somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

গণতন্ত্রের কেন্দ্রস্থল: ইউএস ক্যাপিটল

০৯ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমেরিকাতে বেড়াতে আসলে ওয়াশিংটন ডিসিতে বেড়াতে আসুন। ওয়াশিংটন ডিসি একটি প্রাণবন্ত এবং ঐতিহাসিক শহর। এখানে আমেরিকার গণতন্ত্রের পূর্ণ বিকাশ ঘটেছে। আমেরিকার জাতীয় রাজধানীর সবচেয়ে আইকনিক ল্যান্ডমার্কগুলির মধ্যে একটি হল ক্যাপিটল হিলে অবস্থিত ইউ এস ক্যাপিটল। এই ভবনটি এক দিকে যেমন আমেরিকার কংগ্রেসের স্থান অন্যদিকে এই রাজসিক কাঠামোটি একটি জাতি হিসাবে প্রতিষ্ঠার মূল নীতিগুলির প্রতিনিধিত্ব করে। ইউএস ক্যাপিটলের সমৃদ্ধ ইতিহাস, চিত্তাকর্ষক স্থাপত্য, এবং অর্থবহ প্রতীকবাদ নিজ চোখে দেখার জন্য এটা ঘুরে দেখতে পারেন।



ইতিহাসের এক ঝলক:



ইউএস ক্যাপিটলের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে যা আমেরিকার ইতিহাসের সাথে শক্তভাবে গেঁথে আছে। ১৭৯৩ সালে এই ভবনের নির্মাণের সময় থেকে এটি আমেরিকান ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলির একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হয়ে আছে। যার মধ্যে আছে,আমেরিকার সংবিধানকে যথার্থ রূপ দেয়ার জন্য এখানে তুমুল বিতর্ক এবং আইন পাস৷ যুদ্ধ, সামাজিক পরিবর্তন এবং অগ্রগতির সময়ে ক্যাপিটল থেকেছে অবিচল। এটা জাতির জন্য স্থিতিস্থাপকতা এবং সংকল্পের প্রতীক হিসাবে কাজ করছে।



স্থাপত্য বিস্ময়:



ইউএস ক্যাপিটল হল নিওক্লাসিক্যাল স্থাপত্যের একটি মাস্টারপিস। বিখ্যাত স্থপতি উইলিয়াম থর্নটন এটার মূল ডিজাইন করেছেন এবং পরে বেঞ্জামিন হেনরি ল্যাট্রোব এবং থমাস ইউ ওয়াল্টারের মতো স্থপতি এটার সম্প্রসারণ করেছেন। গ্র্যান্ড গম্বুজ এমন ভাবে নকশা করা হয়েছে যেন তা আকাশরেখার উপর আধিপত্য বিস্তার করে আছে। এটি একটি সত্যিকারের বিস্ময় যা ওয়াশিংটন ডিসির জটিল নকশার মাঝখানে অত্যাশ্চর্য ভঙ্গি নিয়ে গর্বভরে দাঁড়িয়ে আছে। ভিতরে গম্বুজের নিচে রোটুন্ডায় আমেরিকার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কিছু শিল্পকর্ম রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে কনস্টান্টিনো ব্রুমিডির দুর্দান্ত ফ্রেস্কো "দ্য অ্যাপোথিওসিস অফ ওয়াশিংটন" এই চিত্রে জর্জ ওয়াশিংটনকে রূপক ব্যক্তিদের দ্বারা পরিবেষ্টিত অবস্থায় স্বর্গে আরোহণের দৃশ্য চিত্রিত করা হয়েছে।



স্ট্যাচুয়ারি হল এবং জাতীয় ভাস্কর্যের সংগ্রহ:

স্ট্যাচুয়ারি হলে আমেরিকার ৫০টি স্টেটের প্রতিটির জাতীয় নেতা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তির ভাস্কর্য আছে। প্রতিটি স্টেট নিজেরা নির্বাচন করে এই ভাস্কর্যগুলি ক্যাপিটল ভবনে পাঠিয়েছে। এই ভাস্কর্যগুলি বিভিন্ন নেতা, চিন্তাবিদ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অবদানের কথা বর্ণনা করেছে যারা আমেরিকার ইতিহাসকে রূপ দিয়েছে। এটি ইতিহাসের মধ্যে ঘুরে বেড়ানোর এবং দেশের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বৈচিত্র্যের গভীর উপলব্ধি অর্জনের একটি অনন্য সুযোগ।



