somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

আমেরিকাতে ছাত্র বিক্ষোভে ইহুদিদের জড়িত হওয়ার কারণ

১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সারা আমেরিকা জুড়ে নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসরাইল বিরোধী ছাত্র বিক্ষোভে ইহুদি ছাত্রদের বিপুল অংশ গ্রহণের পিছনে নান কারণ আছে। সাধারণ ভাবে মুসলিমদের ধারণা ইহুদি-মুসলিম বিরোধকে কেন্দ্র করে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি দ্বন্দ্ব সংঘাত সৃষ্টি হয়েছে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি দ্বন্দ্বকে দেখলে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভে ইহুদি ছাত্রদের অংশ নেয়ার কথা না। বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি দ্বন্দ্বকে ইহুদি-মুসলিম দ্বন্দ্ব হিসাবে বিবেচনার কারণে এই সমস্যা সমাধান না হয়ে বরং মানুষের দুঃখ দুর্দশা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিক্ষোভে ইহুদিদের অংশ গ্রহণের কারণ, পরিণতি এবং প্রভাবগুলি আলোচনা করা হল।

ইহুদি ছাত্রদের এই বিক্ষোভে অংশ নেয়ার পিছনে মানবাধিকার বিষয়ে উদ্বেগ কাজ করেছে। তারা মনে করে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘর্ষে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।বেসামরিক হতাহতের খবর, বাড়িঘর ধ্বংস এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে চলাচলে বিধিনিষেধ ইত্যাদি ঘটনাকে তারা মানবাধিকার লংঘন হিসাবে বিবেচনা করে। ইহুদি ছাত্ররা মানুষকে ইহুদি বা মুসলিম বা অন্য কোন ধর্মের অনুসারী হিসাবে আলাদাভাবে বিবেচনা না করে মানুষ হিসাবে মূল্যায়ন করে।

আমেরিকা এবং ইউরোপে বসবাসরত ইহুদিরা ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার এবং স্বাধীনতার দাবিকে সমর্থন করে। এই কারণে তারা ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্ভোগের প্রতি সহানুভূতিশীল। বৈশ্বিক ন্যায়বিচার ও সমতার প্রতি অঙ্গীকার থেকে তারা বলিষ্ঠ ভাবে এই বিক্ষোভ আয়োজন করেছে।

অনেক তরুণ ইহুদি রাজনৈতিক ও আদর্শিক ভাবে সামাজিক ন্যায়বিচার এবং নিপীড়ন বিরোধী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত। তারা ফিলিস্তিনি সংগ্রামকে ঔপনিবেশিকতা বিরোধী দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে। তারা ফিলিস্তিনের আন্দোলনকে অন্যান্য বৈশ্বিক মুক্তি আন্দোলনের সাথে সমান্তরাল ভাবে দেখে।

ইহুদি ভয়েস ফর পিস এবং IfNotNow-এর মতো সংগঠনগুলি এই বিক্ষোভগুলিকে সংগঠিত ও সমর্থন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারা কট্টরপন্থী ইহুদি প্রতিষ্ঠান এবং বর্তমান ইসরায়েলি সরকারের নীতিকে চ্যালেঞ্জ করে। এই সংগঠনগুলি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে আরও সমালোচনামূলক এবং ন্যায়বিচার ভিত্তিক পদ্ধতির পক্ষে ওকালতি করে।

আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বুদ্ধিবৃত্তিক এবং রাজনৈতিক সক্রিয়তার কেন্দ্রবিন্দু। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি একাডেমিক আলোচনা, বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির খোলামেলা প্রকাশ এবং প্রশ্ন করার সংস্কৃতি শিক্ষার্থীদের মনোজগতকে প্রসারিত করেছে।

ইহুদি ছাত্রদের বিক্ষোভের কারণে সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত এবং আমেরিকার পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়িয়েছে। এই বিক্ষোভগুলি ক্যাম্পাসে এবং বৃহত্তর সমাজে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা এবং মতামতগুলিকে চ্যালেঞ্জ করেছে এবং সমস্যাটির আরো গভীরে প্রবেশ করে আরও সূক্ষ্ম আলোচনাকে উৎসাহিত করেছে।

