somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঐক্য প্রক্রিয়া ও গণতন্ত্রায়ন

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে আমি সব সময়। আমি বিশ্বাস করি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কোথাও ন্যূনতম ক্ষুন্ন হওয়া উচিত নয়। মহাপরাক্রমশালী একটা সরকারের বিরুদ্ধে একটা জোট গড়ে উঠুক সেটা আমিও সব সময়ই চাই। তাই ঐক্য প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানাই। এর মানে এই নয় যে তারাই ক্ষমতায় বসুক। গণতান্ত্রিক দেশে জনগণ যাকে ভোট দিবে সেই ক্ষমতায় বসবে। তবে একটা শক্তিশালী বিরোধী দল থাকলে আজকের সরকারের শ্বৈরাচারী চরিত্র নাশ হবে আনেকটাই আমি নিশ্চিত। আজ জাতীয় পার্টির মত আস্তাকুড়ের একটা দল গৃহপালিত বিরোধী দল না হলে আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের রাজনীতি, উন্নয়ন আরও ভাল হত গত দশ বছরে।

এবার কাজের কথায় আসি। গত কয়েক দিন হল মইনুল হোসেনের একটি অশালীন, অশোভন, অভদ্র, নোংরা, অমার্জিত, ছোটলোকি (আরও অনেক কিছু বলা উচিত) বক্তব্য নিয়ে বেশ আলোচনা ও তীব্র প্রতিবাদ হচ্ছে। আমি গণতান্ত্রিক নাগরিক হিসেবে তীব্র ঘৃণা ও নিন্দা জানাই। মইনুল হোসেন কে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া উচিত।

তসলিমা নাসরিন সম্প্রতি মাসুদা ভাট্টির চরিত্র নিয়ে যা বলেছেন আর আমিও বিটিভিতে অনেক আগে তার কিছু টকশোতে তার অন্ধ বক্তব্য শুনার পর জনাব ভাট্টির প্রতি আমার কোন বিশেষ অনুরাগ নেই। তবে তার দু’একটা ছোট গল্প পড়েছি ভাল লেগেছে। ব্যক্তিগত ভাবে আমি তাকে পছন্দ করি বা নাই কর, অন্যায় অশোভনের প্রতি সব সময় সত্য বলা উচিত বলেই আমি মনে করি এবং আমি তা করিও। সে আমার পক্ষে যাক আর বিপক্ষেই যাক।

আমরা সব সময় অরাজনৈতিক লোকদের হাতে রাজনীতি চলে যাওয়ায় উদ্বেগের কথা বলি। যদিও সেই অর্থে মইনুল ইসলামকে একেবারে অরাজনৈতিক লোক বলা যায় না। বঙ্গবন্ধুর সময় তিনি উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। এর মানে এই নয় যে সে রাজনৈতিক লোক। এক এগারো সরকারে তার চরিত্র আমরা দেখেছি। তবে এটাও সত্য বাকশালের প্রতিবাদ করে তিনি বেরিয়ে এসেছিলেন। আবার শিবিরের সভায় তাকে দেখা গেছে। সেই দোষ হালকা করা যায় এই ভাবে-অতীতে কার শিবির-জামায়াতের সাথে সখ্যতা ছিল না। তবে এখন জাতি পুরোপুরি ভাবে একটা জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে, স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে আর না।

যেহেতু রাজনৈতিক লোক নন মইনুল ইসলাম তাই জনগণের কাছে তার দায়বদ্ধতা নেই বলেই আমার মনে হয় এবং তিনি তা প্রমাণও করেছেন তার কথা বার্তায়। অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের টকশোতে দর্শকের ফোন আসলে তা মনযোগ সহকারে শুনতে ও গুরুত্ব দিয়ে উত্তর দেবার তাগিদ দেখেছি। অথচ মইনুল হোসেনকে আমি শুনেছি তিনি দর্শকদের তাচ্ছিল্য করে কথা বলেছেন এবং উপস্থাপিকাকে ফোন নিতে বিরত রেখেছেন এই বলে যে দর্শক কিছু বোঝেন না শুধু শুধু তার কথায় বিঘ্ন ঘটাবে।

আমরা জনগণের কথা বলবার অধিকার, তাদের স্বাধীনতা, তাদের সংবিধান স্বীকৃত অধিকার তাদের ফিরিয়ে দিতে একটা কট্টরপন্থী সরকারের বিরোধে ঐক্য জোট হতে দেখছি। এই যদি হয় ঐক্য প্রক্রিয়ার একজন অন্যতম নেতার চিন্তা ও কর্ম তবে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে এই প্রক্রিয়া আসলেই কি জনগণের ক্ষমতায়নে কাজ করবে? জনগণের প্রতিনিধি হতে পারবে?

ড. কামাল হোসেনরা তাদের ঐক্যের লক্ষ্যে সরকারে ক্ষমতার ভারসাম্য ও গণতন্ত্রায়নের কথা বলেছেন। এমন একজন অগণতান্ত্রিক ও শ্বৈরতান্ত্রিক মানষিকতার লোক নিয়ে কি করে লক্ষ্যে পৌঁছবেন? কি করে জনগণের প্রতিনিধি হবেন? কি করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করে জনউন্নয়ন করবেন? জাতীর কাছে তা স্পষ্ট করতে হবে। হয়তো কেউ কেউ বলতে পারেন তার বয়স হয়ে গিয়েছে, কি বলতে কি বলে ফেলেছেন। যদি সেটাও ধরে নেই, তবে তার উচিত হবে অবসর যাপন করা। একজন বিকারগ্রস্থ, খেয়ালি মাঝির হাতে হাল দিয়ে আমরা দেশের জনগণ নিশ্চিন্ত বোধ করতে পারছি না।

ড. কামাল হোসেনদের উচিত হবে, ঐক্যের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে এবং নিজেদের বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটাতে মইনুল হোসেন কে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বহিঃষ্কার করবেন। তা যদিও না করেন, অন্তত আমরা দেখতে চাই তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই তার নামে আদালতে মামলা হয়েছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে এবং সব শেষ খবর হল তিনি পাঁচ মাসের জামিন পেয়েছেন। তবে তার নামে আরও মামলা হয়েছে। সে সব আইনি বিষয় তিনি ব্যারিস্টার হিসেবে ভাল ভাবেই সামাল দিবেন। আশা করি তিনি সুবিচার পাবেন এবং সরকার নিজেদের স্বার্থে এই সুযোগ নিবেন না। তবে জনগণ দেখতে চায়, গণতন্ত্রের পতাকাবাহী ঐক্য প্রক্রিয়া গণতন্ত্রের লাইনে ট্রেনকে তুলতে কি ধরণের সিদ্ধান্ত নেয়। [ছবিঃ মানব জমিন]

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৭:৪৮
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×