somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

ওয়াশিংটন, ডিসির ডুপন্ট সার্কেলের সৌন্দর্য অন্বেষণ

০৮ ই আগস্ট, ২০২৩ ভোর ৬:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ডুপন্ট সার্কেল ওয়াশিংটন, ডিসির কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি মনোমুগ্ধকর এলাকা। প্রাণবন্ত দৃশ্য, ঐতিহাসিক আকর্ষণ এবং মনোরম পারিপার্শ্বিকতার জন্য ডুপন্ট সার্কেল পরিচিত। ডুপন্ট সার্কেল ইতিহাস, শিল্প এবং বিনোদনের এক অনন্য সংমিশ্রণ। যারা ইতিহাসের ব্যাপার আগ্রহী, বা শিল্প সাহিত্যের ব্যাপারে অনুরাগী, বা কোন ভোজন রসিক, অথবা কেবল একটি সুন্দর স্থান ঘুরে দেখতে চান সবার জন্যই এই ডুপন্ট সার্কেল।



ইতিহাসের পটভূমি:
ডুপন্ট সার্কেলে পা রাখলে মনে হয় সময়ের একধাপ পিছিয়ে যাওয়া। দৃষ্টিনন্দন সারিসারি রোহাউসের মধ্যে অনেকগুলি ১৯ শতকের শেষের দিকে নির্মিত। এখানে আধুনিকতার সাথে একটা প্রাচীন ভাবের সংমিশ্রণ। ফলে এখানে ব্যস্ততার মধ্যেও একটা শান্তভাব প্রকাশ করে। মাঝখানে বিশাল এক বৃত্ত যা বেশ কয়েকটি প্রধান রাস্তার সংযোগস্থলে একটি দৃষ্টিনন্দন ট্রাফিক সার্কেল। বৃত্তের মাঝে চিত্তাকর্ষক ডুপন্ট ফোয়ারা যেন মুকুট পরে দাঁড়িয়ে আছে। ইতিহাসকে ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে অনেকগুলি ভাস্কর্য যা এখানকার ইতিহাস এবং মানুষের চেতনার প্রতীক। বৃত্তের চারপাশে অবসর ভাবে হাঁটাহাঁটি করলে মনে হবে দুর্দান্ত স্থাপত্য এবং মনোমুগ্ধকর গল্পের মাঝখানে অবস্থান করছেন।



শিল্প ও সাংস্কৃতিক বিনোদন:
শিল্প অনুরাগীরা ডুপন্ট সার্কেলে তাদের আনন্দের জায়গা খুঁজে পায়। আশেপাশে অসংখ্য আর্ট গ্যালারির আছে। এখানে বিভিন্ন ধরনের শিল্প কর্ম দেখতে পাবেন। যারা শিল্পানুরাগী তাদের ফিলিপস কালেকশন এবং আমেরিকার আধুনিক শিল্পের প্রথম যাদুঘর অবশ্যই পরিদর্শন করা উচিত। এই জাদুঘরটি একটি ঐতিহাসিক প্রাসাদে অবস্থিত। যাদুঘরটি রেনোয়ার, দেগাস এবং ভ্যান গগের মতো বিখ্যাত শিল্পীদের কাজের একটি সমৃদ্ধ সংগ্রহ নিয়ে গর্বিত। যারা সমসাময়িক শিল্পকর্মের অনুরাগী তারা হিলিয়ার আর্ট স্পেস দেখতে পারেন। এখানে উদীয়মান শিল্পীদের শিল্পকর্মের প্রদর্শনী হয়।



ভোজন রসিকদের জন্য অ্যাডভেঞ্চার:
যারা ভোজন রসিক এবং যারা নানা স্বাদের খাবার পরখ করে দেখতে চান তাদেরকে ডুপন্ট সার্কেলে আসতে হবে। এখানে মনোমুগ্ধকর ক্যাফেগুলির একটিতে গিয়ে সকালের নাশতা করে দিন শুরু করতে পারেন। এখানে সুঘ্রাণের ভরপুর তাজা তৈরি করা কফি এবং মোলায়েম পেস্ট্রি খেতে পারেন৷ লাঞ্চ করতে পারেন ভূমধ্যসাগরীয় আনন্দময় খাবার থেকে খাঁটি থাই খাবার পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাহারি খাবারের যেকোনোটি দিয়ে। রবিবার প্রাণবন্ত ডুপন্ট সার্কেল ফার্মার্স মার্কেট মিস করবেন না। এখানে স্থানীয় বিক্রেতারা তাজা ফলমূল, তরিতরকারি, নিজস্ব বেকারিতে তৈরি খাবার এবং হস্তনির্মিত কারুশিল্প নিয়ে আসে।



