somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

প্রকৃতির মহিমা: শেনানডোহ ন্যাশনাল পার্ক এবং স্কাইলাইন ড্রাইভ

১০ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রকৃতির মহিমা:
শেনানডোহ ন্যাশনাল পার্ক এবং স্কাইলাইন ড্রাইভ



ভার্জিনিয়ার ব্লু রিজ পর্বতমালার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত শেনানডোহ ন্যাশনাল পার্ক। ব্লু রিজ পর্বতমালার চড়াই উতরাই অতিক্রম করে চলে গেছে শ্বাসরুদ্ধকর স্কাইলাইন ড্রাইভ। প্রাকৃতিক জগতের বিস্ময়গুলির মধ্যে অতুলনীয় এই পর্বতমালা। সবুজ বন থেকে প্যানোরামিক ভিস্তা পর্যন্ত, জীব বৈচিত্র্যের এই আশ্রয়স্থলটি প্রকৃতি প্রেমী এবং অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় ব্যক্তিদের জন্য একটি স্বর্গরাজ্য।

স্কাইলাইন ড্রাইভ:
মেঘের উপর দিয়ে ভ্রমণ



শেনানডোহে আপনার যাত্রা শুরু হবে জাঁকজমক পূর্ণ কিংবদন্তি তুল্য স্কাইলাইন ড্রাইভ দিয়ে। ১০৫ মাইল লম্বা স্কাইলাইন ড্রাইভ ব্লু রিজ পর্বতমালার উপর দিয়ে চড়াই উতরাই পার হয়ে চলে যাওয়া একটি নৈসর্গিক হাইওয়ে । এই হাইওয়েটি কখনো ব্লু রিজ পর্বতমালার একদম চূড়া দিয়ে কখনো একটু নিচু দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে। এখান দিয়ে ড্রাইভ করে যাওয়ার সময় বিভিন্ন ঋতুতে প্রকৃতির বিভিন্ন রূপ দেখতে পাবেন। বসন্তকালে চারিদিকে বন্যা ফুলের বিপুল সমারোহ দেখতে পাবেন। গ্রীষ্মে চারিদিকে ঘন বন এবং জলপ্রপাতের ঝমঝম শব্দ শুনতে পাবেন। শরতকালে উজ্জ্বল লাল এবং কমলা বর্ণে চারিদিক জ্বলজ্বল করছে দেখতে পাবেন। আবার শীতকালে পাতাহীন শুষ্ক রুক্ষ গাছগুলি প্রকৃতির বিস্ময় নিয়ে রহস্যময় ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে তা দেখতে পাবেন।

স্কাইলাইন ড্রাইভ:
একটু থামুন



দীর্ঘ স্কাইলাইন ড্রাইভে স্থানে স্থানে থামার জায়গা আছে। গাড়ি থেকে নেমে ওই স্থানের সৌন্দর্য উপভোগ করুন। এমন কয়েকটি স্থান--

থর্নটন গ্যাপ: এটি স্কাইলাইন ড্রাইভের প্রবেশদ্বারগুলির মধ্যে একটি। এটা খুব জনপ্রিয় একটা স্পট। যারা খুব বেশি দূর যেতে চায় না তারা অবশ্যই এই স্পটে থামবে। এখানে জনপ্রিয় লিম্বারলোস্ট ট্রেইলের প্রবেশ পথ। গহীন বনের ভিতর দিয়ে ট্রেইলটি চলে গেছে। এমন কি যাদের শারীরিক অসুবিধা আছে তারা হুইলচেয়ারে করেও এই ট্রেইল দিয়ে চলতে পারবেন।



মেরিস রক টানেল: একটি একটি প্রকৌশল বিস্ময়। ব্লু রিজ পর্বতমালার নিচ দিয়ে এই টানেলটি চলে গেছে। এখন থেকে আবার মেরিস রক সামিট ট্রেইলের দিকে যেতে পারবেন। এই ট্রেইল দিয়ে যেয়ে পর্বতের অনেক উপরে উঠতে পারবেন। এখান থেকে প্যানোরামিক দৃশ্যগুলি অবিস্মরণীয়।

বিগ মেডোজ: নাম থেকেই বুঝতে পারছেন এটা পর্বতমালার মাঝে একটা তৃণভূমি। এই বিস্তৃত তৃণভূমি এলাকাটিতে প্রচুর বন্যপ্রাণীর বিচরণ। এখানে একটি দর্শনার্থী কেন্দ্র আছে। এখানে বিশ্রাম করতে পারবেন এবং ফ্রেস হতে পারবেন। এটা পিকনিক করার জন্য খুব সুন্দর একটা জায়গা। আর যারা রাতে তারা পর্যবেক্ষণ করতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এটা সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা। কোন রকম প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই বিস্তীর্ণ পরিষ্কার আকাশ দেখতে পাবেন। আর যারা হাইকিং করতে চান তাদের জন্য আছে ডার্ক হোলো ফলস ট্রেইলের মতো হাইকিংয়ের জন্য একটি আদর্শ স্থান।



