somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিবর্তনবাদের কোন প্রমাণ আছে কী?

১২ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"বিবর্তনবাদ কেবল একটি থিয়োরী, এর কোন প্রমান বিবর্তনবাদীরা দিতে পারবে না।"-- এই কথাটিই সৃষ্টিবাদীরা অনবরত বলে যাচ্ছে।

প্রথমত, আমাদের বুঝতে হবে "বিবর্তন" বলতে কী বোঝায়। আরো বহু শব্দের মতই এরও একাধিক অর্থ আছে। জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে "কালানুক্রমে এলিল বীপ্সার পরিবর্তন" কেই বিবর্তন বলা হয় (a change in allele frequency over time)। এই সংজ্ঞা অনুযায়ী বিবর্তন একটি অবিসংবাদিত সত্য। তবে অধিকাংশ মানুষই বিবর্তন বলতে কমন ডিসেন্ট বা একটি অভিন্ন পূর্বপুরুষ থেকে সকল জীবন উৎসারিত, এই তত্ত্বকেই বুঝে থাকেন। অনেকেই মনে করেন যে এই মতটিকে সত্য বলে গ্রহণ করবার মত যথেষ্ট প্রমাণাদি রয়েছে। তবে, অভিন্ন পূর্বপুরুষের তত্ত্বই বিবর্তনবাদ নয়, এটি বিবর্তনের একটি অংশমাত্র। বিবর্তনবাদ শুধু এটুকুই বলে না যে জীবন বিবর্তিত হয়েছে, বরং তা আরো বলে যে কীভাবে প্রাকৃতিক নির্বাচন, জেনেটিক ড্রিফট, এবং মিউটেশন বিবর্তনে ভূমিকা রাখে। জীব বিবর্তনের ব্যাখ্যায় এসব বিষয়ের বিবেচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে গেলে তত্ত্ব বলতে বোঝায় "কোন প্রপঞ্চশ্রেণীর ব্যাখ্যায় ব্যবহৃত সুসংবদ্ধ সাধারণ প্রস্তাবনাসমূহ (a coherent group of general propositions used as principles of explanation for a class of phenomenon)।" এই শব্দের মধ্যে কোন অনিশ্চয়তার স্থান নেই। সাধারণভাবে বলতে গেলে, বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব আর বৈজ্ঞানিক সূত্রের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে যে, সূত্রগুলো সংক্ষিপ্তভাবে প্রকাশ করা সম্ভব। অন্যদিকে তত্ত্ব হবে, স্বত-সঙ্গতিপূর্ণ, পর্যবেক্ষনের সাথে সম্পর্কিত, এবং উপযোগিতাপূর্ণ। (সৃষ্টিবাদের ব্যর্থতা এই শেষ গুণটিতে। সৃষ্টিবাদ পর্যবেক্ষণের সঠিক গন্তব্য নিয়ে কোন যথেষ্ট বা সুনির্দিষ্ট দাবী করতে পারে না; কাজেই শেষ পর্যন্ত এটি অব্যবহার্য।

প্রমাণের অভাব কোন দুর্বলতা নয়। বরং কোন সিদ্ধান্তকে অভ্রান্ত বলে দাবী করা ঔদ্ধত্য বই কিছু নয়। আমাদের দৃশ্যমান জগতের কোনকিছুই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত নয়, কোনদিন তা হবেও না। যদি আমাদের চেনা বিশ্বের সর্বসম্মত সংজ্ঞা আমরা কোনদিন গ্রহণ করতে পারি তবেই কেবলমাত্র "আঙ্কিক প্রমান" দেয়া সম্ভব। আমাদের কাজ বাস্তব জগতের চাক্ষুষ পর্যবেক্ষণের ফলে প্রাপ্ত প্রমাণাদি নিয়ে। তাই আমাদের কোন বিষয় নিয়ে নিশ্চয়তার প্রকারভেদ থাকবে। যত উতকৃষ্ট প্রমাণ আমাদের কাছে থাকবে আমরা ততই নিশ্চয়তা নিয়ে সেই পর্যবেক্ষণ ব্যবহার করতে পারবো। যখন আমাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ থাকবে তখন আমরা সেটিকে সত্য বলে গ্রহণ করতে পারবো যদি তা ১০০% নিশ্চয়তাপূর্ণ নাও হয়।

বিবর্তনের যথেষ্ট প্রমাণাদি আছে যা বিজ্ঞানসম্মত। বিবর্তনের সমর্থন পাওয়া গেছে জেনেটিক্স, শারীরবিদ্যা, পরিবেশবিদ্যা, প্রাণীআচরণ, আদিজীবনের পর্যবেক্ষণ এবং আরো বহু ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণের দ্বারা। আপনি যদি বিবর্তনবাদকে চ্যালেন্জ করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই এই প্রমাণাদি নিয়ে কাজ করতে হবে। আপনাকে অবশ্যই দেখাতে হবে যে এইসব প্রমাণাদি ভুল অথবা অবান্তর বা অন্য কোন তত্ত্বের সাথে এটি অধিকতর সঙ্গতিপূর্ণ। আর অতি অবশ্যই, এটি করতে হলে, আপনাকে তত্ত্ব আর প্রমাণ দুটো সম্পর্কেই জ্ঞান থাকতে হবে।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×