আবিআলা (Alveoli) মূলত তিন ধরণের কোষ দ্বারা ঘটিত -- (১) নিউমোসাইট টাইপ ১, (২) নিউমোসাইট টাইপ ২ এবং (৩) আবিআলা ম্যাক্রোফেজ।
ভাইরাসটি প্রথমেই নিউমোসাইট টাইপ ২ কোষটিকে আক্রমণ করে। নিউমোসাইট টাইপ ২ কোষটির কাজ হচ্ছে, সারফ্যাক্ট্যান্ট (surfactant) নামক একটা দ্রবণ তৈরি করে আবিআলাসের ভিতরটাকে আর্দ্র রাখা এবং এর দ্বারা আবিআলাসের পৃষ্ট চাপ কমিয়ে রাখা।
ভাইরাসটি নিউমোসাইট টাইপ ২ কোষটির মধ্যে থাকা এনজিওটেনাসিস কোনভার্টিং এনজাইম ২ (Angiotensin-converting enzyme 2 (ACE2) নামক একটা রিসেপ্টরের সাথে তার প্রোটিন কাটা দিয়ে নিজেকে আটকিয়ে ফেলে। আসলে সে এই কোষটিকে দখল করে তার রিবোনিউক্লিওয়া এসিড বা RNA ঢেলে দেয়। তারপর সে দখল করা কোষটির রাইবোসোম ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরণের পলি প্রোটিন উৎপন্ন করতে থাকে। এই সবগুলি প্রোটিন এবং আরএনএ দিয়ে নতুন আরো ভাইরাস জন্ম হয় কিন্তু একই সাথে নিউমোসাইট টাইপ ২ কোষটি ধ্বংস হয়ে যায়।
ফলে আবিআলাটি চুপসে যায়। আর আবিআলাটি যখন চুপসে যায় তখন বাতাস আর চলাচল করতে পারে না বা gas exchange করতে পারে না। এরফলে হাইপোক্সিমিয়া (hypoxemia) বা রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়।
এদিকে ভাইরাস আক্রমণের ফলে ইনফ্লামমেটরী মেডিয়েটর (inflammatory mediator) বা সংবাদ বাহকরা এই খবর দেয়ার জন্য রক্তে ছড়িয়ে পরে। এতে ভেসিডিলসন (vasodilation) হয় অর্থাৎ রক্তনালীগুলি শিথিল হওয়ার ফলে ব্লাডপ্রেসার কমে যায়। আরেক দিকে ফুসফুসে পানি আসে।
ভাইরাস আক্রমণ করেছে এই সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে রক্তের স্বেতকণিকাগুলি (neutrophils) প্রতিরোধ যুদ্ধ করার জন্য দলে দলে বেরিয়ে আসে।
রক্তের স্বেতকণিকাগুলি (neutrophils) ভাইরাসটির সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধ করতে যেয়ে নিউমোসাইট টাইপ ১, টাইপ ২ কোষগুলিকেও ধ্বংস করে। এতে ফুসফুসের ছোট বায়ু থলি আবিআলাটিও ধ্বংস হয়। স্বেতকণিকাগুলি যুদ্ধ করার সময় ইন্টারলুকিং -১ এবং ইন্টারলুকিং -৬ (interleukin) নামের দুইটা প্রোটিন কণা তৈরি করে। এই ইন্টারলুকিং গুলি রক্তের মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের নেকরোটিক ফ্যাক্টর আলফা (necrotic factor alpha) নামক একদল সংবাদদাতার কাছে আক্রমণের খবর পৌঁছে দেয়। এই সংবাদদাতারা মস্তিষ্কের হাইপোথেলামাস (hypothalamus) কে খবর দেয় এবং বলে প্রোস্টাগ্লান্ডিন (prostaglandins) নামক ক্যামিলিক ছড়াতে। হাইপোথেলামাস আক্রমণের খবর পাওয়ার সাথে সাথে যুদ্ধের কৌশল হিসাবে প্রোস্টাগ্লান্ডিন ছড়িয়ে শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যেটাকে আমরা জ্বর বলি।
আবিআলার ভিতরে কোষগুলির ধ্বংসাবশেষগুলি কফ আকারে জমা হয়। যা কাশলে বেরিয়ে আসে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১২:৪১