somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে চিঠিটি দিয়ে আমার এই সফল প্রেমটি হয়েছিলো

০২ রা মে, ২০১১ বিকাল ৩:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(কবিতাটি আমার লেখা এবং এখানেই প্রথম প্রকাশিত হল)


লিখছি এমন চিঠি-
সবটা যখন পড়বে আমায় ঠিক মারবে ইট-ই।
তাইতো ভীষন ভয়-
তুমি তো আর এমন মেয়ে নয়,
চিঠি পেয়ে একটুখানি মুচকি করে হেসে-
বলবে- এমন চিঠি দুদিন আগে দাওনি কেন এসে?
তাই ফন্দি আছে-
চিঠিখানা কোনমতে দিয়ে তোমার কাছে-
পালিয়ে যাব, এই জনমে আর হবেনা দেখা,
তখন তুমি হাসবে একা একা।
হয়ত তুমি ভাববে বসে অবাক হবার মত,
আমার কাছে লেখে চিঠি- হায়ওে সাহস কত!
যাকগে এবার আসল কথা বলি-
চিঠি লেখার ধান্দা আমার আসল মাথায় কালই।
অনেক ভেবে চিন্তে দেখি একটি বছর পার,
দুই বছরের পূর্ন হতে দুদিন আছে আর।
হায়রে আজও হয়নি বলা তোমায় ভালবাসি,
তোমার লাগি মরার পরেও গলায় দেব ফাঁসি।
ভেবে আমার গায়ে দিল কাঁটা-
নয়তো চিঠি লিখব? আমার এমন বুকের পাঠা?
চিঠি যখন পড়বে তোমার হাতে-
লাগবে ভীষন ফ্যাসাদ তোমার দিনে এবং রাতে।
হয়ত তোমার ধরবে মাথায় ঝিম,
ভাববে যখন এমন ভীতুর ডিম-
চিঠিও লিখতে পারে?
হয়ত তুমি ভাববে বারে বারে।
বিশ্বাস কর তাই-
তোমার সাথে বলব কথা এমন সাহস নাই।
আমার মত ন্যেকা-
এই জগতে দ্বিতীয়টি আর যাবে না দেখা।
আর তাইতো চিঠি লেখা।
সেইযে যেদিন তোমার সাথে আমার প্রথম দেখা-
সেদিন থেকে তোমায় আমি বলব বলে কিছু-
আজও তোমার ঘুরছি পিছু পিছু।
এই দুনিয়া ঘুরে ঘুরে থেমে যাবে আর-
তোমার পিছে আমার ঘোরা শেষ কি আছে তার?

নাইবা আমায় পাত্তা দিলে, নাইবা কাছে ডাকো,
আমায় দেখে পেঁচার মত গোমড়া মুখে থাক ।
দেখলে আমায় হাসি চাপে? বেশতো হাসো কিছু-
তবু তোমার ছাড়ছি না আর পিছু।

চিঠি পড়ে হয়ত তুমি ভাবছ বারে বার-
এমনতর রামছাগলের চিঠির কি দরকার?
চিঠি তো নয় ফালতু পেঁচাল, হয়নি চিঠির চ,
‘ভালবাসি’ বানানটাতেও ‘ভ’ এর যাগায় ‘ব’।
রামছাগলতো কম বলেছো ভাগ্য আমার ভাল
হায়রে কপাল এবার বুঝি যাবে পিঠের ছালও।
চিঠি নিয়ে সোজা দেবে তোমার বাবার কাছে,
তোমার মত ঘাড় ত্যাড়া মে এ তল্লাটে আছে?
তোমায় লেখা প্রথম চিঠি- ভুলত্র“টিতো হবে,
এবার শোন তবে-

সেইযে তোমায় প্রথম দেখার পরে-
একদিন তোমায় না দেখিলে কলজে খাঁ খাঁ করে।
তোমার সাথে প্রথম দেখার দিন-
দুই আর এক এ চার লিখেছি যেথায় হবে তিন!
অংকে দিলাম গোল্লা মেরে, ইংরেজীতে ফেল,
বাংলাটাতে পাশ করেছি অনেক মেখে তেল।
ধর্ম সমাজ? বলব কি আজ, খাইছি তাতেও বাঁশ,
আব্বা বলেন- কাল থেকে তুই গিলবি কাঁচা ঘাঁস।
আমার নাকি মাথায় ভরা রামছাগলের মল,
কেউ কেই আবার স্বান্তনা দেয়- করবি কি আর বল?
সেদিন যারা বুদ্ধি দিল এর গলাতেই ঝোল,
আজকে তারা দিব্যি আমার ঢালছে মাথায় ঘোল।
মনের মাঝে উড়ু– উড়ু– ভাব,
তোমার পিছে ঘুরে আমার এই কি হল লাভ?
আজও আমার হয়নি হায়া, হয়নি শরম লাজ,
সেদিন হতে আজ,
তোমার পিছে ঘোরাই আমার একমাত্র কাজ।

