ইমাম মাহদির সময় পর্দার হুকুম পরিপূর্ণভাবে মান্য করা হবে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটা হবে স্বতঃস্ফূর্ত এবং কিছু ক্ষেত্রে এটা হবে বাধ্যতামূলক । কিন্তু বর্তমানে পর্দা কি শতভাগ কায়েম করা সম্ভব ? উত্তর হলো না । কারণ মহিলারা টিভি নেট দেখে স্বাধীনতা চায় , আর পুরুষরা টিভি নেট এবং রাস্তা ঘাট দেখে ভিন্ন স্বাদ চায় । এভাবে নারী পুরুষ উভয়েই পাপ কাজে জড়িয়ে পড়ে ।
তাহলে পরকাল প্রত্যাশীদের করণীয় কি ? উত্তর হলো - সারা পৃথিবী তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখো , কামেল লোক আছে কি না । যদি খুঁজে পাও তাহলে তার পায়ের ধূলা হয়ে যাও , এছাড়া পরকাল মুক্তির দ্বিতীয় কোনো পথ খোলা নেই । আমি অনেক খোঁজাখুঁজি করে পাই নাই , কারণ যারা দুই একজন আছেন , তারা লোকালয়ে থাকেন না । অনেক অস্থির এবং চরম অস্থির হওয়ার পর তারা দুই একজন আমার সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন , আর এটাই আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট ছিলো । এ বিষয়ে মাওলানা রুমি রঃ ভালো বলেছেন - তোমরা সত্য চাও এবং সত্য দেখতে চাও , কিন্তু আমার মতো অস্থির হৃদয় তো দেখতে পাচ্ছি না , যাতে করে তোমরা সত্য পেতে পারো ।
কামেল লোক তোমাকে টিভি নেট দেখা নিষেধ করবেন না , কিন্তু দুনিয়ায় প্রতি যে ভালবাসা , তা সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করে দিবেন ইনশাআল্লাহ । নারীরা টিভি নেট দেখবে কিন্তু স্বাধীনতা চাইবে না , আর পুরুষরাও ভিন্ন স্বাদ চাইবে না , নারীরা শরীর ঢেকে চলবে এবং পুরুষরা তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখবে , এভাবে তারা উভয়েই ফেতনা থেকে দূরে থাকবে ইনশাআল্লাহ ।
প্রিয় মুমিনগণ , এই জামানায় আপনারা কখনোই বলবেন না যে , আমরাই পৃথিবী পরিচালনা করবো , বরং সংখ্যাগরিষ্ঠ কাফের মুশরিক , মুনাফিক এবং পাপিষ্ঠদেরকে দুনিয়ার পরিচালক মেনে নিন । ধর্ম রক্ষার রাজনীতি করুন এবং এই রাজনীতি নিষিদ্ধ হলে , ধর্ম রক্ষার অরাজনৈতিক আন্দোলন করুন । একটা সময় ধর্ম রক্ষার আন্দোলন করার মতো কোনো লোকই থাকবে না এবং মানুষ গোপনে গোপনে ধর্ম পালন করবে ।
বর্তমন বিশ্বের অনেক দেশেই হিজাব এবং নিকাব নিষিদ্ধ , আর এই নিষেধাজ্ঞার জন্য কি শুধু অমুসলিমরাই দায়ী ? উত্তর হলো না , বরং মুসলমানরাই বেশির ভাগ দায়ী । কারণ মুসলমানরা ইসলামের সৌন্দর্য দেখাতে পারে নাই । জঙ্গি ও মৌলবাদীরা ইসলামকে হিংসাত্মক ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে । ফলে অমুসলিমরা মুসলমানদের উপর প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে । এখন আমাদের দায়িত্ব হলো - ইসলামের সৌন্দর্য প্রকাশ করা এবং সময়ের সাথে চলা , নচেৎ ইসলাম অস্তিত্ব সংকটে পড়বে ।
পর্দা ইসলামে ফরজ ইবাদত । আপনার স্ত্রী কন্যা এবং মাকে শরীর ঢেকে চলার জন্য উদ্বুদ্ধ করুন এবং ধীরে ধীরে চাপ প্রয়োগ করুন। অপরদিকে আপনি নিজে এবং আপনার ভাই ও পিতাকে দৃষ্টি অবনত রাখতে বলুন । শুধু আপনার স্ত্রীকে পর্দায় রাখলেই হবে না , বরং আপনাকেও পর্দা করতে হবে । কারণ এটা ফরজ । তবে টিভি নেট দেখতে পারবেন ।
অভিনয় শিল্পীদের সংসার না টেকার প্রধান কারণ , পর্দাহীনতা । যে পরিবারে পর্দা নেই , সে পরিবার একটা জাহান্নামের টুকরো । সাধারণ মানুষ মনে করে অভিনয় শিল্পীরা কতো সুখী , কিন্তু আসল সত্য হলো অভিনয় শিল্পীদের পরিবার একটা জাহান্নামের টুকরো , দুই একটি ছাড়া , এই দুই একটি পরিবারে কিছু শান্তি থাকার কারণ হলো - কিছু পর্দার চর্চা ।
আমি আশা করি মুসলিম প্রধান দেশে নারীরা পূর্ণ পর্দার অধিকার পাবেন । মুসলিম প্রধান দেশের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণ পর্দার চর্চা করতে হবে । যারা যারা সবখানে পর্দার চর্চা করবেন শুধু মহান আল্লাহর ভয়ে , ফলশ্রুতিতে তাদের সংসার সুখী সংসার হবে ইনশাআল্লাহ ।
( জাহাঙ্গীর আলম ) ।