somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আকাশলীনা-০৮ [ভিন্ন আয়োজনে অন্য সাময়িকী]

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আকাশলীনা
ফাল্গুন ১৪১৭] ফেব্রুয়ারি ২০১১] সংখ্যা ০৭] বর্ষ ০১]
--------------------------------------------------------------------------
পাঠ-পূর্বক বিজ্ঞপ্তি]

আকাশলীনা মূলত একটি ছোট পত্রিকা; এটি প্রতি বাংলা মাসের প্রথম সপ্তাহে মুদ্রণ কাগজে প্রকাশিত হয়।
বলা যেতে পারে, সাদা-কালোয় প্রকাশিত এটি আমাদের রঙিন এক স্বপ্নের গল্প!
এখানে মূল পত্রিকার বর্তমান সংখ্যাটি অনলাইন পাঠকদের জন্য সরবারাহ করা হয়েছে। ভালোলাগা-মন্দলাগা বিষয়ে যে কেউই মন্তব্য করতে পারেন...
পত্রিকাটির মুদ্রিত কপি নিয়মিত পেতে চাইলে; ফোন নম্বরসহ আপনিও ঠিকানা লিখে জানান।
আমাদের সম্পাদনা পরিচিতি এবং সরাসরি যোগাযোগ করার ঠিকানা এই লেখার নিচে উল্লেখ আছে।

সকলকে ধন্যবাদ।
- সম্পাদক, আকাশলীনা
--------------------------------------------------------------------------
মূল পত্রিকা এখান থেকে শুরু-
--------------------------------------------------------------------------
সম্পাদকীয়]

যে বাংলার জন্য, আমাদের ভাইয়েরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন- সে বাংলাকে আমরা কতোটুকুন বুকে ধারণ করছি; তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। এর একটা জলন্ত প্রমাণ- যে বাংলা মাসে ভাষার জন্য ওমন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিলো; সে বাংলা তারিখ ও মাসকে আমরা উচ্ছন্নে ঠেলে দিয়ে, আজ পালন করছি- ইংরেজি একুশে ফেব্রুয়ারি! যা আজ জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত। নিজেদের এ স্বকীয়তাকে ভুলে গিয়ে, এই যে মহান শহীদদের প্রতি এমন ভালোবাসা দেখাচ্ছি- তা যতোটুকু সঠিক, তারও বেশি কী তাঁদের প্রতি অপমান প্রদর্শন নয়?

চলছে দেশের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক উৎসব- বইমেলা। বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ উৎসব, বরাবরের মতোই বইপ্রেমীদের ভেতর প্রাণের সঞ্চার ঘটিয়েছে।

একুশে ফেব্রুয়ারি ও বইমেলার পাশাপাশি, তরুণ-তরুণীদের মনে সবচেয়ে বেশি দোলা দেয়- ভালোবাসা। তাই এ উৎসবকে আমরাও দেখছি বড় করে।
আশা করছি আকাশলীনা-র এ অন্যন্য আয়োজন আপনাদের ভালোলাগবে।
সবার ভালো হোক- এ শুভ কামনা...
--------------------------------------------------------------------------
একুশে বিশেষ]
দৃপ্ত একুশে
সৈয়দা সুধন্যা

“আজ আমি কাঁদতে আসিনি/ ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি
যারা আমার অসংখ্য ভাই-বোনকে/ যারা আমার মাতৃভাষাকে নির্বাসন দিতে চেয়েছে
তাদের জন্য আমি ফাঁসি দাবি করছি”