পড়ালেখার ধার ধরিনা, ঐগুলি সব বাদ,
তোমায় নিয়ে কাব্য লেখার আমার বড় স্বাধ।
তুমি হবে নায়িকা আমার আমি নায়ক একা,
কপাল ভাল আজও আমায় দাওনি তুমি ছ্যাকা।
নয়তো কি আর কাব্য লিখি- আমি হাদারাম?
ছ্যাকা খেয়ে তখন আমার ঝরছে গায়ের ঘাম।
কাব্য লেখার ধান্দা মাথায়, সারাটা দিন ভাবি,
কবি কবি ভাবযে আমার আমি মহাকবি।
অনেক ভেবে দুদিন বাদে দুই লাইনেই কাত,
কাব্য লেখার যন্ত্রনাতে হারাম মুখের ভাত।
বিরাট সাধের কাব্য হঠাৎ পড়ল বাবার কাছে,
এই জগতে এর চে কি আর ভীতির কিছু আছে?
রেগে মেগে বলেন আমায়-‘ হায়রে আমার ধাড়ি’,
‘তাইতো বলি বাজান আমার কেন রেখেছেন দাড়ি’!
নরম সুরের কথা মানেই খবর খারাপ আছে,
এর পরে আর কেমন করে বলব তোমার কাছে?
আমার কি আর একটুও নেই লাজ?
কিসের লজ্জা, কিসের শরম- বলব সবই আজ।

বলব কি আর দুঃখের কথা এমন খেলাম মার,
এই জনমে কাব্য লেখার জাগবে না সাধ আর।
কাব্য গেল হাওয়ায় মিলে সঙ্গে গেল যান,
মারের চোটে টের পেয়েছি কয় চালে কয় ধান,
এই ধরেছি কান-
মহাকবি সাজব না আর থাকতে আমার প্রাণ।
খোদার কসম লিখব না আর কাব্য জনম তরে,
এই জগতে বলতে পারো কার লাগি কে মরে?
না না, তুমি কি আর সবার মত ? মূল্য তোমার আছে,
তাইতো ঘুরি তোমার পাছে পাছে?
নয়তো তোমায় এমন ভালবাসি?
সাধেই কি আর মরার পরেও গলায় দেব ফাঁসি?
মহাকবির ভাব যদি আর আসে,
আব্বা বলেন-‘ভাঙব মাঁজা এবার কাঁচা বাঁশে’।
আব্বা যাই বলেন বলুক তোমায় আমি চাই।
এই জগতে প্রেম-পীরিতির উর্ধ্বে কিছুই নাই।

সেদিন গেছি শ্যওড়াপাড়ার রাজজ্যোতিষীর কাছে,
প্রেমের জুঁটি এক করাতে নাম ডাক তার আছে।
বলেন- ‘শোনরে বাছা আমার কাছে আছে এমন তেল-
নায়ীকা তো তোর দুরের কথা, তার বাবাও ফেল!
তুইতো শুধু মাখবি এ তেল তোর নায়ীকার মুখে’,
শেষ কথাটি শুনে আমার ধাক্কা লাগে বুকে।
তুমিই বল তোমার মুখে কেমনে এ তেল মাখি?
আমি কি আর এই কলিজায় এমন সাহস রাখি?
তোমার পানে চাইলেই যার ঠ্যাং কাঁপে থর থর,
তোমার মুখে হাত দিলে তো আসবে গায়ে জ্বর।
এই জনমে তোমার সাথে হয়নি কথা কভূ,
রাজজ্যোতিষীর তেল এনেছি তবু।
কপাল আমার কেমন খারাপ এবার শোন তাই-
হঠাৎ দেখি ভরবোতলে একফোটা তেল নাই!
হায়রে কপাল হায়,
আমার মত দুর্ভাগা আর এই জগতে নাই।
নইলে আমার প্রেম-পীরিতির তেল চুলোতে যায়?
বিরাট আমার স্বাধ ছিল তেল মাখব তোমার মুখে,
কদিন ধরে সাহস যোগার করতেছিলাম বুকে।
হঠাৎ সবই ভেস্তে গেল চুলোয় গেল তেল,
তোমায় পাবার ধান্দামিতেও মারতেআছি ফেল।

এবার বুঝি গলায় দেব ফাঁসি,
চোখের জ্বলে খাল বয়ে যায়- খালের জ্বলে ভাসি।
মরার আগেও হয়নি বলা তোমায় ভালবাসি।
ভুল ত্র“টি সব ক্ষমা করে দিয়ো,
মরার পরে দেখা হবে, খোদা হাফেজ প্রিয়।

এমন শালার কপাল নিয়ে জন্মেছিলাম ভাই,
খুজতে গিয়ে কোথাও দেখি ফাঁসির দড়ি নাই।
অনেক খুজে পেলাম শেষে গরুর গলার দড়ি,
এই দড়িতে ঝুলে বল কেমনে আমি মরি।

যতরকম ধান্দা ছিল এই দুনিয়ার মাঝ,
তোমার পিছে সব করেছি হয়নি কোন কাজ।
ভাবছ তুমি বসে---
‘রামছাগলের পাইলে দেখা চড় লাগাতাম কসে।
গরুর দড়ি তাওতো ভাল রামছাগলের লাগি’।
আরে- আমি যদি রামছাগল হই তুমি তো রামছাগী!

যাকগে চিঠির মাঝে-
লিখছি অনেক কথা আজে বাজে।
এবার বলি আসল কথা ওসব ছিল ফাও,
ধোর্য্যে তোমার না কুলালে নিজের মাথাই খাও।
আজও আমি ঘুরছি তোমার পাছে,
আল্লার কসম এই হৃদয়ে জায়গা খালি আছে।
দিন দুনিয়া উল্টে গেলেও তোমায় আমি চাই,
এই জগতে প্রেম-পীরিতির উর্ধে কিছুই নাই।
তাই পত্রে আমার প্রেম-পীরিতি নিও-
আর পত্র চিঠি দিও।
ইতি তোমার একান্ত অপ্রিয়।
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×