somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাকিব-তামিমকে ‘শিক্ষা’ - অসাধারণ লিখেছে উৎপল শুভ্র

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই স্টুয়ার্ট ল ব্যাটা তো দেখছি ভারি নচ্ছার! সাজানো চিত্রনাট্যে হঠা ৎ ‘ভুলভাল’ সংলাপ বলতে শুরু করেছে!
সারা দেশে চাউর করে দেওয়া গেছে, জিম্বাবুয়ে সফরে ব্যর্থতার মূল কারণ অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়ক। সাকিব-তামিম জুটি বাংলাদেশের ক্রিকেটের সর্বনাশ প্রায় করেই ফেলেছিলেন। মাঠে ও মাঠের বাইরে নেতৃত্ব দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ। নিজেদের যা ইচ্ছা তা-ই করেছেন। ড্রেসিংরুমে কোচের সঙ্গে তামিম ভয়ংকর দুর্ব্যবহার করেছেন। এসব জেনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মাননীয় পরিচালকগণ অভূতপূর্ব করি ৎ কর্মা হয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে রক্ষার মহতী কাজে এগিয়ে এসেছেন। অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়ক দুজনকেই একসঙ্গে সরিয়ে দেওয়ার ‘রেকর্ড’ করে ফেলার পর চারদিকে যখন ধন্য ধন্য রব, তখনই স্টুয়ার্ট ল বেসুরো গান গাইতে শুরু করলেন।
জিম্বাবুয়েতে সাকিবের নেতৃত্বে কোনো সমস্যা দেখেননি। ড্রেসিংরুমেও বড় কিছু হয়নি। মাঠের মতো মাঠের বাইরেও বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা ছিলেন দারুণ শৃঙ্খলাপরায়ণ। উল্টো কথা হচ্ছে জেনে তিনি বরং মহা বিস্মিত। বিস্মিত সাকিবের অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়াতেও। তা স্টুয়ার্ট ল বললেই হবে নাকি! তিনি কি হেড অব ডেলিগেশন শফিকুর রহমানের চেয়ে বেশি বোঝেন!
ল ৩১ বছর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন। তাতে কী? খেললেই কি সব বোঝা যায়? সে জন্য আলাদা চোখ লাগে, যেটি আছে শফিকুরের। বিসিবির অন্য পরিচালকদের। এখন বিসিবির উচিত, আজকালের মধ্যে জরুরি আরেকটা সভা ডেকে স্টুয়ার্ট ল-কে বিদায় করে দেওয়া। সাহস কত, সাকিব হেড অব ডেলিগেশন ও নির্বাচককে ড্রেসিংরুমে থাকতে নিষেধ করে দেওয়ার মতো ভয়ংকর বেয়াদবি করেছেন বলে সবাইকে বিশ্বাস করিয়ে ফেলা গেছে আর তিনি বলছেন সিদ্ধান্তটা ছিল তাঁর! মাত্র এই দেশে এসেছ বাছাধন, তুমি আমাদের ক্রিকেট-সংস্কৃতি জেনে তার পর তো কথা বলবে! তুমি কি জানো, এমসিসি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে বিশেষ স্বীকৃতি দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে। লর্ডসে অনুষ্ঠিত গত পনেরো-বিশ বছরের সব টেস্ট ম্যাচের ভিডিও ফুটেজ দেখে যে আবিষ্কৃত হয়েছে, টেস্ট ম্যাচ চলাকালে ওই বিখ্যাত ব্যালকনিতে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক কর্মকর্তা বসার রেকর্ডটা বাংলাদেশের। ড্রেসিংরুম খেলোয়াড়দের একান্তই নিজস্ব জায়গা—এসব বাজে কথা অন্য সব দেশের জন্য প্রযোজ্য। বিসিবির পরিচালকগণ যাহা ইচ্ছা তাহাই করিবেন।