একুশের প্রথম কবিতার কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরীর এই সর্বজনীন দাবির সঙ্গে মিশে গেছে একদিন সমগ্র জাতির কণ্ঠস্বর। বায়ান্ন-র উত্তাল অগ্নিগর্ভ সময়ের সোপান পেরিয়ে আমরা একদিন পৌঁছেছি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে; পেয়েছি লাখো প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন স্বদেশ।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন আমাদের আত্মজাগরণের প্রেরণা। বায়ান্ন বাঙালিকে করেছে সংগ্রামমুখী। করেছে জীবনমুখী। বাঙালিকে নতুন করে জাগ্রত করেছে বায়ান্নতে ঝরে পড়া স্বজনের রক্ত। ভয়কে তুচ্ছ করে মায়ের ভাষা বাংলার দাবিতে অকাতরে তাঁরা দান করেছিলেন তাজা প্রাণ। সময়ের সেই সাহসী সন্তানদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানোর দিন এই একুশে; পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিঁড়ে মায়ের মুখের মধুর ভাষা বাংলাকে নিজের করে পাওয়ার দিন, এই অঙ্গীকারে দৃপ্ত একুশে ফেব্রুয়ারি। নিকষ কালো অন্ধকার রাতের পর, ভোরের কুয়াশা চিরে পুবের আকাশে উঁকি দেয় যে সূর্য, তা যেনো রক্তিম একুশের ভাষা শহীদদেরই রক্তে। ফাল্গুনের রক্তরঙের পলাশ প্রতীক মহিমা এই দিনের। শহীদ মিনারে মিনারে কোমল পাপড়ি মেলে সুবাস ছড়ায় গাঁদা-গোলাপসহ হাজারো ফুল। শহর-নগর-বন্দর-গ্রামে উচ্চারিত প্রভাত ফেরির যে ভাষা- সে আমার মায়ের ভাষা। হারানো স্বজনের জন্য কেঁদে ওঠে মন। অশ্রুতে সিক্ত হয় শহীদ মিনারের প্রতিটি ফুল।
প্রাণের প্রিয় এই মাতৃভাষার জন্য ত্যাগের অন্ত নেই। দুঃখিনী বর্ণমালার স্বীকৃতি অর্জনের জন্য পেরিয়ে এসেছে কতো কণ্টকিত পথ। সেই সুদূর প্রাচীনকালেই ছিলো অস্পৃশ্য বাংলা। দেবভাষা সংস্কৃত থেকে কোনো কিছু বাংলায় ভাষান্তর করলে জ্বলতে হবে রৌরবের নরকে- এমন কতো ভীতিই না ছিলো একদিন! কি হিন্দু সংস্কৃত পণ্ডিত, কি সম্ভ্রান্ত মুসলমান-উর্দু-ফার্সিভাষী; সবার চোখেই বাংলা ছিলো অস্পৃশ্য, তুচ্ছ। তারপর কালের বিবর্তনে একসময় বাংলা অস্পৃশ্যতা কাটালো বটে, কিন্তু মুক্তি তো মিললো না।
ব্রিটিশ উপনিবেশ গেলো। কিন্তু আবার এলো পাকিস্তানি শাসন-শোষণ। কেবল ভাষা থেকে বঞ্চিত করতেই নয়; বাঙালির দীর্ঘ ইতিহাস ছিলো বঞ্চনার, অপমানের, কেবলই হারানোর। কিন্তু কতোদিন! একদিন ক্ষোভে, লজ্জায়, অপমানে জ্বলে উঠলো বাংলা আর বাঙালি। যূথবদ্ধ হলো। নামলো পথে। উচ্চারিত হলো স্লোগান। স্পষ্ট হলো অস্তিত্বের লড়াই। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে মুখর হয়ে উঠলো শহর-নগর-গ্রাম। ১৯৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারিতে রক্তে ভিজে গেলো রাজপথ। প্রাণ দিলো সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউদ্দিন। তবেই উড়লো রক্তাক্ত জয়ের পতাকা। সে শহীদদের রক্তের ওপর গড়ে উঠলো শহীদ মিনার।
সেই একুশের রক্তস্নাত পথ বেয়েই কালক্রমে একুশ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সম্মানে ভূষিত হয়। কেবল বাঙালি নয়, নিজ ভাষা নিয়ে গর্বিত প্রতিটি জাতি এদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজের মাতৃভাষা অর্থাৎ ৬ হাজার ৩১০টি ভাষার মানুষ নিজ নিজ ভাষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে থাকে। ২০০০ সাল থেকে একুশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে।
প্রতিবারই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার রাজপথ-দেয়াল সজ্জিত হয় বর্ণিল সাজে। চারুকলার শিক্ষার্থীরা রাত-দিন খেটে রং-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলেন প্রতিবাদের নানান ভাষা। রাতে, প্রথম প্রহর থেকে জেগে ওঠা মানুষগুলো সকাল হলেই দেখতে পায় এক নতুন আকাশ- সেখানে নতুন সূর্য। শহীদ মিনার বেদি, কালো রাজপথ, দেয়ালগুলো হেসে উঠছে বর্ণিল আলপনায়। বীর ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে পথে নেমে আসে মানুষের ঢল। হাতে ফুল, মুখে অমর সেই একুশের গান- আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি...
নগ্ন পা চিরচেনা সেই অন্তহীন মিছিল গিয়ে থামে স্মৃতির মিনারে। গভীর শ্রদ্ধায়, ফুলে, প্রাণের অঞ্জলিতে ভরে ওঠে মিনার প্রাঙ্গণ। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সারাদেশে গড়ে তোলা মিনার, স্মৃতিস্তম্ভ; সবই সাজে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার ফুলে... []
--------------------------------------------------------------------------
একুশে বিশেষ]
রক্ত বেচে শহীদ মিনার
অজয় দাশগুপ্ত