লুকানো বইয়ের দোকান আবিষ্কার করুন:
ডুপন্ট সার্কেলের বইয়ের দোকানে বিপুল বইয়ের সংগ্রহ দেখে বুকওয়ার্মরা আনন্দিত হবে। Kramerbooks & Afterwords Café হল একটি জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান। এখানে আপনি খাবার বা এক কাপ কফির স্বাদ নেওয়ার সময় বইয়ের স্বাদ নিতে পারেন। বই প্রেমীদের আরেকটি প্রিয় দোকান সেকেন্ড স্টোরি বুকস। এখানে বিরল এবং অনেক পুরানো বইয়ের সংগ্রহ আছে।



পার্কে প্রশান্তির বিশ্রাম:
বিশ্রাম এবং প্রশান্তির জন্য ডুপন্ট সার্কেলে বেশ কয়েকটি সবুজ জায়গা আছে। ডুপন্ট সার্কেল পার্কের সুসজ্জিত বাগানগুলি শহরের কোলাহলপূর্ণ রাস্তার মধ্যে একটি নির্মল মরূদ্যান। সারা বছর ধরে পিকনিক এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করার জন্য ঘাসের লনে এসে বসুন এবং স্থানীয় লোকদের সাথে মিশে আনন্দ উপভোগ করুন।



নাইটলাইফ এবং বিনোদন:
রাতের দৃশ্য ভিন্ন রূপলাভ করে। সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে ডুপন্ট সার্কেল একটি প্রাণবন্ত নাইটলাইফের সাথে জীবন্ত হয়ে ওঠে। আশেপাশে বার, লাউঞ্জ এবং মিউজিক ভেন্যুগুলির একটি প্রাণের উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করে। অনেকেই লাইভ মিউজিক পারফরম্যান্স, ক্রাফ্ট ককটেল উপভোগ করে এবং অনেকেই রাতের বেলায় ট্রেন্ডি নাইটস্পটে নাচানাচি করে।



শেষ কথা:
ডুপন্ট সার্কেল এমন একটি এলাকা যা ইতিহাস, শিল্প, সংস্কৃতি এবং খাবার দাবারকে অনায়াসে একত্রিত করে একটি নতুন অভিজ্ঞতার সৃষ্টি করে যা মনের মধ্যে একটা আনন্দের অনুভূতি সৃষ্টি করে। এর সমৃদ্ধ ইতিহাস, বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক দৃশ্য এবং ফ্রেন্ডলি পরিবেশ, ওয়াশিংটন, ডিসির সৌন্দর্যকে উদ্ভাসিত করে। আপনি একজন কৌতূহলী ভ্রমণকারী হলে বা স্থানীয় নতুন অ্যাডভেঞ্চার খুঁজছেন এমন হলে ডুপন্ট সার্কেল মনোমুগ্ধকর ভ্রমণের আনন্দ দিবে।

ছবি: মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় তোলা।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০২৩ ভোর ৬:৫৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আদর্শের রাজনীতি না কোটি টাকার হাতছানি...

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:২৫



১. আমি অনেক আগে ব্লগে লিখেছিলাম, বাংলাদেশে ছোট দলগুলো নিষিদ্ধ করা উচিত। উন্নত দেশের মত ২/৩ টিতে থাকাই উত্তম। কারণ, ছোট দলের নেতাদের টকশো-তে গলাবাজি করা ছাড়া আর কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে উড়ে গেল মাদ্রাসার দেয়াল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯



ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন।

বিস্ফোরণে মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তেল আর জল কখনো এক হয় না......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৫



জুলাই ছিলো সাধারণ মানুষের আন্দোলন, কোন লিডার আমারে ডাইকা ২৪'এর আন্দোলনে নেয় নাই। কোন নেতার ডাকে আমি রাস্তায় যাই নাই। অথচ আন্দোলনের পর শুনি আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড নাকি মাহফুজ। জুলাই বিপ্লবের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্ল্যাং রেভলিউশন: ১৮+ সতর্কবার্তা ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৩০


সোশ্যাল মিডিয়ায় আজকে একটা ভাইরাল ভিডিও চোখে পড়লো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সদস্য সালাউদ্দিন আম্মার গণজাগরণ মঞ্চ ৩.০ তে উপস্থিত হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন: দেখতে পাইলে বাকশাল, শা*উয়া মা*উয়া ছিড়া ফেল/... ...বাকিটুকু পড়ুন

কবিতাঃ হে বলবান

লিখেছেন ইসিয়াক, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪০

কে আছিস বলবান!
হ্ আগুয়ান।
দে সাড়া দে ত্বরা।
ধরতে হবে হাল,বাইতে হবে তরী, অবস্থা বেসামাল।

জ্বলছে দেখ প্রাণের স্বদেশ
বিপর্যস্ত আমার প্রিয় বাংলাদেশ।
মানবিকতা, মূল্যবোধ, কৃষ্টি, সভ্যতা, সংস্কৃতির বাতিঘর।
সর্বত্র আজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×