লেখাটা রঙ্গ টাইপ লাগলে কিছু করার নেই। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন যা হচ্ছে, তা তো রঙ্গই। জিম্বাবুয়েতে বাংলাদেশের ব্যর্থতার কারণ খুঁজতে তদন্ত কমিটি করার দাবি উঠেছিল কোনো কোনো মহল থেকে। যদিও সেটির কোনোই প্রয়োজন নেই। এই ব্যর্থতার একটাই ব্যাখ্যা—সম্ভাব্য সেরা প্রস্তুতি নেওয়া একটি দলের (পড়ুন জিম্বাবুয়ে) বিপক্ষে অপ্রস্তুত একটি দলের (পড়ুন বাংলাদেশ) খেলা হলে যা হওয়ার কথা, তা-ই হয়েছে। দুদলের মধ্যে ব্যবধান এমন আকাশপাতাল নয় যে বাংলাদেশ তিন মাস কোনো ম্যাচ না খেললেও ওদের দেশে গিয়ে হেসেখেলে জিতে আসবে।
বিসিবির পরিচালকদের মস্তিষ্ক খুব ক্ষুরধার। আসল কারণটা চাপা দিতে সাকিব-তামিমকে ‘বলির পাঁঠা’ বানিয়েছেন। তদন্ত কমিটি করলে সেটি সম্ভব হতো না। আরেকটি সমস্যাও হতো। তদন্ত কমিটি কোচ এবং দলের অন্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলত। তাতে সাজানো নাটকটা আর করা যেত না।
তদন্ত কমিটি হয়তো এই প্রশ্নটাও তুলত, হেড অব ডেলিগেশনের রিপোর্ট ক্রিকেট বোর্ডে জমা পড়ার আগেই কীভাবে সারা দেশের মানুষ তা জেনে যায়? পর্যবেক্ষক ভূমিকায় দলের সঙ্গে যাওয়া নির্বাচক কেন সারাক্ষণ ড্রেসিংরুমে থাকবেন? ড্রেসিংরুমে সামান্যতম ঘটনাও কীভাবে মুহূর্তের মধ্যে বাইরে চলে আসে?
বিশ্বের আর কোনো ক্রিকেট দলের ড্রেসিংরুমের ঘটনা সংবাদপত্রে এত খবর হয় না। ড্রেসিংরুমের চার দেয়ালের মধ্যে কত কিছুই তো হয়। একবার বীরেন্দর শেবাগ দলের খারাপ অবস্থায় উচ্চাভিলাষী শট খেলে আউট হয়ে আসার পর কোচ জন রাইট মেজাজ হারিয়ে তাঁর কলার চেপে ধরেছিলেন। শেবাগ অনেক দিন রাইটের সঙ্গে কথা বলেননি। রাইটের আত্মজীবনী প্রকাশিত হওয়ার আগে ভারতের বিশাল সাংবাদিককুল সেই খবর জানতেও পারেননি। অথচ জিম্বাবুয়ে সফরে সাংবাদিকদের কিছু জিজ্ঞেসও করতে হয়নি। হেড অব ডেলিগেশন অকাতরে ‘খবর’ সরবরাহ করেছেন। এখন তো পরিষ্কার, সাকিব-তামিমকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে তাতে সত্য-মিথ্যার ভালোই মিশেল ছিল।
অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়ককে একসঙ্গে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ক্রিকেট ইতিহাসেই আর আছে কি না সন্দেহ! এত বড় একটা সিদ্ধান্ত যে দ্রুততার সঙ্গে নেওয়া হয়েছে, তাতে যে কারও মনে হতে বাধ্য, ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালকেরা সুযোগ খুঁজছিলেন। সাকিব-তামিমকে শিক্ষা দেওয়ার সুযোগ। নইলে অনেক পরিচালকের মধ্যে অমন বিকৃত উল্লাস কেন দেখা যাবে? সাকিব-তামিম যদি নেতৃত্বদানে ব্যর্থই হয়ে থাকেন, বিসিবির পরিচালকদের তো তাতে মন খারাপ হওয়ার কথা। এই দুজনকে তাঁরাই নির্বাচন করেছিলেন, ব্যর্থতা কি তাহলে তাঁদেরও নয়?