মুক্তির মন্দির সোপানতলে কতো প্রাণ হলো বলিদান... এদের ঋণ শোধ করা যায় না। মাতৃভাষার মর্যাদা রাখার জন্য, গণতন্ত্র ও স্বায়ত্তশাসনের জন্য, শিক্ষার অধিকারের জন্য, সর্বোপরি মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন- তাদের সংখ্যা প্রকৃত অর্থেই অগুনতি। জহির রায়হান একাত্তরের আগে এক লেখায় বলেছিলেন, ‘বাঙালির শহীদ দিবস, প্রত্যেকটা দিনই যে শহীদ দিবস হয়ে যাচ্ছে।’ অথচ, তিনি নিজেও যে স্বাধীনতার জন্য লড়ার পরপরই এ যুদ্ধের শহীদের পঙক্তিতে শামিল হয়ে যাবেন, সেটা তো ভাবতেও পারেননি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ছিলেন সামনের সারিতে। জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থী এবং প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকরা সমানতালে চলেছেন তাদের সঙ্গে। আমাদের শত্রুপক্ষেরও সেটা ভালো করেই জানা ছিলো। ২৫-২৬ মার্চ হানাদার বাহিনীর কামান ও মেশিনগানসহ অন্যান্য অস্ত্রের নির্বিচার প্রয়োগে এ পবিত্র অঙ্গন পরিণত হয়েছিলো কসাইখানায়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যে নিষ্ঠুরতায় তারা হত্যা করেছে, তার দ্বিতীয় কোনো নজির মেলা ভার। রাতে প্রথম দফা হামলায় যাঁরা বেঁচে গেছেন, তাঁদের দিনের আলোয় খুঁজে খুঁজে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার মহান সংগ্রামে জগন্নাথ হলের যাঁরা জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন খ্যাতনামা দার্শনিক ড. জিসি দেব, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, সন্তোষ ভট্টাচার্য, অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচার্যসহ অনেক বিখ্যাতজন। ছিলেন অনেক ছাত্র ও কর্মচারী। হানাদাররা জগন্নাথ হলে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনারটিও গুঁড়িয়ে দিয়েছিলো। এর স্থপতি ছিলেন প্রকৌশলী আলমগীর কবির। স্বাধীনতার পর তাঁকে আমরা নবতর প্রেক্ষাপটে শহীদ মিনারের নকশা করে দেওয়ার অনুরোধ জানাই এবং তিনি সানন্দে রাজি হন। তাঁর নকশায় ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিসৌধের পাশাপাশি একাত্তরের শহীদদের স্মরণে একটি বিশেষ ফলকস্তম্ভও গুরুত্ব পায়। এ জন্য তাঁকে কোনো অর্থ দিতে হয়নি। নকশা হাতে আসার পর আমরা কয়েকজন অর্থ সংগ্রহের সম্ভাব্য উপায় নিয়ে আলোচনায় বসি। এ সময়ই প্রস্তাব আসে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে হলের ছাত্রদের রক্ত বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ করা হবে। এমন অভিনব মহৎ প্রস্তাবে সাড়া পেতে সময় লাগেনি। ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রামের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এমন উদ্যোগকে সবাই স্বাগত জানায়। হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক হিরন্ময় সেনগুপ্ত, ছাত্র সংসদ সহ-সভাপতি বিধান বিশ্বাস, মৃণাল সরকারসহ অনেকে ছাত্রদের সঙ্গে রক্তদান কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করতে থাকেন। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমার ওপরও কিছু দায়িত্ব বর্তায়। সব মিলিয়ে শুধু জগন্নাথ হল নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়েই রক্ত বেঁচে শহীদ মিনার নির্মাণের কর্মসূচি আলোড়ন সৃষ্টি করে।
নির্দিষ্ট দিনে ব্লাড ব্যাংকে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। জগন্নাথ হলের শত শত ছাত্রের মধ্যে কে কার আগে রক্ত দেবে, তা নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা। সে সময়ে ব্লাড ব্যাংকের ক্ষমতা ছিলো সীমিত। অর্থবলও তেমন ছিলো না। এক-একজনকে রক্তের বিনিময়ে দেওয়া হয় ৪০ টাকা। আমাদের হাতে চার হাজার টাকার কিছু বেশি আসার পর ব্লাড ব্যাংকের তরফ থেকে জানানো হয়, তাঁদের হাতে দেওয়ার মতো আর অর্থ নেই। এর ফলে অনেক ছাত্র মনোক্ষুণ্ন হয়। ব্লাড ব্যাংকের রক্ত সংগ্রহের নিয়মও কারো কারো জন্য অশেষ কষ্টের কারণ হয়। রক্ত দিতে আগ্রহী প্রত্যেকের ওজন ও রক্তচাপ মাপা হতে থাকে। যাঁদের ওজন ১০০ পাউন্ডের কম, তাঁদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। আমি নিজেও এ খাড়ায় পড়ে যাই। আমার পক্ষে যুক্তি ছিলো- স্বাধীনতার সশস্ত্র যুদ্ধে লড়েছি, খানিকটা রক্তও ঝরেছে। প্রাণ সংশয় ছিলো প্রতিমুহূর্তে। এখন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এ আয়োজনে কেনো রক্ত দিতে পারবো না? এর কোনো জবাব ছিলো না ব্লাড ব্যাংকের কর্মীদের। আমার মতো নাছোড়বান্দা কয়েকজনের রক্ত শেষ পর্যন্ত নেওয়া হয়।
জগন্নাথ হলের ভাষা আন্দোলনের শহীদ মিনার ও একাত্তরের শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মম্ভে প্রতিবছর ২৫ মার্চ রাতে বিপুলসংখ্যক নারী-পুরুষের সমাবেশ ঘটে। তাঁরা মোমবাতি জ্বালিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। আলোর বন্যায় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে পরিবেশ। শহীদেরা যেনো এ সময় জীবন্ত হয়ে আমাদের মানসপটে দেখা দেন। আমাদের জন্য এ এক অনন্য অনুভূতি। তাঁদের সঙ্গে রক্তের বন্ধনে যে বাঁধা পড়ে আছি! []
>
লেখাটি আমাদের বিশেষ সংগ্রহ থেকে প্রকাশিত
--------------------------------------------------------------------------
একুশের গল্প]
অপমান
রুবেল কান্তি নাথ

ঢাকায় আসার পর থেকে ছেলেটা কেমন বদলে গেছে। আচার-ব্যবহার থেকে শুরু করে কথা-বার্তায়; সবকিছুতেই কি রকম যেনো হয়ে গেছে সে- ছেলের এই পরিবর্তন দেখে ওর মা আরিফা বেগম বেজায় অবাক হয়ে যান।
সবচেয়ে বড় বিস্ময়ের ব্যাপার, ছেলে মাকে “মাম্মি” বলে ডাকছে!
ব্যাপারটা কিছুতেই হজম করতে পারছিলেন না তিনি। ছেলেকেও বলতে পারছেন না এ কষ্টকর কথা।
ছেলে বর্তমানে শহরের নামকরা এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। যে কারণে, অনেক উচ্চবিত্ত সমাজের ছেলে-মেয়েদের সাথেই আজকাল তার চলাফেরা। আর আরিফা বেগম তো অজপাড়া গাঁও-এর একজন সহজ-সরল গৃহবধূ।
ছেলেকে দেখতে শহরে এসে, এ রকম পরিস্থিতি অবলোকন করে তাঁর দুঃশ্চিন্তা বেড়ে গেলো। তিনি ভালো করেই বুঝতে পারলেন, এ পরিবেশে ছেলে নিজের জন্মদাত্রিকেও আপন ভাষায় ‘মা’ বলে ডাকতে পারবে না। যদি তা করতে যায়; তবে যে ছেলের মান-ইজ্জত-সম্মান, সব ধুলিসাৎ হয়ে যাবে!
ভয়ে মা তাঁর ছেলেকে আর কিছুই বলতে পারেন না।

০২.
পরদিন একুশে ফেব্রুয়ারি।
ছেলে, ছেলের বন্ধুরা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার জন্য রাত জেগে ফুলের তোড়া তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে আছে।
আরিফা বেগম এসব দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেন না। তাঁর গ্রাম্য সরল আবেগ; কিছুতেই তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারছে না।
এই ছেলে, যে মা-কে ডাকে “মাম্মি”; আর সে-ই কিনা ভাষার মমতায় একুশে ফেব্রুয়ারির শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে ফুলের মালা গাঁথছে... []
>
দক্ষিণ কাট্টালী, চট্টগ্রাম-৪২১৯
--------------------------------------------------------------------------
বইমেলা বিশেষ]
চাই সুস্থ ও সুন্দর বই
সুজন আহমেদ