ইহুদি ছাত্রদের এই প্রতিবাদ বিক্ষোভগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে এবং এর বাইরে সাধারণ মানুষের মধ্যে মেরুকরণ প্রক্রিয়াকে বৃদ্ধি করেছে। পক্ষে বিপক্ষে উত্তপ্ত বিতর্ক মাঝে মাঝে সংঘর্ষের রূপ নেয়া সত্ত্বেও ইসরায়েলি নীতির সমর্থক এবং বিরোধীরা উভয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও গভীর ভাবে পর্যালোচনার সুযোগ পেয়েছে। ।

ইহুদি ছাত্রদের এই বিক্ষোভ বর্তমান নীতির বিরুদ্ধে তৃণমূল পর্যায়ের বিরোধিতার চিত্র তুলে ধরে নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করতে পারে। তারা ইসরায়েলের প্রতি আমেরিকার সমর্থনের বিষয়ে অবস্থান পুনর্বিবেচনা করার জন্য এবং আরও ভারসাম্যপূর্ণ পদ্ধতি অনুসরণ করার জন্য রাজনীতিবিদদের চাপ দিতে পারে।

ইহুদি ছাত্রদের এই বিক্ষোভ বিভিন্ন ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজনকে স্পষ্ট করেছে। অধিকাংশ মানুষ, বিশেষ করে মুসলিমদের ভ্রান্ত ধারণা যে সব ইহুদি মুসলিম বিরোধী এবং ইসরাইল সরকারের নীতির পক্ষে। এই বিক্ষোভ ঐতিহ্যগত ধারণা এবং দৃষ্টিভঙ্গিকে চ্যালেঞ্জ করেছে। ইসরায়েল সম্পর্কিত সাম্প্রদায়িক নিয়ম এবং নীতির পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

ইহুদি ছাত্রদের এই বিক্ষোভ ক্যাম্পাসের পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে। এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে কখনও কখনও ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ছাত্রদের মধ্যে পক্ষে-বিপক্ষে বিভাজনের দিকে নিয়ে যেতে পারে। আবার এই ইস্যুতে সক্রিয় চিন্তাভাবনা এবং বাস্তব অবস্থা একটা সমাধানের পথ দেখাতে পারে। তাছাড়া ছাত্রদের রাজনৈতিক প্রক্রিয় চিন্তাভাবনা এবং অ্যাডভোকেসিতে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করতে পারে।

অধিকাংশ মুসলিমদের ধারণা যে ইহুদি রাষ্ট্র অর্থাৎ ইসরায়েল এবং মুসলিম বিদ্বেষের ব্যাপারে সব ইহুদি একমত পোষণ করে। এই বিক্ষোভে ইহুদিদের অংশগ্রহণ ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে মতামতের বৈচিত্র্য পরিষ্কার ভাবে তুলে ধরেছে। ইহুদি ছাত্রদের এই বিক্ষোভে অংশ নেয়ার মাধ্যমে এটা অনেকের কাছেই পরিষ্কার হয়েছে যে ইহুদি পরিচয় এবং ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন একচেটিয়া নয় বরং অনেক ইহুদি প্যালেস্টাইনের অধিকারের পক্ষে এবং সংঘাতের আরও ন্যায়সঙ্গত সমাধানের পক্ষে।

ইহুদি ছাত্রদের ইসরাইলের নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ফলে এখন ইসরাইলের সমালোচনাকে একটা বৈধতা প্রদান করেছে। একসময় ইসরাইলের সমালোচনা করলেই সেটাকে ইহুদি বিদ্বেষ হিসাবে বিবেচনা করা হত। ইহুদি ছাত্ররা এটা পরিষ্কার করে দেখিয়ে দিয়েছে যে নির্দিষ্ট ইসরায়েলি নীতির বিরোধিতা করা যেতে পারে। নির্দিষ্ট ইসরায়েলি নীতির বিরোধিতা করা মানে ইহুদি বিরোধিতা নয়।

ইহুদি ছাত্রদের এই বিক্ষোভ ন্যায়বিচার, মানবাধিকার এবং নৈতিক শাসনের ধারণাকে আরো জোরদার করেছে। এই আন্দোলনের ফলে মানবাধিকার আন্দোলন আরো শক্তিশালী হয়েছে।

ইসরায়েল বা ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিভিন্ন ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে শুরু থেকেই যে মতবিরোধ ছিল, এই বিক্ষোভে ইহুদিদের জড়িত থাকার ফলে ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিতর্ক প্রকাশ্যে বৃদ্ধি পাবে এবং পরিবর্তন হতে পারে। এই বিক্ষোভ ইহুদি সম্প্রদায়ের মূল্যবোধ, পরিচয়, এবং ইহুদি জীবনে ইসরায়েলের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা এবং চিন্তাভাবনাকে উৎসাহিত করবে। এতে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বৈচিত্র্যময় ইহুদি সম্প্রদায়ের ভূমিকা দেখা যাবে।

