তা আপনারা ভালই জানেন।

সে যুগে হত্যার বিচার প্রকাশ্যে হত যাতে কেউ হত্যা করতে ভয় পায়। আজ প্রকাশ্যে তো দূরের কথা বিচারের আশায় বছরের পর বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়।

মানুষকে আগে যুদ্ধ করতে হত প্রকৃতি, শত্রু, রোগ-শোকের বিপক্ষে। এগুলোর বিপক্ষে এখনও মানুষ কম-বেশি লড়াই করে। কিন্তু নতুন যোগ হয়েছে ক্ষুধা-দ্রারিদ্র্য, নব্য সাম্রাজ্যবাদ ইত্যাদি।

তখনকার রাজারা সৈন্য দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে আরেক রাজ্য দখল করত। আজ করে পণ্য দিয়ে।

একসময় রাজ্যের অধিকাংশ সম্পদের মালিক ছিল রাজার ও তার আমিররা। আজও অল্প কিছু মানুষের(মাত্র ২%) কাছে পৃথিবীর ৯৮% সম্পদের মালিকানা ।:-/

সকল ক্ষমতার অধিকারী ছিল রাজা'রা। আর স্বাদ ভোগ করত তার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু বর্তমানে শুধু পরিবারের সদস্যরা নয়, আত্মীয়-স্বজন, আত্মীয়'র আত্মীয়, পরিচিত সহ নানা তোষামদকারী এমনকি বাড়ির কাজের লোকেরাও ভোগ করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট।

আগে ট্যাক্স দিতে হত একজনকে। এখন কতজনকে দিতে হয় তার ইয়াত্তা নাই।

রাজ পরিবারের লোক মসনদের উত্তোরাধিকার পেত। এখনও তা হয়।

তবুও মানুষ দুইবেলা দুইমুঠো খেয়ে পড়ে নিশ্চিনতে শান্তিতে ঘুমাতে পারত। এখন তাও পারে না।

সভ্যতার পর সভ্যতা তৈরি হয়। তবু নিয়ম বদলায় না। বদলায় শুধু ক্ষমতায়নের ধরন। কিছু মানুষের ভাগ্য খালি উন্নতির শিখরে পৌঁছতেই থাকে। কিন্তু সাধারন মানুষের ভাগ্যের শিকে ছিড়ে না। তবু দিন বদলের আশায় বুক বাধি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১২ রাত ৩:৫৬
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×