somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

করোনাভাইরাস কি লেব্রটারীতে সৃষ্টি হয়েছে?

১০ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৭:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
করোনাভাইরাস কি লেব্রটারীতে সৃষ্টি হয়েছে



করোনাভাইরাস লেব্রটারীতে সৃষ্ট কোন ভাইরাস না।

একটা বহুল প্রচারিত গল্প হচ্ছে করোনাভাইরাস লেব্রটারীতে সৃষ্টি হয়ে চীনের উহান নগরীতে ছড়িয়ে পড়েছে।
তারপর চীন থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে।

করোনাভাইরাস একটা বৃহৎ ভাইরাস পরিবারের নাম।
এই পরিবারের সদস্যরা হচ্ছে:
১. HKU1,
২. NL63,
৩. OC43,
৪. 229E
৫. SARS,
৬. MERS এবং
৭. নবীন সদস্য SARS-CoV-2

স্ক্রিপস রিসার্চের ইমিউনলজি এবং মাইক্রোবায়োলজির সহযোগী অধ্যাপক ক্রিস্টিয়ান অ্যান্ডারসন এবং তার সহকর্মীরা ভাইরাসটির পিঠে থাকা লম্বা লম্বা কাঁটার মত স্পাইকগুলির প্রোটিনের জেনেটিক টেম্পলেটটি পরীক্ষা করে দেখেছেন।

SARS ভাইরাসটির সাথে এই নতুন SARS-CoV-2 ভাইরাসটির অনেক মিল আছে। SARS ভাইরাসটি এই ভাইরাসটির মতো একই ধরণের শ্বাসযন্ত্রে তীব্র সমস্যার সৃষ্টি করে। বৈজ্ঞানিকরা দেখেছেন এই দুই ভাইরাসের মধ্যে জেনেটিক কোডে সামান্য পার্থক্য আছে।

কম্পিউটারে মডেল (computer simulation) তৈরি করে দেখা গেছে ভাইরাসটি মানব কোষের সাথে খুব ভাল ভাবে সংযুক্ত হতে পারে না। বিজ্ঞানীরা যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে এই ভাইরাসটি সৃষ্টি করতেন তাহলে তারা এই ধরণের ভাইরাস বেছে নিতেন না যেটির কম্পিউটার মডেল (computer simulation) ঠিক মত কাজ করে না। তবে বিজ্ঞানীরা স্বীকার করেছেন সৃষ্টিকর্তা বিজ্ঞানীদের চেয়ে অনেক জ্ঞানী, কারণ দেখা গেছে বিজ্ঞানীরা যে ভাবে কম্পিউটার মডেল করেছেন ভাইরাসটি তারচেয়ে ভিন্ন ভাবে মানব কোষের সাথে নিজেকে যুক্ত করতে পারে।

করোনাভাইরাস যে লেব্রটারীতে সৃষ্টি হয় নাই তার আরেকটা সূত্র হচ্ছে। এই ভাইরাসের সামগ্রিক আণবিক কাঠামো (molecular structure) আগের করোনাভাইরাস থেকে পৃথক ধরণের। বরং বাদুড় এবং পাঙ্গোলিনে পাওয়া করোনা ভাইরাসগুলির সাথে অনেক মিল আছে। তবে বাদুড় এবং পাঙ্গোলিনে পাওয়া করোনা ভাইরাসগুলি মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারে এখন প্রমাণ পাওয়া যায় নাই।

গবেষকরা বলেছেন কেউ যদি মানুষের ক্ষতি করার জন্য কোন কিছু অর্থাৎ প্যাথোজেন (pathogen) সৃষ্টির কথা ভাবতো, তাহলে তারা এখন একটা ভাইরাসকে বেছে নিতো যে ভাইরাসটা মানুষকে অসুস্থ করে এই ব্যাপারে তারা নিশ্চিত ভাবে যান।

তাহলে ভাইরাস কোথা থেকে এল? গবেষক দল দুইটা সম্ভাবনার কথা বলেছেন।

একটা সম্ভাবনা হচ্ছে আগের করোনা ভাইরাসগুলো যে ভাবে এসেছে এটাও সে ভাবেই এসেছে। অর্থাৎ SARS ভাইরাস প্রথমে খাটাস বা সিভেট এবং MERS ভাইরাস প্রথমে উটে জন্ম নিয়ে তারপর মানুষের শরীরে এসেছে। এই ভাইরাসটিও প্রথমে বাদুড় তারপর পাঙ্গোলিনে বিকাশ লাভ করে তারপর মানুষের শরীরে এসেছে। প্রাণীর দেহ থেকে মানুষের দেহে আসার আগেই এর জিনগত বৈশিষ্ট্য এমন ছিল যে এটা মানুষের ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে।

দ্বিতীয় সম্ভাবনাটা হচেছ, এই ভাইরাসটার বৈশিষ্ট্যগুলি তখনই বিকাশ লাভ করে যখন ভাইরাসটি প্রাণী দেহ থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়। অর্থাৎ প্রাণীর দেহে থাকার সময় এটা নিরীহ ধরণের থাকে। প্যাঙ্গোলিনের শরীরে যে করোনাভাইরাস থাকে সেটার গঠন একটা হুকের মত যা দিয়ে সে অন্য কোষের রিসেপ্টরকে ধরে। SARS-CoV-2 ভাইরাসের স্পাইক ঠিক একই রকম। এতে বুঝা যায় প্যাঙ্গোলিন থেকে সরাসরি অথবা অন্য কোন ভাবে ভাইরাসটি মানুষের শরীরে এসেছে। মানব দেহে প্রবেশ করার পর ভাইরাসটি অন্য আরেকটি বৈশিষ্ট্য ধারণ করতে পারে। মানুষের কোষে প্রবেশ করার পর এটা এমন একটা নতুন রূপ ধারণ করে যে সহজেই মানুষের দেহে ছড়াতে পারে।

সূত্র:
১. লাইভ সায়েন্স
২. নিউ সায়েন্টিস্ট
৩. ইউএস টুডে
৪. দ্যা সায়েন্টিস্ট
৫. ভক্স
৬. সিডিসি
৭. মেডিসিন নেট
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৭:৩৮
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা লাস্ট ডিফেন্ডারস অফ পলিগ্যামি

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০


পুরুষদের ক্ষেত্রে পলিগ্যামি স্বাভাবিক এবং পুরুষরা একাধিক যৌনসঙ্গী ডিজার্ভ করে, এই মতবাদের পক্ষে ইদানিং বেশ শোর উঠেছে। খুবই ভালো একটা প্রস্তাব। পুরুষের না কি ৫০ এও ভরা যৌবন থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য: টিপ

লিখেছেন গিয়াস উদ্দিন লিটন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৫




ক্লাস থ্রীয়ে পড়ার সময় জীবনের প্রথম ক্লাস টু'এর এক রমনিকে টিপ দিয়েছিলাম। সলজ্জ হেসে সেই রমনি আমার টিপ গ্রহণ করলেও পরে তার সখীগণের প্ররোচনায় টিপ দেওয়ার কথা হেড স্যারকে জানিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বৈশাখে ইলিশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৪০



এবার বেশ আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে । বৈশাখ কে সামনে রেখে ইলিশের কথা মনে রাখিনি । একদিক দিয়ে ভাল হয়েছে যে ইলিশকে কিঞ্চিত হলেও ভুলতে পেরেছি । ইলিশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×