somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এটা কেমন রোগ?

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গাছের শিকড় নয়। হ্যাঁ প্রথম দর্শনেই হয়ত মনে হবে তাই। দেখেই মনে হতে পারে দুই হাতে সে কিছু গাছের শিকড় ধরে আছে। কিন্তু না, অজ্ঞাত এক রোগে তার হাতের আঙুলগুলো এখন গাছের শিকড়ে পরিণত হয়েছে। এই অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত যুবকের নাম আবুল বাজনদার। তার এই অবস্থা একদিনে হয়নি। ২০০৫ সালে তার এই রোগ প্রথম দেখা যায়। তখন তার বয়স ১৫ বছর। ওই বছর খুলনায় বৃষ্টিতে চারদিকে ডুবে যায়। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় চারদিকে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। সেই থৈ থৈ পানির মধ্যে ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতো আবুল বাজনদার। এক সময় তার হাতে-পায়ে আঁচিলের মতো দেখা দেয়। সেই আচিল ১০ বছরে ধীরে ধীরে আজ শিকড়ের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে খুলনার পাইকগাছার আবুল বাজনদারের ছবি ছড়িয়ে পড়লে তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিট প্রধান অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন। বর্তমানে আবুল তার অধীনে চিকিৎসাধীন। খুলনা জেলার পাইকগাছা পৌর সদরের ৫নং ওয়ার্ড সরল গ্রামের বাসস্ট্যান্ডের পাশে ছোট্ট কুঁড়েঘরে মানিক বাজনদার তার স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন। তারা তিনজনই অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত। আবুলের বাবা মানিক বাজনদার ও তার মা আমেনা বেগম গণমাধ্যমকে জানান, ২০০৫ সাল, আবুলের বয়স তখন ১৫ বছর। ওই বছর বৃষ্টির সময় চারদিকে পানিতে সয়লাব। বাড়ির উঠানেও জলাবদ্ধতা। এভাবে পানির মধ্যে কয়েক দিন ভ্যান চালানোর এক পর্যায়ে আবুলের হাতে পায়ে আঁচিলের মত রোগ দেখা দেয়। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে বাড়তে এখন সেটি ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। এই রোগের কারণে দুই হাত দিয়ে কোনো কাজ করতে পারে না সে। ভাত খাওয়া, পোশাক পরিধানসহ প্রাকৃতিক ডাকের সকল কাজই তাকে অন্যের সাহায্য নিতে হয়। অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত ছেলেকে নিয়ে ঢাকা যাওয়ার মুহূর্তে তার মা আমেনা বেগম জানান, অনেক ডাক্তার কে দেখিয়েছি অনেক রকম ওষুদ ও খাইয়েছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। ব্যয়বহুল এই চিকিৎসার ব্যয়ভার মেটানোর সামথ্য নাই তাদের। তারপরও বিভিন্ন মানুষের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে ছেলের চিকিৎসা করালেও কোনো উন্নতি হয়নি বরং ধীরে ধরে গাছের শিকড়ের মত হাত-পায়ের শিকড় হয়ে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। হঠাৎ কেউ দেখলে ভয় পেয়ে যায়। তার ছেলেকে দেখলে অন্য ছেলে মেয়েরা দূরে সরে যায়। চোখের পানি মুছতে মুছতে আমেনা বেগম জানান, আমার ছেলে বলে, ‘মা আমাকে একটু এন্ডিন খাইয়ে শান্তি দাও, আমি আর পারছি না।’ দুই হাতের মত শিকড় গেড়েছে দুই পায়ে এবং পায়ের তলাতেও। এই রোগের কারণে গত ৫-৬ বছর কোনো কাজ তো দূরের কথা, বাসা থেকে বের হওয়া বা ঘুমাতে পর্যন্ত পারে না সে। অন্যরা যাতে আতঙ্কগ্রস্ত না হয় সে জন্য কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখে চলাচল করে সে। আবুল বাজনদার জানান, তার তিন বছরের একটি মেয়ে আছে । কিন্তু এই রোগের কারণে তাকে কোলে নিতে পারেন না। তিনি জানান, মাঝে মধ্যে হাতে প্রচন্ড- জ্বালা যন্ত্রণা করে। হাত-পা ওজন হয়ে গেছে, তাই চলতে পারেন না। আবুল বাজনদারের এই করুণ দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দিলে বিভিন্ন মহল থেকে সাহায্য-সহানুভূতির বার্তা আসতে থাকে। ইতিপূর্বে এই রোগে আক্রান্ত ইন্দোনেশিয়ার এক রোগীর সন্ধান পেয়েছিল ডিসকভারি চ্যানেল। তাদের উদ্যোগে দুই বছর চিকিৎসার পর তার রোগ ভাল হয়ে যায়। তবে বেশি দিন তিনি জীবিত ছিলেন না। এর আগে খুলনার শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বিধান কুমার গোস্বামী জানান, অজ্ঞাত ভয়ঙ্কর এ ধরনের রোগ ইতিপূর্বে দেশের কোথাও দেখা যায়নি। এ ধরনের রোগী বাংলাদেশে এই প্রথম।
বর্তমানে আবুল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাদ্বীন রয়েছে।
এরই মধ্যে জানা যায়, ঢাকা মেডিকেল কলেজে আবুলের চিকিৎসায় ছয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
এই মহুর্তে আবুলের সব চিকিৎসার দায়িত্ব ও খরচ সরকারের নেওয়া উচিত। সরকারের সহযোগিতা না পেলে হয়ত আবুলকে বাঁচানো যাবে না।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×