বর্তমান পৃথিবীতে যতটুকু শান্তি বিদ্যমান , তার প্রায় পুরোটাই গনতান্ত্রিক চর্চার জন্য ( ইনশাআল্লাহ ) ।
গনতন্ত্র একটি পবিত্র জিনিস । ইউরোপ আমেরিকার অধিকাংশ গনতন্ত্রই পৃথিবীর ভারসাম্য বজায় রাখছে। আর অন্যান্য যেসব দেশে নামে গনতন্ত্র আছে , কিন্তু কাজে স্বৈরাচার , সেসব দেশে যদি ইউরোপ আমেরিকার মানের গনতন্ত্র চর্চা হয় , তবে পৃথিবী সত্যিই অনেকটা শান্তির গ্রহে রুপান্তরিত হবে ইনশাআল্লাহ । পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গনতন্ত্রের দেশ ভারত । তারপরও ভারত বর্তমানে অনেকটা স্বৈরাচার, কারণ হিসেবে একটা উদাহরণই যথেষ্ট হবে যে , আর তা হলো কৃষক আন্দোলন । বর্তমান সরকার এই কৃষক আন্দোলনকে যেভাবে দমিয়ে দিলো তা অবশ্যই স্বৈরাচার সরকারের কাজ ।
আমার নিজ দেশ বাংলাদেশেও সামান্যতম গনতন্ত্র নেই , যা একটু দেখা যায় , তা বিদেশীদের সাহায্য সহযোগিতা পাবার জন্য । বর্তমানে বিএনপি গনতন্ত্র আদায়ের জন্য আন্দোলনের পরিকল্পনা করছে । কিন্তু বিএনপির শক্তিশালী রাজনৈতিক ফিলোসোফি না থাকার কারণে , আমি মনে করি বিএনপি তেমন কোনো সফলতা অর্জন করতে পারবে না । ইসলামি দলগুলো ছাড়া অন্যান্য ডান বাম দলেরও তেমন কোনো শক্তিশালী ফিলোসোফি নেই , তাই তারাও ভালো করতে পারবে না । আর ইসলামি দলগুলো কর্মী সমর্থকদের জোর করে এনে আন্দোলন করবে , কারণ তাদেরও শক্তিশালী কোনো ফিলোসোফি নেই । বর্তমান সরকার যদি প্রশাসনকে শক্ত হাতে কন্ট্রোল করতে পারে , তাহলে বিএনপির এ আন্দোলন বিএনপির জন্য আত্মহত্যার সামিল হবে । অন্যদিকে ভারত সরকার এবং ভারতীয় বুদ্ধিজীবিরা আওয়ামিলীগকে নিরলস এবং অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে যাবে এবং বিভিন্নভাবে সাহায্য করে যাবে ।
তবে চীন এবং আমেরিকার কথামতো ভারত যদি বাংলাদেশে সঠিক নির্বাচনে চাপ প্রয়োগ করে , তাহলে বর্তমান বাংলাদেশের রাজনীতি বিএনপির অনুকূলে চলে আসবে , তখন বিএনপির আন্দোলন সফলতার মুখ দেখবে ইনশাআল্লাহ ।
কয়দিন পূর্বে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে বলেছে যে , যদি বাংলাদেশ চায় তাহলে জাতিসংঘ বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত । আমার ক্ষোভটা এখানেই । আমার মতে বিশ্বের যেখানেই গনতন্ত্র দুর্বল , সেখানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীর মাধ্যমে প্রত্যেক জাতীয় নির্বাচন নিজ উদ্যোগে করে দেওয়া জাতিসংঘের অবশ্য কর্তব্য কাজ । বর্তমান বাংলাদেশে কয়েক লক্ষ সেনা পুলিশের সমাবেশ ঘটিয়ে জাতিসংঘের নির্বাচন করে দেওয়া কর্তব্য । তবে চীন ও রাশিয়া একাজে জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত হতে নিরুৎসাহিত করবে । তাই আমি মনে করি রাশিয়া বাদে সকল গনতান্ত্রিক দেশ মিলে একটি "গনতান্ত্রিক সংঘ" তৈরি করুক । তাদের প্রধান কাজ হবে সকল দেশের নির্বাচন সুন্দরভাবে এবং অংশগ্রহণমূলকভাবে করে দেওয়া , আর একাজে বিদেশি সেনা পুলিশের বৃহৎভাবে কাজে লাগানো অবশ্য কর্তব্য । যেমন - ভারতের জাতীয় নির্বাচনে দশ - বিশ লাখ বিদেশি সেনা পুলিশের সমাবেশ ঘটিয়ে নির্বাচন করে দিতে হবে । তাছাড়া যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হয় , তাহলে সেখানেও গনতান্ত্রিক সংঘ সমানভাবে কাজ করে যাবে । তাই আমি গনতান্ত্রিক দেশসমূহকে আমন্ত্রণ জানাবো - আপনারা গনতান্ত্রিক সংঘ তৈরি করুন এবং বিশ্বকে অধিক নিরাপদ করুন ।
যদি গনতান্ত্রিক সংঘ তৈরি হয় , তাহলে গনতান্ত্রিক দেশে স্বৈরাচার শব্দটি যাদুঘরে স্থান নিবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় - বর্তমান আওয়ামিলীগ সরকার ভয় পায় যে , তারা যদি ক্ষমতায় আসতে না পারে , তাহলে রাস্তা ঘাটে বিএনপি জামাতের হাতে তাদের মরতে হবে অথবা জেলে গিয়ে পঁচে মরতে হবে । কিন্তু যদি শতভাগ বিশুদ্ধ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয় , তাহলে বিএনপি জামাত কখনোই এমন ভুল কাজ করবে না। কারণ মানুষ শান্তি চায় এবং শান্তিপূর্ণ ভোট দেখতে চায় । অপরদিকে বিএনপিও আন্দোলনের সহযোগী হিসেবে মৌলবাদী উগ্রবাদী এবং জঙ্গিবাদীদের সাথে সম্পর্ক গড়বে না ।
অতএব , জাতিসংঘই করুক আর গনতান্ত্রিক সংঘই করুক , বিশ্বে শান্তি চাইলে গনতন্ত্রের প্রসার লাভ আবশ্যক । তাছাড়া গনতন্ত্রের একটিমাত্র মৌলিক ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত থাকতে হবে , আর সেটি হলো ধর্মনিরপেক্ষতা । রাষ্ট্রীয়ভাবে ভারতকেও যেমন ধর্মনিরপেক্ষ হতে হবে, তেমনি বাংলাদেশকেও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হতে হবে । তবে দলীয়ভাবে নিজ ধর্মচর্চার অধিকার দিতে হবে , কারণ এটা না থাকলে পৃথিবী চরমভাবে বিশৃঙ্খল হয়ে পড়বে ।
( ডাঃ আকন্দ ) ।