somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আধার আমি
আমি শেষ রাতের অবহেলিত চাঁদ। যাকে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় সমাজের বেশির ভাগ মানুষ দেখতে পারে না। ঘুমের দোহাইয়ে সবাই আমার সাথে প্রতারণা করে। আর আমি সমাজ জাগতে জাগতে তে-পান্তরে হারিয়ে যায়।

সুস্থ থেকে হঠাৎ হাজারো প্রতিবন্ধী, কেউ জানে না কেনো এমন হচ্ছে!!!!!!!!!

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দশ বছর বয়সে একেবারেই সুস্থ ছিলেন ২ ভাই কাদের ও মনির হোসেন। হঠাৎ করে জ্বর হয়। জ্বর তাদের শরীর থেকে গেছে ঠিকই কিন্তু দিয়ে যায় প্রতিবন্ধীত্বের চরম অভিশাপ। আস্তে আস্তে হাত ও পা শুকিয়ে বিকলাঙ্গ হয়ে যায় তারা দুজনেই।

এভাবে ধুকে ধুকে কয়েক বছর আগে মারা যান কাদের। শুধু শুয়ে থেকে থেকে এখন মৃত্যুর প্রহর গুনছেন মনিরও। তাদের সেবা করতে গিয়ে তার মাও এখন প্রতিবন্ধী।

শুধু মনির নয় সুমাইয়া, অহিদ, কুলসুমসহ এই গ্রামের অনেক শিশুরাই হঠাৎ করে প্রতিবন্ধী হয়ে গেছে।

ঝালকাঠির রাজাপুরের বিষখালী নদীর ভাঙনকবলিত বড়ইয়া ইউনিয়নে প্রায় ১৫,০০ প্রতিবন্ধী আছেন। কেউ শিশু বয়সে, কেউ মধ্যবয়সে আবার কেউ বৃদ্ধ বয়সে প্রতিবন্ধী হয়েছেন। দিব্যি সুস্থ থেকে হঠাৎ করে প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণ আজও জানা যায়নি।

ব্যক্তি বা এনজিও এমনকি প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কেউ এগিয়ে আসেনি তাদের কাছে। বছরের পর বছর তারা প্রতিবন্ধী ভাতা থেকেও বঞ্চিত হয়ে আসেছন।

বঞ্চিত হচ্ছেন মৌলিক অধিকার থেকেও। প্রতিবন্ধী গ্রাম হিসেবে পরিচিত এ ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়ইয়া, পালট ও বড়ইয়ার প্রতিবন্ধীরা পরিবারের বোঝা হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।

এ ব্যাপারে পালট, বড়ইয়া প্রতিবন্ধী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আলমগীর শরিফ বলছিলেন, বড়ইয়া ইউনিয়নে প্রায় ১৫,০০ প্রতিবন্ধী আছেন। এর মধ্যে দক্ষিণ বড়ইয়া, পালট ও বড়ইয়া গ্রামেই ৫ শতাধিক।

এসব প্রতিবন্ধী পরিবারের জীবন-জীবিকার একমাত্র উপায় জেলে, দিনমজুর ও ভিক্ষাবৃত্তি। তাছাড়াও পরিবারগুলো বিষখালী নদীর ভাঙনে ভিটেবাড়ি হারিয়ে অনিশ্চিত জীবনের মুখোমুখী।

‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই অসহায় প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করছি। তবে প্রথম থেকেই আমরা এই বিশাল জনগোষ্ঠির জন্য একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের দাবি করে আসছি। কিন্তু সে দাবি আজও বাস্তবায়ন হয়নি।’

দিব্যি সুস্থ থেকে হঠাৎ করে প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণ আজও অনুসন্ধান হয়নি।

দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবন্ধীদের কল্যানে কাজ করা পালট বড়ইয়া প্রতিবন্ধী সমিতির হিসেব অনুযায়ী গোটা জেলার মধ্যে পালট-বড়ইয়া ও দক্ষিণ বড়ইয়ায় প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা অনেক বেশি।

এদের অধিকাংশই শারিরীক প্রতিবন্ধী। নিম্ন আয়ের এই পরিবারগুলো তাদের প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে চরম অসহায় জীবন যাপন করছেন। অনেকের জীবন আবার অতিষ্ট হয়ে গেছে।

তবে হঠাৎ করে প্রতিবন্ধী হয়ে যাওয়ার এই কারন অনেকটাই অজ্ঞাত। স্থানীয় অশিক্ষিত মানুষেরা মনে করছেন হঠাৎ অসুস্থতা বা পঙ্গুত্ব এই গ্রামের কোনো অভিশাপ।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই প্রতিবন্ধীতের বৈজ্ঞানিক কোনো ব্যাখ্যাও তুলে ধরতে পারছেন না চিকিৎসকরা।

প্রতিবন্ধী কিশোরী কুলসুমের মায়ের আকুতি, ‘অসহায় মেয়েকে আর বহন করতে পারছিনা। এমনকি যেখানে নিজেদেরই পেট চলেনা সেখানে এই আতুর (প্রতিবন্ধী) মেয়েকে নিয়ে বড়ই বিপদে আছি। নিজের পেটের বলে নিজ হাতে গলা টিপে হত্যাও করতে পারছিনা।’

এক এলাকায় এত বেশি প্রতিবন্ধী হওয়ার সঠিক কারণও বলতে পারছেন না চিকিৎসকরা। রাজাপুর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এ ইউনিয়নে এত বেশি প্রতিবন্ধী ও হঠাৎ করে প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণ হতে পারে অপুষ্টি জনিত বা জেনিটিক।’

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ভবানী শঙ্কর বল বলেন, নানা প্রতিবন্ধকতায় অসংখ্য প্রতিবন্ধীদের মধ্যে গোটা উপজেলার মাত্র ৩২৭ জন প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছে। কিন্তু এই বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য তা অপ্রতুল।

এ উপজেলায় ৩,০০০ এর অধিক মত প্রতিবন্ধী রয়েছে।

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া বলেন, ‘এত সংখ্যক প্রতিবন্ধীর এই বিষয়টি অত্যন্ত ভাবনার বিষয়। ওই এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। এর কারণ অনুসন্ধানের জন্য ওই এলাকা থেকে ছবি সংগ্রহ করে তা নমুনা হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন আকারে পাঠানো হয়েছে।’
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×