ক্যাপিটল গ্রাউন্ডস:

ক্যাপিটলের চারিদিকে বিস্তীর্ণ মাঠগুলি ব্যস্ত শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি মনোরম মরূদ্যানের মত। ক্যাপিটল রিফ্লেক্টিং পুল বরাবর তাকালে আইকনিক ওয়াশিংটন মনুমেন্ট এবং ন্যাশনাল মলের প্যানোরামিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। ক্যাপিটলের ওয়েস্ট ফ্রন্টে প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান হয়। এখানে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত থেকে প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান সরাসরি দেখতে পারে।



সিনেট এবং হাউসের অধিবেশন দেখুন:

এখানে গাইডেড ট্যুর, ভার্চুয়াল এবং ব্যক্তিগত উভয় ভাবেই কংগ্রেসের কাজকর্ম, ভবনের ইতিহাস এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং দেখতে পাবেন। সিনেট এবং প্রতিনিধি পরিষদের অধিবেশন চলার সময় দর্শনার্থীরা দর্শক গ্যালারীতে বসে অধিবেশন পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। কি ভাবে আইন প্রণীত হয় নিজ চোখে তা দেখতে পাবেন।



শেষ কথা:

ক্যাপিটল ভবন পরিদর্শন ছাড়া ওয়াশিংটন ডিসিতে ভ্রমণ অসম্পূর্ণ। কেউ যখন গণতন্ত্রের এই আইকনিক প্রতীকের সামনে দাঁড়ায় তখন তাকে সেই আদর্শগুলির কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয় যা আমেরিকাকে রূপ দিয়েছে। মানুষের সম্মিলিত শক্তিকে কি ভাবে মানুষের স্বাধীনতার জন্য ব্যবহার করা যায় এই ভবন থেকে মানুষ সেই ব্যাপারে অনুপ্রাণিত হতে পারে। কেউ যদি একজন ইতিহাস উৎসাহী , বা একজন দেশপ্রেমিক হয়, বা শুধুমাত্র এমন কেউ যিনি মহান স্থাপত্যের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে চান তাহলে এই ক্যাপিটল থেকে একটি সমৃদ্ধ এবং অনুপ্রেরণাদায়ক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে। এতে আমেরিকার জাতির হৃদয়ের মধ্য দিয়ে আপনার যাত্রায় একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে যাবে।



ছবি: মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় তোলা
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ২:৫০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আদর্শের রাজনীতি না কোটি টাকার হাতছানি...

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:২৫



১. আমি অনেক আগে ব্লগে লিখেছিলাম, বাংলাদেশে ছোট দলগুলো নিষিদ্ধ করা উচিত। উন্নত দেশের মত ২/৩ টিতে থাকাই উত্তম। কারণ, ছোট দলের নেতাদের টকশো-তে গলাবাজি করা ছাড়া আর কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে উড়ে গেল মাদ্রাসার দেয়াল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯



ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন।

বিস্ফোরণে মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তেল আর জল কখনো এক হয় না......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৫



জুলাই ছিলো সাধারণ মানুষের আন্দোলন, কোন লিডার আমারে ডাইকা ২৪'এর আন্দোলনে নেয় নাই। কোন নেতার ডাকে আমি রাস্তায় যাই নাই। অথচ আন্দোলনের পর শুনি আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড নাকি মাহফুজ। জুলাই বিপ্লবের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্ল্যাং রেভলিউশন: ১৮+ সতর্কবার্তা ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৩০


সোশ্যাল মিডিয়ায় আজকে একটা ভাইরাল ভিডিও চোখে পড়লো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সদস্য সালাউদ্দিন আম্মার গণজাগরণ মঞ্চ ৩.০ তে উপস্থিত হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন: দেখতে পাইলে বাকশাল, শা*উয়া মা*উয়া ছিড়া ফেল/... ...বাকিটুকু পড়ুন

কবিতাঃ হে বলবান

লিখেছেন ইসিয়াক, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪০

কে আছিস বলবান!
হ্ আগুয়ান।
দে সাড়া দে ত্বরা।
ধরতে হবে হাল,বাইতে হবে তরী, অবস্থা বেসামাল।

জ্বলছে দেখ প্রাণের স্বদেশ
বিপর্যস্ত আমার প্রিয় বাংলাদেশ।
মানবিকতা, মূল্যবোধ, কৃষ্টি, সভ্যতা, সংস্কৃতির বাতিঘর।
সর্বত্র আজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×