একুশ আমাদের জাতীয় চেতনার প্রথম মিনার। শোষক ইংরেজদের এ উপমহাদেশ থেকে উৎখাত করার পর, পাকিস্তান নামধারী এক ভয়ংকর অক্টোপাস ঝাপটে ধরেছিলো বাঙালির অর্থনীতি-সংস্কৃতিসহ সবকিছু। এমন কি তারা কেড়ে নিতে চেয়েছিলো আমাদের মায়ের ভাষা বাংলাকেও। ১৯৪৮-এ শুরু ভাষার লড়াই। কিন্তু ১৯৫২ সালে সর্বশক্তি নিয়ে বাংলার বিপ্লবী দুর্দম ছাত্রসমাজ এবং আপামর জনতা বজ্রকণ্ঠে রুখে দাঁড়িয়েছিলো মাতৃভাষা রক্ষা করতে। পাকজান্তার হায়েনা বাহিনীর নির্মম গুলিতে প্রাণ দিয়েছিলেন আমাদের ভাই রফিক, জব্বার, সালাম, বরকতসহ নাম না জানা অনেকে। প্রতিবছর সেই কালজয়ী ভাষা আন্দোলন ও শহীদদের স্মরণে বাংলা একাডেমী-র তত্ত্বাবধানে অ্যাকাডেমি চত্বরে আয়োজন করা হয় একুশে বইমেলার। এ মেলায় বাংলা একাডেমী ও সৃজনশীল প্রকাশ করে বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতিসহ অন্যান্য বই।
প্রথমেই বলতে হবে বাংলা একাডেমীর কথা। বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে। কিন্তু নির্মম সত্য হলো, অতীতের সামরিক জান্তারা একে করে তুলেছিলো নিজেদের “স্তুতি বিকাশ অ্যাকাডেমি”। সাধারণ মানুষ ধারাবাহিকভাবে প্রতারিত হতে হতে, এখন শুধু শুদ্ধ ও নির্ভুল বাংলা জানার প্রয়োজনে অভিধানগুলো সংগ্রহ করতে বাংলা একাডেমীর দ্বারস্থ হয়। কিন্তু প্রতারণার জাল এখানেও বিস্তৃত হয়ে আছে। দীর্ঘ সারি ধরে অসহ্য ভোগান্তি পেরিয়ে অ্যাকাডেমির ভেতরে পা রাখার পর, তাড়িয়ে দেওয়া কর্কশ ভাষায় বলা হয়- অমুক অভিধান নেই, তমুক অভিধান নেই। ভাগ্যিস, যদি জুটে যায়, তখন দেখা যায়- ভেতরে অনেক বর্ণের বিবরণ নেই। কোথাও চ-র পরে দেওয়া আছে শ-র বিবরণ। কোথাও ২০৩ পৃষ্ঠার পর ৫৬৭ পৃষ্ঠা!
পত্রিকার কলাম, সাহিত্যের আড্ডা ও বিভিন্ন আলোচনায় অহরহ ভর্ৎসনা শোনা যায়- মানুষ বই পড়া ছেড়ে দিয়ে যান্ত্রিক বিনোদনে নিমগ্ন হয়েছে, জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এর জন্য দায়ী কেবল পাঠক সমাজ? বাস্তবতাটা একটু বিদঘুটে। চুনকে ঘি ভেবে কতোবার মুখে নেওয়া যায়? আমাদের দেশের তথাকথিত সৃজনশীল প্রকাশনাগুলো মূলত অর্থলোভী; যারা অলেখক বিত্তশালীদের ঝকঝকে বই প্রকাশের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। সে তুলনায় এক-চতুর্থাংশও মৌলিক ও সৃজনশীল বই প্রকাশিত হয় না। একজন সরলমনা পাঠক, নতুন লেখকের নতুন বই কিনে, বাসায় ফিরে মনোক্ষুণ্ন হতে বাধ্য হন। গল্প, কবিতা বা যে ধরনের বই-ই হোক, তাতে বানান ভুল, বাক্য নির্মাণ ভুল, বৈচিত্র্য নেই। এসব বই পড়ার চেয়ে গান শোনা, নাটক বা সিনেমা দেখা অবশ্যই অর্থবহ হয়ে ওঠে তাঁদের কাছে।
এভাবে আমাদের দেশের পাঠকসমাজ ক্রমেই বই বিমুখ হয়েছে। ওসব করে অবশ্য সাময়িকভাবে লাভবান হয় অর্থলোভী প্রকাশকরা। যদিও দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির শিকার সে নিজেও। কিন্তু সার্বিক ক্ষতি হয়েছে আমাদের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির, আমাদের সম্ভাবনাময় নতুন লেখক এবং আমাদের ভবিষ্যতের। এ বিষয়গুলো কারোরই অজানা নয়। এ সম্পর্কে সমালোচনাও কম হচ্ছে না। তবু উত্তরণ বা পরিত্রাণ নেই। এর প্রধান কারণ, যারা এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন, তারাই এ দুরাবস্থার হরিলুটবাজ। তারাই এ অযাচিত অবস্থার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফায়দা লোটে।
তবু, হে আমাদের একুশে বইমেলা, আমাদের প্রাণের মেলা, ফিরে এসো স্বচ্ছ, সুন্দর ও সুস্থতার ধারায়। ফিরে এসো আমাদের প্রকৃত শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারায়। []
>
বাংলামোটর, ঢাকা
--------------------------------------------------------------------------
বইমেলা বিশেষ : পাঠোদ্ধার]
পথের পাঁচালী : যেখানে নিজেকে খুঁজে পাই
নাসির আহমেদ খান