হকসবিল সামিট: এটা শেনানডোহের সর্বোচ্চ চূড়া। ৪,০৫১ ফুট উঁচা চূড়া থেকে আশেপাশের উপত্যকা এবং শৈলশিরাগুলির ৩৬০ ডিগ্রি দৃশ্যে দেখতে পাবেন।

হাইকারদের আকর্ষণ:
আপনি যদি হাইকিং পছন্দ করেন তাহলে নিম্নলিখিত ট্রেইলগুলিতেও যেতে পারেন।



ওল্ড র‍্যাগ মাউন্টেন: এটা চ্যালেঞ্জিং রক স্ক্র্যাম্বলের জন্য পরিচিত। যারা একদম খাড়া পাহাড় বেয়ে উঠতে চান তাদের জন্য। এখানে প্রশিক্ষণ ছাড়া যাবেন না। এটা খুব বিপদজনক।

হোয়াইটওক ক্যানিয়ন: অত্যাশ্চর্য জলপ্রপাতের জন্য এটা বিখ্যাত। এখানে অনেকগুলি জলপ্রপাত আছে। পাহাড়ের সবুজ গিরিখাতের মধ্য দিয়ে পানির ধারা প্রবাহিত হয়ে এই জলপ্রপাতের সৃষ্টি করেছে। এখানে সাঁতার কাটতে পারবেন। আর যারা প্রাকৃতিক পরিবেশে ছবি তুলতে পছন্দ করেন তাদের জন্য একটি উপযুক্ত স্থান।



স্টনি ম্যান ট্রেইল: একটি একটি সহজ ট্রেইল। এই ট্রেইল ধরে স্টনি ম্যান সামিটের দিকে যেতে পারবেন। এখানে পাহাড় চূড়া থেকে শেনানডোহ ভ্যালির শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য দেখতে পাবেন।

এলকটন:
দ্য কমিং গেটওয়ে

এই শহরটি শেনানডোহ ন্যাশনাল পার্কের উত্তর প্রান্তে অবস্থিত। এই শহর থেকেই আপনি শেনানডোহে আপনার অ্যাডভেঞ্চার শুরু করতে পারেন। এই বিচিত্র শহর আপনাকে উষ্ণ ভাবে স্বাগত জানাবে।



শেষ কথা:
শেনানডোহ ন্যাশনাল পার্ক এবং স্কাইলাইন ড্রাইভ প্রকৃতির বিস্ময়ের মধ্য দিয়ে একটি অবিস্মরণীয় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। ড্রাইভের মনোমুগ্ধকর ল্যান্ডস্কেপ থেকে শুরু করে এলকটনের আতিথেয়তা পর্যন্ত। এই ভ্রমণটি প্রশান্তি এবং দুঃসাহসিকতার সন্ধানকারীদের জন্য একটি সত্যিকারের আনন্দ ভ্রমণ। শেনানডোহের সৌন্দর্য এবং আকর্ষণ আপনার হৃদয় এবং আত্মায় একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে যাবে।



ছবি: মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় তোলা।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১২:১৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আদর্শের রাজনীতি না কোটি টাকার হাতছানি...

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:২৫



১. আমি অনেক আগে ব্লগে লিখেছিলাম, বাংলাদেশে ছোট দলগুলো নিষিদ্ধ করা উচিত। উন্নত দেশের মত ২/৩ টিতে থাকাই উত্তম। কারণ, ছোট দলের নেতাদের টকশো-তে গলাবাজি করা ছাড়া আর কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে উড়ে গেল মাদ্রাসার দেয়াল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯



ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন।

বিস্ফোরণে মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তেল আর জল কখনো এক হয় না......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৫



জুলাই ছিলো সাধারণ মানুষের আন্দোলন, কোন লিডার আমারে ডাইকা ২৪'এর আন্দোলনে নেয় নাই। কোন নেতার ডাকে আমি রাস্তায় যাই নাই। অথচ আন্দোলনের পর শুনি আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড নাকি মাহফুজ। জুলাই বিপ্লবের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্ল্যাং রেভলিউশন: ১৮+ সতর্কবার্তা ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৩০


সোশ্যাল মিডিয়ায় আজকে একটা ভাইরাল ভিডিও চোখে পড়লো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সদস্য সালাউদ্দিন আম্মার গণজাগরণ মঞ্চ ৩.০ তে উপস্থিত হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন: দেখতে পাইলে বাকশাল, শা*উয়া মা*উয়া ছিড়া ফেল/... ...বাকিটুকু পড়ুন

কবিতাঃ হে বলবান

লিখেছেন ইসিয়াক, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪০

কে আছিস বলবান!
হ্ আগুয়ান।
দে সাড়া দে ত্বরা।
ধরতে হবে হাল,বাইতে হবে তরী, অবস্থা বেসামাল।

জ্বলছে দেখ প্রাণের স্বদেশ
বিপর্যস্ত আমার প্রিয় বাংলাদেশ।
মানবিকতা, মূল্যবোধ, কৃষ্টি, সভ্যতা, সংস্কৃতির বাতিঘর।
সর্বত্র আজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×