২০০৪ সালের ২১ অগাস্টে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলার 'সঠিক তদন্ত' দাবি করেছে ওই সময়ের ক্ষমতাসীন দল বিএনপি। আজ শুক্রবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের কাছে এ দাবির কথা জানান দলটির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
এর মাধ্যমে পরোক্ষভাবে তিনি 'জজ মিয়া'র কাহিনীকে বিএনপি'র সাজানো নাটক বলে অভিহিত করেছেন। তবে গ্রেনেড মেরেও শেখ হাসিনাকে মারতে না পারার দু:খে জিয়ার কবরে তারা ক্ষমা চাইতে গিয়েছেন কি না, তা জানা যায়নি।
ওই হামলার সঙ্গে বিএনপির কোনও সংশ্লিষ্টতা ছিল না দাবি করে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক কারণে তাদেরকে ওই ঘটনায় জড়াতে চায়।'
আজ শুক্রবার জিয়ার সমাধিতে যান নজরুল ইসলাম খান। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি'র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক সদ্য কারামুক্ত শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, শামিমুর রহমান শামীম, কৃষকদলের নেতা তকদির হোসেন জসিম, শাজাহান মিয়া সম্রাট প্রমুখ।
কবরে ফুল দেয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। ওই হামলাকে জঘন্য ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম অভিহিত করে তিনি এর 'উপযুক্ত ও সঠিক' তদন্ত করে সত্যিকারভাবে দায়ীদের বিচারের দাবি জানান। সন্ত্রাসী বলে তিনি তারেক রহমানকে বোঝাতে চেয়েছেন বলে সেখানে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
বিএনপি, জামায়াতের জোট সরকারের আমলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় ২৪ জন নিহত হন। আহত হন অনেকে। এখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন। 'শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিএনপির মদদেই ওই হামলা চালানো হয়' বলে তখন থেকেই অভিযোগ করে আসছে আওয়ামী লীগ।
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক কারণে ওই গ্রেনেড হামলায় বিএনপিকে দায়ী করে।'
আওয়ামী লীগ কী বললো তাতে কিছু আসে, যায় না- এমন মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'আওয়ামী লীগ তো অভিযোগ করবেই। এটা জনগণ বিশ্বাস করে না। যিনি মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন, যার কণ্ঠ আমরা শুনেছি, সেই জিয়াউর রহমানকে তারা বলে পাকিস্তানের এজেন্ট। আওয়ামী লীগ কাদের সিদ্দিকীকেও বলে রাজাকার। তাদের পক্ষে বললে মুক্তিযোদ্ধা, তাদের বিপক্ষে বললে রাজাকার।'
জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে সম্প্রতি বিএনপিপন্থি তিন আইনজীবী গ্রেফতার হওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে নজরুল ইসলাম খান এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, 'সরকার দেখানোর চেষ্টা করছে বিএনপি সন্ত্রাসকে মদদ দেয়, বিএনপি সন্ত্রাসী দল ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এদেশের জনগণ জানে এ কথা সত্য না।'
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের 'অদ্ভুত' সব মামলায় দীর্ঘদিন কারারুদ্ধ রাখা হয়েছে, এমন অভিযোগ করে নজরুল বলেন, 'এ পরিস্থিতির পরিবর্তন করে জনগণের সরকার গঠনে বিএনপি কাজ করছে।'
তথ্যসূত্র: প্রিয়দেশনিউজ
আহসান কামরুল
২১ অগাস্ট ২০১৫ খ্রি.
ঢাকা।