উপন্যাসে অনেক বড় ক্যানভাস লাগে, অনেক চরিত্র লাগে। নানা ঘটনার সমাবেশ ঘটাতে হয়। আরো অনেক ঘটনা মিলিয়ে তা ক্রমেই জটিল রূপ ধারণ করে। অমর অজেয় কথাশিল্পী বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস “পথের পাঁচালী” উপরোক্ত ধারণার ব্যতিক্রম নয়। সাধারণত উপন্যাসের শুরুতে দৃশ্যকল্পের বর্ণনা থাকে বেশ খানিকটাজুড়ে। পথের পাঁচালী উপন্যাসটিও এ দাবি পূরণ করে সার্থকরূপে।
ঔপন্যাসিক তাঁর সুনিপুণ বর্ণনায় গ্রামের সাধারণ মানুষগুলোকে করে তুলেছেন অসাধারণ, কিন্তু মানবীয়। পথের পাঁচালী উপন্যাসটির প্রথম ছয়টি পরিচ্ছেদ শেষ করে এক তীব্র কষ্ট অনুভব করি ইন্দির ঠাকরুনের জন্য। বৃদ্ধ বয়সে আশ্রয়-সম্বলহীন এক অসহায় নারীর জীবন অবসান হয় করুণ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে। উপন্যাসের সাবলীল বর্ণনা আচ্ছন্ন করে রাখে সমগ্রচিত্ত। নিঝুম দুপুর, বাঁশবনে পাতার ফাঁকে খেলছে আলো; বনের মধ্যে ডেকে উঠছে চড়–ই বা দোয়েল কিংবা নাম না জানা কী এক পাখি। শন শন শব্দে বায়ু বইছে বনের গাছপালা ছুঁয়ে। দিদির সঙ্গে বনে বনে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ অপার অসীম।
রেলগাড়ির হুইসেল যেনো জাদুর বাঁশি। এ বাঁশির সুরে অপু-দুর্গা বাড়ির বাহির হয়ে, ক্ষেত পেরিয়ে, মাঠ পেরিয়ে কোথায় যেনো ছুটে যেতে চায়। শৈশবে অপু-দুর্গার সঙ্গে, কতোবার যে আমি বা হয়তো অনেকেই ঘরের বাহির হয়েছে, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। অপু-দুর্গার গল্প উপন্যাসের ক্যানভাসে আঁকা চেনাজানা কোনো ছবিই শুধু নয়। কখনো কখনো মনে হয়, এ বুঝি আমাদের নিজের গল্পও বটে।
পথের পাঁচালীর দুর্গা পৌরাণিক দুর্গা নয়। তেরো বছরের যাপিত জীবনের দারিদ্র্য চঞ্চলা-চপলা আনন্দময়ী এক কিশোরীর প্রতিকৃতি। পল্লী জীবনের অনাবিল আনন্দের যে প্রকৃতি এঁকেছেন বিভূতিভূষণ তাঁর পথের পাঁচালী উপন্যাসে; দুর্গা তাঁর নায়িকা চরিত্রের দাবিদার। লেখক যদিওবা পূর্ণাঙ্গণ চিত্রায়ন করেননি দুর্গার। তবুও দুর্গার মাধ্যমে করুণ এ বিচ্ছেদী সৌন্দর্য পাঠককে আবহমান বাঙালির স্নেহ মায়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
অপু, অপূর্ব কুমার রায়। বাল্যের কচি বয়স থেকেই দারিদ্র্যের মধ্য দিয়ে বড় হওয়া যার নিয়তি। যার শৈশব কাটে দিদির সঙ্গ পেয়ে নিস্তরঙ্গ ছায়া-সুনিবিড় শান্ত নিশ্চিন্দিপুরে, ইছামতি নদীর তীরে। জীবনের প্রয়োজনে বাবা-মায়ের হাত ধরে কাশীতে পাড়ি জমানো, দিদি ও বাবার মৃত্যু, অবশেষে মায়ের আশ্রয়ে বেড়ে ওঠা। অপুর জীবনে নিঃসঙ্গতা দানাবাঁধে পরতে পরতে। উপন্যাসের শেষটাজুড়ে কিশোর নায়ক অপুর মনোজগতজুড়ে তার জন্মস্থান নিশ্চিন্দিপুর খেলা করে অবলীলায়। শহরের অসহ্য গুমোট ভাব তার মনকে বিষিয়ে তোলে।
নিশ্চিন্দিপুর গ্রাম, ইছামতি নদী অপুকে ডাকে হাতছানি দিয়ে, মনে করিয়ে দেয় শৈশবের সোনালি দিনগুলোকে।
নিজ গ্রামে ফিরে যেতে ব্যাকুল হয়ে ওঠে অপুর মন-প্রাণ। উপন্যাসের ভাষায়, “আজ কতোদিন সে নিশ্চিন্দিপুর দেখে নাই- তি-ন বৎসর! কতোকাল!” অথবা যখন উঠোন ভর্তি লোকের সামনে বিনা বিচারে মার খেলো অপু, তখনো তার চোখ দিয়ে এক ফোঁটা জল বের হয়নি, কিন্তু নির্জন ঘরের জানালায় একা দাঁড়িয়ে চোখ বেয়ে যখন ঝরঝর করে জল পড়তে লাগলো, তখন সে মনে মনে বলল, “আমাদের যেনো নিশ্চিন্দিপুর ফেরা হয় ভগবান, তুমি এই করো, ঠিক যেনো নিশ্চিন্দিপুর যাওয়া হয়- নৈলে বাঁচবো না, পায়ে পড়ি তোমার।” এই করুণ আকুতি যেনো শেকড়ে ফেরার তীব্র আকাক্সক্ষা। শহরের মায়াচক্রে বাঁধা পড়া, নাড়ির টান ভুলতে বসা মানুষের মূলে ফেরার করুণ সুর। []
>
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
--------------------------------------------------------------------------
ভালোবাসা বিশেষ]
ভালোবাসাবাসি
সেলিমা তাসনীম ছন্দা