বিক্ষোভকারী ইহুদি গোষ্ঠীগুলির সক্রিয়তা মূলধারার ইহুদি সংগঠনগুলিকে ইসরায়েল সম্পর্কিত তাদের অবস্থান এবং নীতিগুলি পুনর্বিবেচনার জন্য চাপ দিতে পারে৷ এটি ইহুদিদের সাংগঠনিক অবস্থানের একটি বহুমাত্রিক দিকে নিয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ ইসরাইলের প্রতি দৃঢ় সমর্থন থেকে শুরু করে ইসরায়েলি নীতির প্রতি সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি।

ইসরায়েলের প্রতি আমেরিকার সমর্থনের বিরুদ্ধে ইহুদি ছাত্র বিক্ষোভ তাদের নৈতিক অবস্থান, রাজনৈতিক সক্রিয়তা এবং আদর্শিক অবস্থানের একটি জটিল প্রক্রিয়াকে প্রতিফলিত করে। এই বিক্ষোভ বিভিন্ন ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে বৈচিত্র্য এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলির মধ্যে ফিলিস্তিনি অধিকারের জন্য ক্রমবর্ধমান সমর্থনকে পরিষ্কার ভাবে প্রতিফলিত করে। জনসচেতনতা বৃদ্ধি, নীতি সম্পর্কে বিতর্ককে প্রভাবিত করা এবং ক্যাম্পাসের পরিবেশ এবং ইহুদি সম্প্রদায়ের বহুমাত্রিক উন্নত মানবিক চিন্তাকে প্রভাবিত করা সহ এই বিক্ষোভগুলির উল্লেখযোগ্য ফলাফল রয়েছে। এই বিক্ষোভে ইহুদিদের সম্পৃক্ততা ইসরায়েলি নীতির সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গিকে বৈধতা দিয়েছে এবং সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের জন্য বৃহত্তর আন্দোলনকে শক্তিশালী করেছে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:২৬
৯টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

উপমা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:১৭


ছবি: ইন্টারনেট

আজ তোমার ছুটি দিয়ে দিচ্ছি,
ভোর আর সাঁঝের বেলায় দিন রাত্রি মিলনের যে সময়টুকু পায়,
সেটুকু সময়ও আমার সাথে ছলনা করতে বিন্দুমাত্র ভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তারেক জিয়ার কি হবে তাহলে!

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:৪২

আজকের এই বিশেষ দিনে নাহিদ ইসলাম ঠিক সকাল ৯টায় উঠে দেখলেন, সোশ্যাল মিডিয়া ভরে গেছে শুভেচ্ছাবার্তায়। কেউ লিখছে "আমাদের ভবিষ্যতের নায়ক", কেউ বলছে "নেক্সট লিডার"।

চা হাতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে নাহিদ ভাবছেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শুভ জন্মদিন নাহিদ ইসলাম

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:২৪



জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল নাহিদ ইসলাম।তোমরা এই জেন-যি প্রজন্ম সবাই আমার সন্তানের বয়সি বলে তুমি হিসাবে সম্বোধন করে এই পোস্ট লিখছি। রাজপথের মিটিং মিছিল থেকে জুলাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দূর্নীতিমুক্ত ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:০৬


কালের কন্ঠ(বসুন্ধরা গ্রুপ) গত ২১শে এপ্রিল সংবাদ করেছিলো দুদকের চেয়ারম্যান মন্তব্য করেছেন "অন্তবর্তী সরকার দূর্নীতিমুক্ত"। তিনি কিভাবে জানলেন যে সরকার দুর্নীতিমুক্ত ? একজন সংবিধিবদ্ধ স্বতন্ত্র সংস্থার প্রধান হয়ে কোনোরূপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেহেশত - দোযখ আর ফেরেশতা নিয়ে আমার চিন্তা-ভাবনা

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:১৩

আমার প্রিয় মানুষদের একজন রাজীব নূর ভাই। তিনি তাঁর মেয়েকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলছেন। আমি তাঁর ভিডিওগুলো দেখি। সেগুলো আমাকে মনে করিয়ে দেয়, আমি তাঁর সম্পর্কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×