প্রশ্ন হলো, জাতীয় দলের অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়ককে কেন শিক্ষা দিতে চাইবে বোর্ড? সাকিব-তামিম নিশ্চয়ই এমন কিছু করেছেন। এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে আপনি একটাই জবাব পাবেন, ওদের আচরণে সমস্যা। সেটি কী? এবার সুনির্দিষ্ট কিছু জানতে পারবেন না। ওরা উদ্ধত, কাউকে মানে না, দলের বাকিদের চেয়ে নিজেদের আলাদা ভাবে—এমন কিছু ঢালাও কথা শুনতে পাবেন। কেউ না কেউ আপনাকে বলবেন, বিশ্বকাপের আগে ঢাকা ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে সাকিব থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট পরে গিয়েছিলেন। ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব হারানোর কারণ হিসেবে ‘থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট’ বাকি ক্রিকেট-বিশ্বে প্রচুর হাস্যরসের জন্ম দেবে। যদি সেটি এমন গুরুতর অপরাধ বলেই গণ্য হয়, তাহলে প্রশ্ন উঠবে তখন তো হেড অব ডেলিগেশন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন। তিনি কেন সাকিবকে বলেননি, তুমি এই পোশাক পরে যেতে পারবে না।
এই যে সাকিব-তামিমকে নিয়ে এত ‘অভিযোগ’, কখনো কি তাঁদের সতর্ক করে দিয়েছে বিসিবি? জিম্বাবুয়ে সফরে শফিকুরই বা কী করেছেন? সাকিবের এত সমস্যাই যদি তাঁর চোখে পড়ে থাকে, কেন সফর চলাকালেই আলাদা বসে সেই ভুলগুলো ধরিয়ে দেননি?
বড় সমস্যাটা আসলে অন্যখানে। সাকিব-তামিম বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি। আইপিএলে খেলেন, কাউন্টিতে খেলেন, বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের চোখে চোখ রেখে পারফর্ম করেন—এঁদের মানসজগ ৎ ও তাই একটু আলাদা হতে বাধ্য। সাংবাদিক বা কর্মকর্তা দেখলেই তেলতেলে হয়ে যাওয়া ক্রিকেটারদের যে পরিচিত ছবিটা আমাদের মনে আঁকা, সেটিতে বড় একটা ধাক্কা ওদের আত্মবিশ্বাসী চালচলন। অনভ্যস্ত আমাদের চোখে এটিই হয়ে যাচ্ছে ঔদ্ধত্য বা বেয়াদবি। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ না হলে সেই ‘বেয়াদবি’তে কী আসে যায়! আসল তো পারফরম্যান্স, যাতে সাকিব-তামিম সম্ভবত বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেরই সেরা।
একজন অধিনায়ককে বিচারের দুটি প্রধান মাপকাঠি আছে। একটি দলের পারফরম্যান্স, আরেকটি নিজের। দুই বিবেচনাতেই সাকিব বাংলাদেশের সেরা অধিনায়ক বলে দাবি করতে পারেন নিজেকে। ওয়ানডেতে পরিসংখ্যানের বিচারে বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক (সাফল্যের হার ৪৬.৮০)। রেকর্ড বলবে, একটি টেস্ট জিতেছেন। আসলে বাংলাদেশের জেতা তিন টেস্টের দুটিই তাঁর নেতৃত্বে। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়, গত বছর নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ—অধিনায়ক সাকিবের মুকুটে বড় দুটি পালক। নিজের পারফরম্যান্সেও অধিনায়কত্বের কোনো প্রভাব পড়েনি।
এমন রেকর্ডের পর কোনো অধিনায়ককে সরিয়ে দেওয়ার সম্ভাব্য দুটি কারণই থাকতে পারে। এক. দলের খেলোয়াড়দের সমর্থন হারানো। দুই. এমন কোনো গুরুতর শৃঙ্খলাভঙ্গ, যাতে দেশের ভাবমূর্তি নিয়েই টানাটানি পড়ে। এই দুটি কারণের একটিও কি ঘটেছে?
বিসিবির এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার সময় ছিল না। তাতে যদি সাকিব-তামিমকে শিক্ষাটা না দেওয়া যায়! ক্ষমতার প্রদর্শনীই তাই বড় হয়ে উঠল। তাতে ক্রিকেটের ভালো-মন্দ যা-ই হোক না কেন! এত কথার একটাই কারণ—বাংলাদেশ ক্রিকেট দলটা শুধু বিসিবির নয়, পুরো দেশের।


সূত্রঃ http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-09-10/news/184378
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ সকাল ৭:৫১
১৭টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×