somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

SARS-CoV-2 ভাইরাসটি কি ভাবে আমাদের শরীরে আক্রমণ করে?

৩০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
SARS-CoV-2 ভাইরাসটি শ্বসনতন্ত্রে প্রবেশ করে। এটা ফুসফুসের ছোট বায়ু থলি আবিআলাস (Alveoli) কে আক্রমণ করতে ভালবাসে।



আবিআলা (Alveoli) মূলত তিন ধরণের কোষ দ্বারা ঘটিত -- (১) নিউমোসাইট টাইপ ১, (২) নিউমোসাইট টাইপ ২ এবং (৩) আবিআলা ম্যাক্রোফেজ।

ভাইরাসটি প্রথমেই নিউমোসাইট টাইপ ২ কোষটিকে আক্রমণ করে। নিউমোসাইট টাইপ ২ কোষটির কাজ হচ্ছে, সারফ্যাক্ট্যান্ট (surfactant) নামক একটা দ্রবণ তৈরি করে আবিআলাসের ভিতরটাকে আর্দ্র রাখা এবং এর দ্বারা আবিআলাসের পৃষ্ট চাপ কমিয়ে রাখা।



ভাইরাসটি নিউমোসাইট টাইপ ২ কোষটির মধ্যে থাকা এনজিওটেনাসিস কোনভার্টিং এনজাইম ২ (Angiotensin-converting enzyme 2 (ACE2) নামক একটা রিসেপ্টরের সাথে তার প্রোটিন কাটা দিয়ে নিজেকে আটকিয়ে ফেলে। আসলে সে এই কোষটিকে দখল করে তার রিবোনিউক্লিওয়া এসিড বা RNA ঢেলে দেয়। তারপর সে দখল করা কোষটির রাইবোসোম ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরণের পলি প্রোটিন উৎপন্ন করতে থাকে। এই সবগুলি প্রোটিন এবং আরএনএ দিয়ে নতুন আরো ভাইরাস জন্ম হয় কিন্তু একই সাথে নিউমোসাইট টাইপ ২ কোষটি ধ্বংস হয়ে যায়।

ফলে আবিআলাটি চুপসে যায়। আর আবিআলাটি যখন চুপসে যায় তখন বাতাস আর চলাচল করতে পারে না বা gas exchange করতে পারে না। এরফলে হাইপোক্সিমিয়া (hypoxemia) বা রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়।



এদিকে ভাইরাস আক্রমণের ফলে ইনফ্লামমেটরী মেডিয়েটর (inflammatory mediator) বা সংবাদ বাহকরা এই খবর দেয়ার জন্য রক্তে ছড়িয়ে পরে। এতে ভেসিডিলসন (vasodilation) হয় অর্থাৎ রক্তনালীগুলি শিথিল হওয়ার ফলে ব্লাডপ্রেসার কমে যায়। আরেক দিকে ফুসফুসে পানি আসে।

ভাইরাস আক্রমণ করেছে এই সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে রক্তের স্বেতকণিকাগুলি (neutrophils) প্রতিরোধ যুদ্ধ করার জন্য দলে দলে বেরিয়ে আসে।



রক্তের স্বেতকণিকাগুলি (neutrophils) ভাইরাসটির সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধ করতে যেয়ে নিউমোসাইট টাইপ ১, টাইপ ২ কোষগুলিকেও ধ্বংস করে। এতে ফুসফুসের ছোট বায়ু থলি আবিআলাটিও ধ্বংস হয়। স্বেতকণিকাগুলি যুদ্ধ করার সময় ইন্টারলুকিং -১ এবং ইন্টারলুকিং -৬ (interleukin) নামের দুইটা প্রোটিন কণা তৈরি করে। এই ইন্টারলুকিং গুলি রক্তের মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের নেকরোটিক ফ্যাক্টর আলফা (necrotic factor alpha) নামক একদল সংবাদদাতার কাছে আক্রমণের খবর পৌঁছে দেয়। এই সংবাদদাতারা মস্তিষ্কের হাইপোথেলামাস (hypothalamus) কে খবর দেয় এবং বলে প্রোস্টাগ্লান্ডিন (prostaglandins) নামক ক্যামিলিক ছড়াতে। হাইপোথেলামাস আক্রমণের খবর পাওয়ার সাথে সাথে যুদ্ধের কৌশল হিসাবে প্রোস্টাগ্লান্ডিন ছড়িয়ে শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যেটাকে আমরা জ্বর বলি।

আবিআলার ভিতরে কোষগুলির ধ্বংসাবশেষগুলি কফ আকারে জমা হয়। যা কাশলে বেরিয়ে আসে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১২:৪১
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×