ফেব্রুয়ারি বা ফাল্গুন ভালোবাসার মাস। পহেলা ফাল্গুন আমাদের ভালোবাসা দিবস। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ভালোবাসার মানুষটিকে বিশেষভাবে জানানোর দিন- কতোটা ভালোবাসি, কতোটা গুরুত্বপূর্ণ সে। প্রথমত এটা সীমাবদ্ধ ছিলো পশ্চিমা দুনিয়ায়, এখন প্রায় সারাবিশ্বেই উদযাপিত হয় ভালোবাসা দিবস। সুন্দর কিছু এভাবেই বাতাসের সঙ্গে ছড়িয়ে যায়।
ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইনস ডে শব্দটি এসেছে লাতিন ওয়ার্ড ভ্যালোর থেকে, যার ইংরেজি প্রতিশব্দ সাহসী। সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন-এর নাম থেকেই এ ভ্যালেন্টাইনস ডে শব্দটি এসেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কে এই ভ্যালেন্টাইন?
কোনো বিশেষ একজন নয়। এঁদের মধ্যে একজন হলেন ভ্যালেন্টাইন রোম। রোমান সম্রাট ক্লডিয়াস মনে করতেন- বিবাহিত-পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ সৈনিকের চেয়ে অবিবাহিত ও শৃঙ্খলমুক্ত যুবকরা সৈনিক হিসেবে বেশি পারদর্শী হয়। তাই তাঁর রাজ্যে যুবকদের জন্য বিয়ে নিষিদ্ধ ছিলো। সে সময় ভ্যালেন্টাইন রোম গোপনে গির্জায় প্রেমিক যুবকদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে সাহায্য করতেন।
বলা হয়ে থাকে, এই ভ্যালেন্টাইনই লিখেছিলেন প্রথম ভ্যালেন্টাইন নোট। জেলে থাকা অবস্থায় জেলারের কন্যার প্রেমে পড়েছিলেন। ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রয়ারি তাঁর মৃত্যুর অর্থাৎ তাঁকে মাটিতে পুঁতে রাখার আগে, তিনি তাঁর প্রেমিকাকে চিঠি লিখে গিয়েছিলেন এবং যেখানে স্বাক্ষর করেছিলেন- “ফ্রম ইউর ভ্যালেন্টাইন” বলে। আজ পর্যন্ত চলছে এ প্রচলন। আরো কয়েকজন ভ্যালেন্টাইন একই তারিখে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে সমাধিস্থ হয়েছিলেন।
অনেকেই মনে করেন, ভ্যালেন্টাইনের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতেই অর্থাৎ ২৭০ খ্রিস্টাব্দে ভ্যালেন্টাইনস দিবস বা ভালোবাসা দিবস প্রথম উদযাপিত হয়। রোমানরা তখন ফেব্রুয়ারি মাসে লুপারসিলিয়া, বিশেষ করে ১৫ ফেব্রুয়ারি উর্বরতা ও পরিশুদ্ধতার জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান পালন করতো। তাই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা এটি গির্জায় উদযাপন শুরু করলেও; ৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে পোপ জুলিয়াস খ্রিস্টান ও রোমান জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে, সবাই ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইনস ডে হিসেবে আখ্যা দেন এবং ফেব্রুয়ারি মাসের প্রচলিত অন্যসব অনুষ্ঠানকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সে তখন প্রচলিত ছিলো যে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পাখিরা তাদের সঙ্গী নির্বাচন করে; তাই তারাও দাবি তোলে ১৪ ফেব্রুয়ারিই হবে ভালোবাসা দিবস।
এভাবেই শুরু। কোথায়, কখন, কীভাবে, কেনো শুরু হয়েছিলো- এসব না ভেবে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে ১৪ ফেব্রুয়ারি পরিচিতি পেলো ভালোবাসার দিন হিসেবে।
আমাদের সংস্কৃতিতেও সেই আবহমানকাল ধরে ফাল্গুন মাসকে ভালোবাসার মাস বলা হয়। ফাল্গুন এলেই আমরা গাই- “ফাগুন লেগেছে বনে বনে...” মেতে উঠি বসন্ত উৎসবে। ১৯৯৩ সাল থেকে আমাদের দেশেও পালিত হচ্ছে এ ভ্যালেন্টাইনস ডে।
আজ সারাবিশ্বেই পালিত হচ্ছে এ দিনটি।
সমানতালে ভালোবাসার ব্যাপকতাও বেড়েছে। এটি এখন প্রেমিক-প্রেমিকার গোপন হৃদয় থেকে সামাজিক অবস্থানে পৌঁছে গেছে। বাবা-মা, ভাই-বোন, সন্তান, বন্ধু, আত্মীয়-পরিজন, প্রিয় ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক, এমন কি পোষা প্রাণীর প্রতিও আমরা এখন ভালোবাসা প্রকাশ করছি।
তাই ভালোবাসার প্রকাশ এখন সমাজিক স্তরে। টিভি-সংবাদপত্রে।
জয়তু সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন! জয়তু ভালোবাসা! []
--------------------------------------------------------------------------
ভালোবাসা বিশেষ : কবিতা]
ভালোবাসর রঙ কেমন?
সারবিনা আহমেদ

ভালোবাসর রঙ কেমন, বলতে পারো?
এ হৃদয়ে বারবার আঘাত করে ঝরিয়েছো অনেক রক্ত
হাসতে হাসতে খুন করেছো ভালোবাসার দেবীকে
রাজার আসনে বসে ভাঙতে পারোনি নিয়মের শৃঙ্খল
তবুও ভালোবেসে গেছে দেবী, ভালোবাসার নানা রঙে
তোমার কঠিন হৃদয়ে নিষ্ঠরতার একটুও পরিবর্তন হয়নি
সেখানেও জায়গা হয়নি দেবীর
শিউলি ফুলের মতো রাতে জন্ম হয়ে, সকালেই ঝরে গেছে অভিমানে
তবুও কি কেঁপেছে তোমার হৃদয়?
কৃষ্ণচূড়া-পলাশের রঙে সেজেছে কতোবার
কেনো বলোনি ভালোবাসি?
বেলি ফুলের শুভ্রতায় সেজেছে তোমার জন্য
সেই শুভ্রতার আলিঙ্গনে সুখ পায়নি দেবী
রঙধনু আঁকা শাড়িটা সাজিয়েছে আলতা রাঙা গায়ে
আঁচল টেনে বলোনি- ভালোবাসি
দিঘল কালো চুল বেঁধেছে স্বর্ণলতা দিয়ে
থমকে গিয়েও বলোনি- ভালোবাসি
হরিণ নয়নে এঁকেছে কাজলের আলপনা
সেখানেও কলঙ্ক এঁকেছো তুমি
কপালে ছিলো সিঁদুর রঙা টিপ
তোমার দেহ সেই রঙেও কেঁপে ওঠেনি
তাহলে, ভালোবাসার রঙ কেমন- বলতে পারো? []
--------------------------------------------------------------------------
ভালোবাসা বিশেষ : গল্প]
খেলাঘর
বাবুল হোসেইন

লাল গোলাপের জন্য কার না মন কাঁদে। কার না লোভ হয় এক তোড়া লাল গোলাপের জন্য। শিমুলতলির কোন এক বাগানে ফুটেছিলো লাল গোলাপ। টকটকে লাল, আগুন লেগে আছে যেনো ফুলের পাপড়িতে। দেখে লোভ সামলাতে পারেনি শরীফও। তাই বাগান থেকে তুলে এনেছিলো কয়েকটা লাল গোলাপ। ক্যাম্পাসের বারান্দায় বসে থাকা বালিকা মেয়েটি হাত বাড়িয়েছিলো সেই ফুলের দিকে। কেবলই কি হাত, মন কি নয় একটুও? এই প্রশ্নে শরীফ বহুদিন তাড়িত হয়েছে গোপনে গোপনে। বহু-বহুদিন সে বুঝতেই পারেনি, কেবল হাত বাড়ালেই থেমে যেতে পারতো এই গল্পের শরীর; কিন্তু মন ও মনন ঢেলে যে এগিয়ে এসেছিলো, ফুলের দিকে নজর ছিলো যার কম, ফুলের মানুষের দিকে বেশি। সে কেমন করে পুড়ে দিলো বিচ্ছেদের আগুনে ভালোবাসার সাতকাহন, সে কেনো দূরে সরে গেলো, এমন বিচ্ছেদের জন্য সে তো কখনোই রাজি ছিলো না... কখনো অপ্রাসঙ্গিকভাবে এসব কথা চালু হলে সে রেগে যেতো, এবং বলতো- এসব ফালতু প্রসঙ্গ যেনো না ওঠে এখানে। বিশ্বাসের এতো অবাধ বিচরণে শিমুল কখনো চাইতো না এ রকম ছোটোখাটো বিষয় নিয়ে কথা হোক, তার স্বপ্ন ছিলো আকাশছোঁয়া, বিশাল এবং সন্দেহাতীতভাবে অনেক বড়, যতটা বড় একজন মানুষ কল্পনা করতে পারে। সেই শিমুল, সেই শিমুল একদিন ভুলে গেলো শরীফকে। বিশ্বাসের মিনার চুরচুর করে ভেঙে দিয়ে শিমুল চলে গেলো, এই সত্যিটুকুন কোনোদিন মেনে নিতে পারেনি শরীফ। তার কেবলই মনে হতে থাকে এ সত্যি নয়, এ সত্যি নয়। এ দুঃস্বপ্নমাত্র। দিনের আলোয় এ কেবল মিথ্যে প্রতিপন্নই হবে না, এ রকম দুঃস্বপ্নের জন্য সে অনুতপ্তও হবে। তার ধারণা ছিলো দুর্যোগের মুহুর্তে মানুষ যে রকম উল্টাপাল্টা দেখতে শুরু করে, এ সে রকমই। দুর্যোগ কেটে গেলে সে পরিষ্কার দেখতে পাবে তার শিমুল তারই আছে।

শরীফ ও সুমন ছিলো ঘনিষ্ট বন্ধু। ওরা দু-জন একই কলেজে পড়তো একই সেশনে। দু-জনের বন্ধুত্ব ছিলো সেই পিচ্ছিবেলা থেকেই। পাশাপাশি বাড়ি বলে নয়, মনের দিক থেকেও দু-জন ছিলো প্রায় কাছাকাছি। ভালো ছাত্র, ভালো খেলোয়াড় এবং আরো অনেক ভালো গুণাবলি ওদের; দু-বন্ধু পরস্পরকে বিশ্বাসও করতো আকাশ সমান। দু-জন ছিলো মাণিকজোড়ের মতো, সারাক্ষণ একসাথে কলেজ, খেলা এবং বাইক নিয়ে দৌড়ানো। সবে মাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছে দু-জনে। বয়সটাই নাকি কেমন আনচান করা! বুকের মধ্যে তোলপাড় ওঠে। প্রেমে পড়ার বয়স নাকি এটাই- তাই মেয়েদের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকে দু-জন। এবং অনাকাক্সিক্ষতভাবে সুমন প্রেমে পড়লেও শরীফ পারেনি। প্রথমত লাজুক, দ্বিতীয়ত একধরনের অ্যালার্জি ছিলো বলে। বয়েজ স্কুলের ছাত্র তারা, তাই এতোটা সাচ্ছন্দ্য হতে পারেনি মেয়েদের সাথে কিংবা কম্বাইন্ড কলেজে। এ রকম দিন যাচ্ছিলো, হঠাৎই উল্কাপাতের মতো শিমুল এসে এলোমেলো করে দেয় শরীফের জীবন। শরীফও প্রেমে পড়ে যায় শিমুলের। আমূল কাঁপিয়ে শরীফের জগতে শিমুল ক্রমেই ডালপালা বিস্তার করতে থাকে। আস্তে আস্তে এ-কান সে-কান থেকে সুমনও শোনে একদিন। শোনে তার রাগ হয় মারাত্মক। শরীফ বন্ধু সুমনকে শিমুলের প্রসঙ্গে বলার জন্য একদিন ঢেকেছিলো। কিন্তু সুমন শুনতে চায়নি, তার তাড়া ছিলো, তাছাড়া অন্যের প্রেমের ব্যাপারে সে আগ্রহী ছিলো না। তাই শরীফও আর উৎসাহ দেখায়নি কিংবা দ্বিতীয়বার বলার সাহস পায়নি। সুমন এমনিতেই একটু রাগচটা ধরনের। কিন্তু সুমন এসে আজ তাকে যা বললো তা বিশ্বাস করতে পারেনি শরীফ। তার গায়ে কাঁপন উঠে যায়, কিন্তু সে নিজেকে শান্ত রাখে। এবং শান্ত সুরে বলে, ‘আমি কিন্তু তোকে বলার জন্য ঢেকেছিলাম একদিন, তুই শুনতে চাসনি।’ সুমন রেগে অগ্নিশর্মা হতে হতে বলে, ‘তুই শিমুলকে কিছুতেই পাবি না। ওকে ভুলে যা, এখনো সময় আছে, ভুলে যা।’ শরীফ বিস্ময়ে থ বনে যায়। সে অবাক হয়ে বলে কেনো? সুমন বলে, ‘ওকে আমি চিনি। ওর বাবা ওকে প্রবাসী ছেলে ছাড়া বিয়েই দেবে না। তাছাড়া আরো সমস্যা আছে।’ শরীফ বলে, ‘আর কি সমস্যা?’ সুমন বলেনি। না বলেই হনহন করে চলে যায়।

শরীফ ভাবতে থাকে কেনো এমন হলো। কেনো এতোদিনের বন্ধুত্ব আজ ভেঙে যাচ্ছে। সে কেবল ভাবতে থাকে। অবশেষে এই সিদ্ধান্তে আসে, শিমুলকে সে ভুলে যাবে। কিন্তু শিমুল এসব শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ে, এবং পাগলের মতো বলতে থাকে- ‘এই জন্য তোমাকে এতোদিন ভালোবেসেছিলাম? আমি কখনো তা পারবো না, তোমার যদি বন্ধুত্ব বাঁচানো খুবই দরকার হয়, তবে আমাকে ভালো বন্ধু মনে করতে পারো।’ এরপর আর কথা থাকে না। শরীফও ভেসে যায় শিমুলের প্রেমে। শিমুল একদিন কলেজে আসে না। সুমনও কলেজ ছেড়ে দিয়েছে প্রায়। শরীফ দিন দিন বিষণ্ন হয়। এতোদিনের বন্ধুত্ব, অথচ সুমনটা কেমন করছে ওর সঙ্গে। একবার যদি সামনাসামনি এসে সুমন স্পষ্ট করে বলতো, ‘দোস্ত, ওই মেয়েকে ভুলে যা, আমি বলছি তুই ভুলে যা।’ তাহলেও হয়তো শরীফ সত্যিই শিমুলকে ভুলে যেতে পারতো। তার কাছে বন্ধুত্বটা এতোই গুরুত্বপুর্ণ, অথচ এ রকম অগোছালো দিনে সুমনটা দূরে দূরে। শরীফের জেদ বেড়ে যায়। সে প্রেম করবেই। সে প্রেম করলেই যদি বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সুমনও তো প্রেম করছে অনেকদিন থেকে। তার জেদ বাড়তেই থাকে। এবং সুমনকে বাদ দিয়ে সে শিমুলকে নিয়ে ভাবতে থাকে। শিমুল পরদিন কলেজে আসে কালো মেঘে ঢাকা মুখ নিয়ে। শরীফের অন্তরাত্মা কেঁদে ওঠে। সে শিমুলকে জিজ্ঞেস করে, খারাপ কিছু হয়েছে কিনা কিংবা অসুখ-বিসুখ। কিছুই না বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে শিমুল। বলে, ‘আমাকে মাফ করে দিও, শরীফ। আমি আর পারলাম না।’ শরীফ পাথরের মতো স্থির বসে থাকে কলেজের মাঠে।

সুমন একসময় ভালোবাসার প্রস্তাব দিয়েছিলো শিমুলকে। শিমুল না বলে দিয়েছিলো, কারণ তার ভালোলাগেনি সুমনকে। সেটা শরীফ জানতো না। তারপর যখন ওরই বন্ধু শরীফের সাথে শিমুল প্রেম করতে লাগলো, তখন সুমনের আঘাত লাগে ব্যক্তিত্বে। এবং সেটাকে সে কাজে লাগায় শরীফের নিষ্পাপ বন্ধুত্বের বলি দিয়ে। এতোদিনের বন্ধুত্বটা এক লহমায় ভুলে গেলো কেবলমাত্র শিমুলের জন্য। অথচ শরীফ এসব জানতোই না। জানলে হয়তো সেও এগুতো না এ রকম সম্পর্কের দিকে। কারণ, সুমনের সঙ্গেও তার কম প্রেম ছিলো না; দু-জনে বন্ধুত্বের আকাশে একসাথে উড়িয়েছে লাল-নীল ঘুড়ি আর ইচ্ছে রঙের ফানুস, ফুটিয়েছে কতো আতশবাজী! ভালোবাসায়-বিশ্বাসে দু-জনই ছিলো যেনো আত্মার আত্মীয়। আর আজ, একটা মেয়ের জন্য শরীফও ফেলে যেতে পারে না তার দশ বছরের বন্ধু সুমনকে। কিন্তু তার জেদ বাড়তে থাকে সুমনের ওপর। সে সিদ্ধান্ত নেয় কেউ যদি এতো সহজে তাকে ভুলে যেতে চায়, দূরে ঠেলে দেয়, তাহলে সে কেনো পারবে না?

সে আরো সিদ্ধান্ত নেয় সুমন যদি না চায়, তাহলে সেও আর এগোবে না এই সম্পর্কের দিকে। বন্ধুত্ব হোক আর ভালোবাসা হোক, এক পক্ষের দিক থেকে টিকিয়ে রাখা যায় না। শরীফের অন্তরাত্মা খাঁ খাঁ করে ওঠে। সে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। বুকের ভেতর দুঃসহ যন্ত্রণা দুমড়ে দুমড়ে ওঠে। কান্নার বেগ বল্গাহীন তোলপাড় তোলে বুকের জমিনে। সে দেখা করতে যায় শিমুলের বাড়িতে। গিয়ে দেখে সুমনও শিমুলের বাড়িতে। তারা সবাই এক ঘরে পারিবারিক বৈঠকে বসেছে। শিমুলের বাবা-মা, বড়ভাই-ভাবী এবং শিমুলের এক মামা। শরীফ কিছুই বুঝতে পারে না। কেউ তাকে বসতে পর্যন্ত বলেনি। যেহেতু তারা পরস্পর পরস্পরকে চিনতো, প্রতিবেশী হিসেবে, এবং শরীফ আরো দু-
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×